অংশীজনের সঙ্গে পরামর্শের ভিত্তিতে গঠিত হবে গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন। আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিকভাবে গণমাধ্যম-সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করা হচ্ছে। সোমবার (৭ই অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘সংবাদমাধ্যমের সংস্কার : কেন? কীভাবে?’-শীর্ষক মুক্ত আলোচনায় তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মোঃ নাহিদ ইসলাম এসব কথা বলেন।
সাংবাদিকদের ওয়েজবোর্ডসহ বেতনের বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, সাংবাদিকদের সঙ্গে দাসসুলভ আচরণের সুযোগ নেই। সাংবাদিকদের পেশাদারিত্ব প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সাংবাদিকেরা কেন পেশাদারিত্বের সঙ্গে কাজ করতে পারেন না, সে সব বিষয় পর্যালোচনা করা হচ্ছে। দেশে গণমাধ্যম সাক্ষরতা গড়ে ওঠেনি উল্লেখ করে তিনি বলেন, গণমাধ্যমে পেশাদারিত্বের সংস্কৃতি বাংলাদেশে অনুপস্থিত। অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা করে ঐকমত্যের ভিত্তিতে এ বিষয়ে কাজ করা হবে। এ ক্ষেত্রে সাংবাদিক সংগঠনসমূহের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।
সম্প্রতি ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের প্রসঙ্গ টেনে উপদেষ্টা বলেন, এই অভ্যুত্থান গণমাধ্যমের জন্য বড়ো কেস স্টাডি। এই অভ্যুত্থানে গণমাধ্যমের কী ভূমিকা ছিল, তা নিবিড়ভাবে পর্যালোচনা করতে হবে। আন্দোলনের সময় মাঠ পর্যায়ে অনেক সাংবাদিক সংবাদ সংগ্রহ করত; কিন্তু মিডিয়া হাউজ পলিসির কারণে ওই সংবাদ প্রকাশ হতো না। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় ইলেকট্রনিক মিডিয়া আন্দোলনের পক্ষে কোনো তথ্যই প্রচার করেনি উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, ওই সময় ইলেকট্রনিক মিডিয়া কী প্রচার করেছে, তা দেশের মানুষ জানে। এই অভ্যুত্থানে সাংবাদিকদের কোনো প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিরোধও দেখা যায়নি।
মুক্ত গণমাধ্যমের জন্য সাংবাদিকদের পেশাদারিত্ব গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি অভিহিত করে তিনি বলেন, সামনের দিনগুলোতে সাংবাদিকদের পেশাদারিত্ব নিশ্চিত করার পাশাপাশি তরুণদের এই পেশায় আগ্রহী করে তুলতে হবে। তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের সংস্কারের বিষয়েও গুরুত্বারোপ করেন।
মুক্ত আলোচনায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম, প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের মহাপরিচালক ফারুক ওয়াসিফ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক ড. সাইফুল আলম চৌধুরী প্রমুখ। মিডিয়া সাপোর্ট নেটওয়ার্কের আয়োজনে অনুষ্ঠিত এই আলোচনায় মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপনা করেন সাংবাদিক জিমি আমির। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।