মিয়ামারের জান্তা বাহিনীর একটি বোমারু বিমান লক্ষ্য করে গুলি ছুড়েছে চীন। উত্তরাঞ্চলের শান রাজ্যের বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত শহর নামখামে স্থানীয় সময় গত রবিবার সকালে সীমান্তের খুব কাছ দিয়ে উড়ে যাওয়ার সময় বিমানটিকে লক্ষ্য করে সতর্কতামূলক গুলি ছোড়ে চীন। দ্য ইরাবতী গতকাল সোমবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
স্থানীয় এক বাসিন্দার বরাত দিয়ে ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বোমারু বিমানটি বিদ্রোহী গোষ্ঠী তা’আং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি (টিএনএলএ) নিয়ন্ত্রিত নামখাম শহরের কাছে স্থানীয় সময় রবিবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে পৌঁছে।
নামখাম শহরে টিএনএলএর ঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলা শুরুর আগে প্রায় আধাঘণ্টা অবস্থান করছিল বিমানটি। ওই সময়ের মধ্যেই চীন বিমানটি লক্ষ্য করে সতর্কতামূলক গুলি ছোড়ে।
তিনি বলেন, ‘যখন বোমারু বিমানটি নামখামে ইউটার্ন নিতে চীনের দিকে রওনা হয়েছিল, তখন চীন নিজেদের আকাশসীমায় প্রবেশ আটকাতে গুলি ছোড়ে। কিন্তু বিমানটি প্রায় ৫ মিনিট পরে নিজের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার জন্য আবার আগের স্থানে ফিরে এলে চীন ফের গুলি চালায়।
এই বিষয়টি বারবার ঘটেছে।’ শোয়ালি নদীর ওপারে নামখাম থেকে সীমান্তের ওপারে নংদাওতে মোতায়েন চীনা সেনারা সতর্কীকরণ গুলি ছুড়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। পরে সকাল ৮টার দিকে বোমারু বিমানটি টিএনএলএ ঘাঁটি এবং নামখাম থেকে ১.৬ কিলোমিটার পূর্বে একটি গ্রামে তিনটি বোমা ফেলে। এরপর বিমানটি থেকে কাচিন রাজ্যের পার্শ্ববর্তী মান ওয়েই গি পাড়ায় আরো চারটি বোমা ফেলা হয় বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
তবে এসব ঘটনায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। টিএনএলএর মুখপাত্র লুই ইয়া ওও বলেছেন, ‘আমি শুনেছি জান্তা বিমানগুলো (আশপাশের) মিউজ সীমান্তের বাণিজ্য অঞ্চলের চারপাশে টহল দিচ্ছে এবং চীন বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার অংশ হিসেবে সতর্কীকরণ গুলি চালিয়েছে।’ স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে সুর মিলিয়ে তিনিও জানান, শোয়ালি নদীর ওপারে নামখাম থেকে সীমান্তের ওপারে নংদাওতে মোতায়েন চীনা সেনারা সতর্কীকরণ গুলি ছুড়েছে।
চলতি মাসের শুরুর দিকে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত একটি ভিডিওতে অভিযোগ করা হয়, চীনা বাহিনী সোভিয়েত আমলের একটি মিগ-২৯ যুদ্ধবিমানে গুলি চালিয়েছে। জান্তা বাহিনী ৬ সেপ্টেম্বর সকালে নামখাম শহরের কেন্দ্রস্থলে হামলা চালিয়েছিল।
ওই হামলায় শিশু এবং একজন অন্তঃসত্ত্বা নারীসহ ১১ জন বেসামরিক মানুষ নিহত হয়।
সূত্র : দ্য ইরাবতী