একসময়ের ঢালিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী শাবনূর বর্তমানে সিনেমা থেকে দূরে আছেন। তিনি এখন অস্ট্রেলিয়ায় বসবাস করছেন। মাঝে মাঝেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেখা যায় তাকে।
সম্প্রতি ‘আমি ফুলের সৌন্দর্যে মুগ্ধ’ এমন একটি ক্যাপশন দিয়ে ফেসবুকে একাধিক ছবি পোস্ট করেছেন অভিনেত্রী শাবনূর। এ নিয়ে একটি গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকারে ফুল নিয়ে তার ভালো লাগার কথা বলেছেন এ অভিনেত্রী। আমরা সেই অভিনেত্রীর কথামালার চুম্বক অংশ তুলে ধরার চেষ্টা করছি।
কয় দিন ধরে ফুল নিয়ে কথা বলছেন খুব। ফুলের বাগান থেকে ছবিও দিচ্ছেন— এমন প্রশ্নের উত্তরে শাবনূর ফুল তো বরাবরই আমার পছন্দ। ফেসবুক ছিল না বলে হয়তো অনেকে জানত না। অস্ট্রেলিয়ায় আসার পর এখানে দেখলাম, ফ্লাওয়ার ফেস্টিভ্যাল হয়। ফুল সম্পর্কে আরও কত–কী জানতে পারি। এবারও গিয়েছিলাম, সিডনির ফ্লাওয়ার ফেস্টিভ্যালে। ফেরার পথে আমার সিডনির বাসার পাশের একটি পার্কে ফুলের সামনে ছবিগুলো তোলা।
আপনার পছন্দের ফুল কী? উত্তরে তিনি বলেন, সাদা যত ধরনের ফুল আছে, সবই আমার পছন্দ। এর মধ্যে যদি বলি— বেলি, রজনীগন্ধা, সাদা গোলাপ, দোলনচাঁপা, বকুল ফুল।
খোঁপায় গোঁজার জন্য কোন ফুল আপনার পছন্দ? শাবনূর বলেন, বেলি। খোঁপায় পরার জন্য অন্য কোনো ফুলের কথা ভাবতে পারতাম না। আমার সিনেমা যারা দেখেছেন, তারাও এসব খেয়াল করেছেন নিশ্চয়ই। আমার সিনেমার বেশিরভাগ গানে বেলিফুল থাকতই। বিশেষ করে বেলি ফুল ফোঁটার সময়ে তো এটা অবশ্য অবশ্যই ছিল। তিনি বলেন, আমার ভক্তরাও জানে— বেশিরভাগ গানে আমি বেলিফুলে সাজা আছি। তখন মনে মনে ভাবতাম— ভবিষ্যতেও এই বেলিফুলে সাজা আমাকে দেখতে পারব। আমার বয়স হলে এসব দেখে স্মৃতিকাতর হব।
জীবনের প্রথম ফুল কার কাছ থেকে পেয়েছিলেন সে উল্লেখ করে এ অভিনেত্রী বলেন, দেশের ঘটনা মনে নেই। ফুল নিয়ে সবচেয়ে মজার ঘটনা সিডনিতেই ঘটছে। পাঁচ বছর ধরে প্রায় দিনই একটি ছেলে বাসার সামনে গোলাপফুল দিয়ে যায়। সে আমার মারাত্মক লেভেলের ভক্ত, এখন অনেক পরিচিত আমরা। নামটা বলতে চাই না। যখনই সে আমার বাসার এদিক দিয়ে যায়, গোলাপফুল রেখে যায়, দরজার কাছে। এটা আমার খুব ভালো লাগে। প্রায় দিনই বাসার গেট খুলে দেখি, বাইরে একটা গোলাপফুল। তখন বুঝি, সেই মানুষটা দিয়েছে। গোলাপটা এনে একটা সময় পর পাপড়ি ছিঁড়ে পানিতে রাখি। এরপর গোলাপের সেই পাপড়ি আবার শুকিয়ে একটা বোতলে ভরে রাখি। এত বছরে আমাকে যত গোলাপ দিয়েছে, সব পাপড়ি আমি বোতলে ভরে রেখে দিয়েছি।
গোলাপ দেওয়ার সময় সেই মানুষটার সঙ্গে দেখা হয় না—এমন প্রশ্নের উত্তরে শাবনূর বলেন, না, ফুল দিয়ে চলে যায়।
মানে কী, আপনাকে একজন এভাবে দিনের পর দিন ফুল দিয়ে যাচ্ছে, অথচ… উত্তরে অভিনেত্রী বলেন, না। মানে, এই যে …। অনেক আপনজন আছেন, পারলে তাদের ফুলের তোড়া উপহার দিতাম। তবে দেশের বাইরে আমার সবচেয়ে পছন্দ টম ক্রুজ। বুড়ো হয়ে গেলেও তার সঙ্গে একবার দেখা করতে চাই। তরুণী থাকতেই মধুমিতায় টম ক্রুজের মিশন ইম্পসিবল দেখেছিলাম। এই ছবি দেখেই টম ক্রুজের প্রেমে পড়ে যাই। ছবি দেখার পর লা পেরুজ জায়গাটা আমাকে মুগ্ধ করে। ভেবেছি— এত সুন্দর অস্ট্রেলিয়া! ইশ্, কোনো দিন যদি যেতে পারতাম! তারপর সিনেমায় অভিনয়ের অনেক দিন পর দেখি টম ক্রুজ যেখানে শুটিং করেছেন, লা পেরুজ, সেই জায়গায়ও গেছি। সামনাসামনি জায়গাটা দেখেও মুগ্ধ হয়েছি। সত্যিই বলে বোঝাতে পারব না— প্রথমবার কতটা ভালো লেগেছিল। আর এখন তো লা পেরুজ ডালভাত হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, আমার ছেলে আইজানকে বলেছি— আমার অনেক শখ টম ক্রুজের সঙ্গে দেখা করার। টম ক্রুজ যদি বুড়োও হয়ে যায়, তারপরও একবার দেখা করব। আমার ছেলেও বলছে— সে বড় হলে আমাকে আমেরিকা নিয়ে যাবে। দেখা করিয়ে দেবে। আমিও অধীর আগ্রহে আছি টম ক্রুজের সঙ্গে দেখা করার। সামনাসামনি টম ক্রুজের দেখা পেলে একগুচ্ছ গোলাপ দেব।
এ তালিকায় অন্য তারকাও আছে? উত্তরে শাবনূর : আছে তো অবশ্যই। টম ক্রুজ ছাড়াও ব্র্যাড পিট আমার ভীষণ পছন্দ। লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিও তো আমার ক্রাশ। টাইটানিক দেখার পর থেকেই সে আমার ক্রাশ। মনে মনে লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিওর নায়িকা হতে না চাইলেও ভালো লাগত আরকি। চকলেট বয় টাইপ হিরোরা বরাবরই আমার পছন্দ। আমি কিন্তু তাই সবসময় চকলেট বয়দের সঙ্গে কাজ করছি। খুঁজে খুঁজে চকলেট বয় হিরোদের সঙ্গে কাজ করছি। আমার নায়কদের তালিকা দেখলেও তা বোঝা যাবে। এই যেমন আমার বেশিরভাগ ছবির নায়ক সালমান শাহ, ফেরদৌস, রিয়াজ, শাকিব—সবাই চকলেট বয়। আমার সব হিরো চকলেট বয় টাইপের।