ঢাকা
২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
বিকাল ৪:২২
logo
প্রকাশিত : অক্টোবর ২৯, ২০২৪

পুঁজিবাজার থেকে দুই দিনেই হাওয়া ১১ হাজার কোটি টাকা

অব্যাহত পতন থেকে বের হতে পারছে না পুঁজিবাজার। সপ্তাহের প্রথম দুই কার্যদিবসেই বাজার থেকে উধাও হয়ে গেছে প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকার মূলধন। এ নিয়ে গত দুই মাসে বাজার ৪২ হাজার ৫২৬ কোটি ৭২ লাখ টাকার মূলধন হারিয়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবস সোমবার এক দিনেই ডিএসই পাঁচ হাজার ২৪৩ কোটি ৯৮ লাখ টাকার মূলধন হারিয়েছে। আগের দিন বাজার মূলধন কমেছিল পাঁচ হাজার ৪৮৫ কোটি ২৯ লাখ টাকা।

টানা দর পতনে বিনিয়োগকারী ও মধ্যবর্তী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে উদ্বেগ, আতঙ্ক ও হতাশা বাড়ছে। পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ২০১০ সালের ধস ও পরবর্তী ১৪ বছরের নিম্নমুখী ধারায় পুঁজিবাজারের সব শ্রেণির বিনিয়োগকারী ও প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত।
এমন অবস্থায় ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের দুঃশাসনের অবসান ঘটলে বিনিয়োগকারীরা নতুন আশায় বুক বেঁধেছিলেন।

তাঁরা আশা করেছিলেন, অনেক রক্তের বিনিময়ে পাওয়া নতুন পরিবেশে পুঁজিবাজার তার স্বাভাবিক গতি ফিরে পাবে। কিন্তু ঘটছে তার উল্টো।

বাজার পরিস্থিতি

রবিবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) দরপতনে সূচক কমেছে ১৪৯ পয়েন্ট, যা ছিল গত চার বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।

গতকাল সোমবার পতন হয়েছে আরো প্রায় ৬৭ পয়েন্ট। এ নিয়ে ১২ আগস্ট থেকে ডিএসইর সূচক লাপাত্তা হয়ে গেল ১১৪৭ পয়েন্ট।

গতকালের পতনের পর ডিএসইর প্রধান সূচক নেমে গেছে ৪৮৯৮ পয়েন্টে, যা গত প্রায় চার বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। এর আগে ২০২০ সালের ৩০ অক্টোবর ডিএসইর প্রধান সূচক ছিল ৪৮৬৬ পয়েন্ট। অর্থাৎ গত তিন বছর ১১ মাসের মধ্যে বর্তমানে শেয়ারবাজারের সূচক সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমেছে।

বিনিয়োগকারীদের বিক্ষোভ

অব্যাহত দর পতনের প্রতিবাদে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের পদত্যাগ দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের নেতৃত্বে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা।

সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রাজধানীর মতিঝিলে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পুরাতন ভবনের সামনে সংগঠনটির নেতারাসহ সাধারণ বিনিয়োগকারীরা এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করছেন।

বিক্ষোভকালে বিনিয়োগকারীরা বলেন, ‘২০১০ সালেও আমরা এতটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি, যা গত আড়াই মাসে হয়েছি। ২০১০ সালে শেয়ারের দাম কমেছিল। কিন্তু এখন পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে শেয়ারের দাম ফেসভ্যালু ১০ টাকার নিচে নেমে এসেছে। এতে আমরা নিঃস্ব হয়ে গেছি।’

তাঁরা বলেন, ‘পরিবার-পরিজন নিয়ে আমরা ঠিকমতো জীবন যাপন করতে পারছি না। বর্তমান বিএসইসির কমিশনের প্রতি বিনিয়োগকারীদের কোনো আস্থা নেই। তাই আমরা দ্রুত বিএসইসি চেয়ারম্যানের পদত্যাগ দাবি করছি।’

বিনিয়োগকারীরা আরো বলেন, ‘গত দুই মাসের টানা দরপতনের ফলে আমাদের বিনিয়োগকৃত অর্থের ৭০ শতাংশ কমে গেছে। আমরা সবাই নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছি, আমরা এখানে ভিক্ষা করতে আসিনি। এখন পুঁজি হারিয়ে আমরা নিঃস্ব।’

টানা পতনের কারণ খুঁজতে তদন্ত কমিটি

পুঁজিবাজারে টানা দরপতনের কারণ অনুসন্ধানে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড কমিশন (বিএসইসি)। এই কমিটিকে ১০ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংস্থার মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম। তিনি বলেন, ‘বাজার পতনের নেপথ্য কারণ বের করে প্রতিবেদন দেবে চার সদস্যের কমিটি।’

রবিবার রাতে গঠিত এই কমিটির সদস্যরা হলেন বিএসইসির পরিচালক মোহাম্মদ শামছুর রহমান, উপপরিচালক মোহাম্মদ ওরাইছুল হাসান রিফাত, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সহকারী মহাব্যবস্থাপক মাহফুজুর রহমান ও সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিডিবিএল) সহকারী মহাব্যবস্থাপক কাজী মিনহাজ উদ্দিন।

সম্প্রতি টানা পতনের কারণ অনুসন্ধান, বাজার নিয়ে গুজব ছড়ানো ব্যক্তিদের শনাক্ত করা, বাজার পতনে অনুঘটক হিসেবে কী কাজ করছে তা শনাক্ত করা এবং বাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরাতে কমিশনের করণীয় সুপারিশ আকারে জানাতে হবে এই কমিটিকে।

বাজার পরিস্থিতি ও পতন ঠেকাতে নিয়ন্ত্রক সংস্থার নেওয়া পদক্ষেপ সম্পর্কে জানতে চাইলে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, ‘বর্তমানে বাজারে মূল্য আয় অনুপাত সর্বনিম্ন পর্যায়ে রয়েছে। এ অবস্থায় বাজারে প্রাতিষ্ঠানিক ও ব্যক্তিশ্রেণির বিনিয়োগ বাড়বে বলে আমরা আশা করছি।’

logo
প্রকাশকঃ অধ্যাপক ড. জোবায়ের আলম
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ তাপস রায় সরকার
মোবাইল: +৮৮০ ১৭৩৬ ৭৮৬৯১৫
কার্যালয় : বিটিটিসি বিল্ডিং (লেভেল:০৩), ২৭০/বি, তেজগাঁও (আই/এ), ঢাকা-১২০৮
মোবাইল: +880 2-8878026, +880 1736 786915, +880 1300 126 624
ইমেইল: tbtbangla@gmail.com (online), ads@thebangladeshtoday.com (adv) newsbangla@thebangladeshtoday.com (Print)
বাংলাদেশ টুডে কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বে-আইনী।
Copyright © 2024 The Bangladesh Today. All Rights Reserved.
Host by
linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram