বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান কানাডা সফরে শিক্ষার্থীসহ অন্যান্য ভিসা ও প্রতিরক্ষা সহযোগিতার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) কানাডার বাংলাদেশ হাইকমিশন এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
কানাডা হাইকমিশন জানায়, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান সরকারি সফরের অংশ হিসেবে স্থানীয় সময় বুধবার (২৩ অক্টোবর) যুক্তরাষ্ট্র থেকে কানাডায় পৌঁছেছেন।
কানাডার রাজধানী অটোয়ায় পৌঁছালে সেনাপ্রধানকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানো হয়।
কানাডার প্রিভি কাউন্সিল অফিসের পরিচালক ও বাংলাদেশে কানাডার মনোনীত হাইকমিশনার অজিত সিং এ অভ্যর্থনার আয়োজন করেন। জেনারেল ওয়াকারের এ সফরটি বাংলাদেশ-কানাডা সম্পর্কের জন্য একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করার সুযোগ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। বৈঠকে দুদেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করা হয়। বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য ভিসা সমস্যা সমাধানে উভয় পক্ষের আন্তরিক আগ্রহ প্রকাশ পায়।
সফরে সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামান কানাডার ভাইস চিফ অব দ্য ডিফেন্স স্টাফ, লেফটেন্যান্ট জেনারেল স্টিফেন আর কেলসি ও কানাডা-বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফ্রেন্ডশিপ গ্রুপের ভাইস-চেয়ার সালমা জাহিদ এমপির সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করেন। আলোচনায় জেনারেল ওয়াকার বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য স্টুডেন্ট ভিসা সহজীকরণের গুরুত্ব তুলে ধরেন এবং চাকরিরত ও অবসরপ্রাপ্ত সামরিক কর্মকর্তাদের জন্য ভিসা প্রক্রিয়াকরণের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। তিনি যুব উন্নয়নে অন্তর্বর্তী সরকারের অগ্রাধিকারের কথা তুলে ধরেন এবং উভয় দেশের পারস্পরিক সুবিধার কথা উল্লেখ করে আরও বেশি স্টুডেন্ট ভিসা দেওয়ার মাধ্যমে কানাডার সহায়তা কামনা করেন।
সালমা জাহিদ কানাডার বিদ্যমান আবাসন সংকটের প্রেক্ষাপটে চ্যালেঞ্জগুলোর কথা স্বীকার করেন।
তিনি বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের দ্রুত ভিসা প্রক্রিয়াকরণের জন্য কানাডার সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে আবেদন করতে উৎসাহিত করেন এবং বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভর্তির সীমাবদ্ধতাগুলো মোকাবিলায় সমাধান খোঁজার জন্য প্রতিশ্রুতি দেন।
বৈঠকে কানাডিয়ান ও বাংলাদেশি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের সম্ভাবনাও আলোচনা হয়। উভয় পক্ষ কৃষি ও অবকাঠামো উন্নয়নে সহযোগিতার সুযোগ খোঁজার জন্য সম্মত হন।
জেনারেল ওয়াকার কানাডার আবাসন সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশি সহায়তার প্রস্তাব দেন এবং স্বাস্থ্যসেবা খাতে কানাডাকে সহায়তার জন্য বাংলাদেশের প্রস্তুতির কথা উল্লেখ করেন। লেফটেন্যান্ট জেনারেল কেলসির সঙ্গে পৃথক বৈঠকে জেনারেল ওয়াকার কর্মরত ও অবসরপ্রাপ্ত বাংলাদেশি সামরিক কর্মীদের জন্য ভিসা প্রক্রিয়াকরণ সহজ করার পক্ষে কথা বলেন।
এছাড়া বৈঠকে সামরিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে প্রশিক্ষণ বিনিময় বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়, যাতে উভয় দেশের সামরিক কর্মকর্তাদের পেশাগত উন্নয়ন বাড়ানো যায়।
জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের সফরটি দুদেশের মধ্যে সহযোগিতার ক্ষেত্রগুলোকে আরও সম্প্রসারিত করার এবং বিশেষ করে ছাত্র ভিসা সুবিধা ও প্রতিরক্ষা সহযোগিতার ক্ষেত্রে একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করার সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছে।
এ সময় কানাডায় বাংলাদেশের হাইকমিশনার নাহিদা সোবহান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম আসাদুল হক ও মেজর মো. শোয়েব রিফাত আউমি উপস্থিত ছিলেন।