ঢাকা
১৪ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
রাত ১১:১৮
logo
প্রকাশিত : নভেম্বর ১৩, ২০২৪

এনআইডি সংশোধনে উন্মুক্ত, কারিগরি শিক্ষা সনদ আমলে নেয় না ইসি

জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনে প্রধান দলিল হিসেবে ধরা হয় মাধ্যমিক পাশের শিক্ষা সনদকে। এনআইডি সংশোধনে একজন আবেদনকারীর যে সকল কাগজপত্র জমা দিতে হয়, তার মধ্য শিক্ষা সনদ অন্যতম।

তবে এক্ষেত্রে বৈষম্যের শিকার হচ্ছে উন্মুক্ত, কারিগরি ও মাদ্রাসা বোর্ডের শিক্ষা সনদ। সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের একটি সনদকে যতটা গুরুত্ব দেওয়া হয় এনআইডি সংশোধনের সময়ে, তার ব্যতিক্রম চিত্র দেখা মেলে উন্মুক্ত, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের ক্ষেত্রে।

এসব বোর্ডের শিক্ষা সনদের গুরুত্ব অনেকটাই নির্ভর করে কর্মকর্তাদের ইচ্ছের উপর। এমনকি মাঝেমধ্যে জেনারেল শিক্ষা বোর্ডের সনদকে ভোটার নিবন্ধন পরবর্তী সনদ উল্লেখ করেও বাতিল করা হয় জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সংশোধনের আবেদন।

উন্মুক্ত, কারিগরি বা মাদ্রাসা বোর্ডের মাধ্যমিক পাশের শিক্ষা সনদ আমলে না নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইসির এনআইডি অনুবিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, বর্তমান জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সংশোধনের যে স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর (এসওপি) রয়েছে সেখানে কোথাও লেখা নাই যে উন্মুক্ত, কারিগরি বা মাদ্রাসা বোর্ডের মাধ্যমিক পাশের শিক্ষা সনদ দিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন করা যাবে না। নতুন এসওপিতে রয়েছে, মাধ্যমিক বা সমমানের শিক্ষা সনদ হলে তা দিয়ে সংশোধন করে দিতে হবে। তবে পূর্বের যে স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর সেখানে বলা ছিল, উন্মুক্তের শিক্ষা সনদ আমলে না নেওয়ার জন্য।

এনআইডি অনুযায়ী শিক্ষা সনদ সংশোধন করে দেবে এমন চুক্তি উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে ইসির হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ২০১৮ সালে তৎকালীন সচিবের সঙ্গে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে একটি বৈঠক হয়েছিল। সেখানে নির্বাচন কমিশনের পক্ষে থেকে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল যে- তারা যেন এনআইডি’র তথ্য অনুযায়ী ভর্তির ব্যবস্থা করে। এছাড়া এনআইডি দিয়ে যেন শিক্ষা সনদ সংশোধনের ব্যবস্থা করে। তবে এ বিষয়ে কোনো রকম চুক্তি আমাদের (ইসি) সঙ্গে তাদের (উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়) হয়নি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইসির অন্য এক কর্মকর্তা বলেন, উন্মুক্ত, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা সনদ আমলে না নেওয়ার কোনো কারণ নেই। তবে ভোটার নিবন্ধনের সময় যদি ডাটাবেজে শিক্ষা সনদ যুক্ত করা থাকে তাহলে ওই শিক্ষা সনদ ছাড়া অন্য কোনো শিক্ষা সনদ আমলে নেওয়া যায় না।

এই কর্মকর্তা আরও বলেন, সকল শিক্ষা সনদ লিগ্যাল ডকুমেন্টস, এখানে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার উপর অনেক কিছু নির্ভর করে। কারণ এনআইডি সংশোধনের কার্যক্রম একটি আধা-বিচারিক কার্যক্রম। যদি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা উন্মুক্ত, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা সনদ আমলে না নিয়ে থাকে, তার মানে এই নয় যে সেই কর্মকর্তা ভুল করেছে। তার যুক্তিতে তিনি সঠিক থাকবেন সব সময়। এক্ষেত্রে ভোটার ওই কর্মকর্তার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে আবেদন করতে হবে তাহলে ওই বিষয়টি সংশোধন হয়ে যাবে।

শিক্ষা সনদ আমলে না নেওয়ার বিষয় ইসি সচিব শফিউল আজিম বলেন, আমরা বোর্ডের যে শিক্ষা সনদগুলো অনলাইনে যাচাই করতে পারি সেগুলো আমলে নিয়ে থাকি। যেগুলো যাচাই করা যায় না, সেগুলো আমলে নেওয়ার কোনো সুযোগ নাই। যেগুলো অনলাইন যাচাই করা যাবে না বা নকল বলে মনে হয় সেগুলো আমলে নেওয়া হয় না।

