গত ১ বছরের বেশি সময় ধরে গাজায় নিষ্ঠুর হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরাইল। কিন্তু যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে বরাবরাই উন্নাসিকতা দেখিয়েছে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সরকার। জিম্মি মুক্তির চাপের মুখে নেতানিয়াহু বারবার বলেছেন, গাজায় হামাসকে নির্মূল করে জিম্মি উদ্ধার করবে তারা।
কিন্তু সামরিক অভিযানের মাধ্যমে যে রাজনৈতিক সমস্যা সমাধান সম্ভব নয়, তা অগ্রাহ্য করে এসেছে দিনের পর দিন। এবার জিম্মি মুক্তি নিয়ে কিছুটা সুরম নরম করেছেন ইসরাইলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট। তার মতে, সব লক্ষ্য সামরিক শক্তির মাধ্যমে অর্জন করা সম্ভব নয়। তাই যন্ত্রণাদায়ক হলেও কিছু ‘সমঝোতা’ প্রয়োজন।
রোববার (২৭ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে টাইমস অব ইসরাইল।
ইয়োভ গ্যালান্ট দাবি করেন, ‘ইসরাইলের আঘাতে হামাস কার্যত একটি সামরিক কাঠামো হিসেবে নিষ্ক্রিয় হয়ে গেছে। হিজবুল্লাহও একের পর এক আঘাতের সম্মুখীন হয়ে পিছু হটেছে। তাদের প্রধান নেতৃত্ব ধ্বংস হয়েছে। ক্ষেপণাস্ত্র ও রকেটের প্রধান অংশ ধ্বংস হয়েছে এবং সীমান্ত থেকে তাদের বাহিনীকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে’।
গালান্টের মতে, ‘এ ধরনের গোষ্ঠীগুলো আর ইরানের জন্য কার্যকর হাতিয়ার নয়’। তবে তিনি উল্লেখ করেন, সব লক্ষ্য সামরিক শক্তির মাধ্যমে অর্জন করা সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, ‘জিম্মিদের ঘরে ফিরিয়ে আনতে যন্ত্রনাদায়ক কিছু সমঝোতা প্রয়োজন। জিম্মি, তাদের পরিবার, নিহত সেনাদের জন্য সেই সমঝোতা করা আমাদের দায়িত্ব’।
যদি শেষ পর্যন্ত আলোচনার টেবিলে বসতে বাধ্য হয়; তাহলে ৪৩ হাজারের কাছাকাছি ফিলিস্তিনি মানুষকে হত্যা, ১ লাখের বেশি মানুষকে আহত করে তাহলে কী লক্ষ্য অর্জিত হল ইসরাইলের, এ প্রশ্ন উঠতেই পারে।
এ দিকে মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি কয়েকজন ফিলিস্তিনি ও ইসরাইলি বন্দি বিনিময়ের মাধ্যমে গাজায় দুইদিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব করেছেন। ইসরাইল ও মিসরীয় প্রতিনিধিরা কাতারে যুদ্ধবিরতির জন্য বৈঠক করার সময় তার এই মন্তব্য সামনে এলো। অবশ্য এ নিয়ে হামাস এবং ইসরাইল কেউ মন্তব্য করেনি।
এর আগে ইরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জবাবে ইসরাইলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট বলেছিলেন, তেল আবিবের প্রতিক্রিয়া হবে বিস্ময়কর, সুনির্দিষ্ট এবং প্রাণঘাতি। তবে যে কায়দায় হামলা চালিয়েছে ইসরাইল, তাতে নাখোশ দেশটির বিরোধী শিবিরও। এমনকি ইসরাইলে ইরানের হামলা যত আলোচনার জন্ম দিয়েছে, ইসরাইলের হামলা ততো বেশি চমক দেখাতে পারেনি।