গভীর সমুদ্রতলে বাস্তুসংস্থানের সন্ধান পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। শ্মিডট ওশান ইনস্টিটিউটের গবেষণা জাহাজ ‘ফালকর’ থেকে গভীর প্রশান্ত মহাসাগরের তলদেশে আগ্নেয়গিরির ভূত্বকের ভেতরে অনুসন্ধান চালানোর জন্য একটি ডুবো রোবট বা দূর থেকে নিয়ন্ত্রণ করা যায় এমন একটি যন্ত্র পাঠিয়ে বাস্তুসংস্থানের খোঁজ মিলেছে। এ তথ্য বিজ্ঞান সাময়িকী সায়েন্স অ্যালার্টে জানানো হয়েছে।
শ্মিডট ওশান ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক জ্যোতিকা বিরমানি বলেন, ‘আমরা আগে থেকেই পাতালগুহায় বা ভূগর্ভস্থ গহ্বরে এবং সাগরের বালু ও কাদায় প্রাণীর বসবাসের কথা জেনেছি।
কিন্তু এবার হাইড্রোথার্মাল ভেন্ট বা সাগরতলের চিড় বা ফাটলের নিচে প্রাণীদের বসবাসের সন্ধান মিলল। এ ধরনের বাস্তুসংস্থান খুঁজে পাওয়া সত্যিই অসাধারণ আবিষ্কার। এটি লুক্কায়িত ছিল অন্য একটি বাস্তুসংস্থানের নিচে। এটা প্রমাণ করে যে আমাদের ধারণার বাইরের স্থানেও প্রাণের অস্তিত্ব থাকতে পারে।
বিজ্ঞানীরা সত্তরের দশকে সাগরের তলদেশে ফাটলগুলো আবিষ্কার করেছিলেন। এত বছর পর সাগরের তলদেশের এই উষ্ণ প্রস্রবণের নিচে উঁকি দিলেন শ্মিডট ওশান ইনস্টিটিউটের গবেষকরা। সাগরের তলদেশের ফাটলের ভেতরে তাঁরা বিশালাকার শামুক, কৃমি ও ব্যাকটেরিয়ার সন্ধান পেয়েছেন; এসব প্রাণী নিজেদের শক্তির জন্য সূর্যের আলো নয় বরং খনিজের ওপর নির্ভরশীল।
ইউনিভার্সিটি অব ভিয়েনার ইকোলজিস্ট মনিকা ব্রাইট বলেন, ‘এই আবিষ্কারের মাধ্যমে প্রাণের অস্তিত্ব সম্পর্কে আমাদের জানার পরিধি অনেক বেড়ে গেল।
মধ্য আমেরিকার পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকায় সাগরের আড়াই হাজার মিটার গভীরে সমুদ্রের তলদেশে একটি ছোট বর্গক্ষেত্রের পরিমাণ এলাকা পরিষ্কার করতে সাবাস্টিয়ান নামের একটি দূর থেকে নিয়ন্ত্রণ করা যায় এমন যান পাঠিয়ে বাস্তুসংস্থানটির সন্ধান মিলেছে। তারপর সেখানে একটি বাক্স আটকে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। কয়েক দিন পরে বাক্সটি সেখান থেকে তুলে নিয়ে এসে গবেষকরা দেখতে পান, তাতে নতুন প্রাণী আস্তানা গেড়েছে। সমুদ্রতলের নিচের বিভিন্ন ফাটল থেকে উঠে এসেছে এরা। সূত্র : সিএনএন