সময়ের সাথে সাথে বিশ্বজুড়ে বাড়ছে স্বর্ণের চাহিদা। স্বর্ণের বাজার নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিল (ডব্লিউজিসি)-এর তথ্য তাই বলছে।
তুরস্কের বার্তাসংস্থা আনাদোলু এজেন্সি তাদের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, এক বিবৃতিতে ডব্লিউজিসি জানিয়েছে, ২০২৩ সালের তুলনায় ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে স্বর্ণের চাহিদা বেড়েছে ৫ শতাংশ। এর আগে কখনও এত কম সময়ে স্বর্ণের চাহিদা এই পরিমাণ বাড়েনি।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত স্বর্ণের চাহিদা ছিল ১ হাজার ৩০০ টন, যার বর্তমান বাজারমূল্য ১০ হাজার কোটি টাকারও বেশি। বিশ্বে এই প্রথমবার স্বর্ণের চাহিদা এই পর্যায়ে পৌঁছেছে।
এতে আরও বলা হয়েছে, ডলার ও বিশ্বের প্রথম সারির মুদ্রাগুলোর মানের অনিশ্চিত ওঠানামা, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কে জয়ী হবেন— সে বিষয়ক অনিশ্চতা মধ্যপ্রাচ্য ও বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে ভূরাজনৈতিক সংঘাতের বৃদ্ধির জেরে বিনিয়োগকারীরা অর্থের ওপর আস্থা হারাচ্ছেন এবং ঝুঁকছেন স্বর্ণক্রয়ের দিকে। মূলত তাদের কারণেই স্বর্ণের চাহিদার এই উল্লম্ফন ঘটেছে বলে মনে করে ডব্লিউজিসি।
আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে গোল্ড এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ড বা গোল্ড ইএফটি এক প্রকার সংস্থা রয়েছে। কোনো বিনিয়োগকারী যদি বিনিয়োগের মাধ্যম হিসেবে অর্থের পরিবর্তে স্বর্ণ ব্যবহার করতে চান, সেক্ষেত্রে ওই বিনিয়োগকারী প্রথমে যোগাযোগ করেন গোল্ড ইএফটির সঙ্গে।
চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন গোল্ড ইএফপির মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে বিনিয়োগ করা হয়েছে ৯৫ টন স্বর্ণ। এর আগে কখনও কোনো বছরের ৯ মাসে বিনিয়োগের মাধ্যম হিসেবে এত পরিমাণ স্বর্ণ বিনিয়োগ হওয়ার ঘটনা ঘটেনি। এছাড়া বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর স্বর্ণ কেনার প্রবণতাও বাড়ছে বেশ দ্রুতগতিতে।
স্বর্ণের চাহিদার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে মহামূল্যবান এই ধাতুটির দামও বেড়েছে। জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রতি আউন্স (এক আউন্স = ২৮ দশমিক ৩৪ গ্রাম) স্বর্ণ বিক্রি হয়েছে ২ হাজার ৪৭৪ ডলারে।
তবে অবাক করা বিষয় হলো, স্বর্ণের চাহিদা বাড়লেও হ্রাস পেয়েছে স্বর্ণালঙ্কার ক্রয়ের হার। গত বছরের তুলনায় চলতি বছরের ৯ মাসে বিশ্বজুড়ে স্বর্ণালঙ্কার ক্রয়ের হার ১২ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে বলে ডব্লিউজিসি জানিয়েছে।