ইসির একাধিক মাঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, উন্মুক্ত, কারিগরি ও মাদ্রাসা বোর্ডের শিক্ষা সনদ দিয়ে যারা এনআইডি সংশোধন করতে আসেন তাদের বেশির ভাগই হয় দুইবার পাশ করা ব্যক্তি। ভোটার হওয়ার সময় একটি শিক্ষা সনদ দিয়ে ভোটার হয় অথবা মাধ্যমিক পাশ দেখিয়ে ১০-১২ বছর পর এসে ৮ বছর কমিয়ে আবার উন্মুক্ত, কারিগরি বা মাদরাসার শিক্ষা সনদ দিয়ে সংশোধনের জন্য আবেদন করে থাকে। এসব আবেদনের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা নিজের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে যৌক্তিক মনে হলে এনআইডি সংশোধনের আবেদনগুলো অনুমোদন দিয়ে থাকেন আর যৌক্তিক মনে না হলে অনুমোদন করেন না।

নুর নাহার যুথী নামের এক ভোটারে এনআইডি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, তিনি নিজ নাম মোছা. নুরনাহার জুথি থেকে নূর নাহার যুথি, বয়স সংশোধন চেয়েছেন ১৭-০৩-১৯৮৮ থেকে ২৩-০২-১৯৯৩ প্রায় ৫ বছর। পিতার নাম চেয়েছিলেন শেখ আব্দুল জব্বার থেকে মন রঞ্জন রায় ও মাতার নাম মতিয়া হায়দার থেকে সরু রায় এবং শিক্ষাগত যোগ্যতা ৮ম শ্রেণি থেকে মাধ্যমিক পাশ।

যুথীর নিজ নাম, বয়স, স্বামীর নাম ও শিক্ষাগত যোগ্যতা সংশোধনযোগ্য নয় বলে আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা পিতা ও মাতার নাম সংশোধনের অনুমোদন দিয়ে বলেন, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা সনদের ভিত্তিতে এনআইডি সংশোধনের সুযোগ নাই। নির্ধারিত ডি ফরমে তালাকনামা না থাকায় স্বামীর নাম সংশোধনও যৌক্তিক নয়। এছাড়া তদন্ত প্রতিবেদন পর্যালোচনায় আবেদনকারীর পূর্বের স্বামীর এনআইডির ডাটাবেজ যাচাই করে ও দাখিলকৃত দলিলাদি পর্যালোচনায় নিজ নাম, রক্তের গ্রুপ, জন্মতারিখ, স্বামীর নাম ও শিক্ষাগত যোগ্যতা ব্যতীত শুধুমাত্র পিতা-মাতার নামের সংশোধন অনুমোদন করা হল।

নাছরিন নামের অপর একজনের এনআইডি সংশোধনের আবেদনে দেখা যায়, তিনি তার নাম মোছা. নাছরিন আক্তার হিরা থেকে মোছা. নাছরিন করিম এবং বয়স ০৯-০৭-১৯৮৭ থেকে ০১-০৯-১৯৯৬ প্রায় ৯ বছর সংশোধন চেয়েছেন। এর স্বপক্ষে তিনি ২০১২ সালে দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ড থেকে পাশকৃত মাধ্যমিকের শিক্ষা সনদ, অনলাইন জন্ম সনদ দাখিল করেন।

নাছরিনের এনআইডি সংশোধনের জন্য তদন্ত চাওয়া হলে তদন্ত কর্মকর্তা সংশোধনের সুপারিশ করে তদন্ত কর্মকর্তা প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন, আবেদনকারীর প্রতিবেশীর প্রদত্ত মৌখিক তথ্য, গজারিয়া ইউপিতে জন্ম নিবন্ধন রেজিস্ট্রার, এস. এস.সি সনদ, পিতা/মাতার আই.ডি ও ওয়ারিশান সনদ, ইত্যাদি পর্যালোচনায় দেখা যায়, আবেদনকারীর নাম, জন্ম তারিখ এর আবেদনের যথার্থতা পাওয়া যায়। তিনি জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দ্বারা কোর্ট এফিড এফিডেভিট করেছেন। এমতাবস্থায় আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয় পত্রের নাম: মোছা. নাছরিন আক্তার হিরা, জন্ম তারিখ ০৯-০৭-১৯৮৭ এর পরিবর্তে নামঃ মোছা. নাছরিন করিম জন্ম তারিখ ০১-০৯-১৯৯৬ করার জন্য সুপারিশ করা হলো।

এদিকে তদন্ত কর্মকর্তার সুপারিশ ও জেনারেল শিক্ষা সনদ আমলে না নিয়ে আবেদনটি বাতিল করে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা উল্লেখ করেন, বাহ্যিক অবয়ব পর্যবেক্ষণে বয়সের তারতম্য পরিলক্ষিত হয়। দাখিলকৃত দলিলাদি অনুযায়ী চাহিত জন্ম তারিখ সংশোধন করা হলে ভোটার নিবন্ধনকালীন সময়ে অপ্রাপ্ত বয়স্ক ভোটার হবেন। সার্বিক পর্যালোচনায় চাহিত সংশোধনের আবেদনটি বাতিল করা হলো।

আরও কয়েকটি জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সংশোধনের আবেদন যাচাই করে দেখা যায়, নিবন্ধন পরবর্তী যেকোনো শিক্ষা সনদ কিংবা জন্ম সনদ আমলে নেওয়া হয় না। যেখানে বাতিলের কারণ হিসাবে কর্মকর্তারা উল্লেখ করেন, ভোটার নিবন্ধনের পরবর্তী সময়ের দলিলাদি দাখিল করে চাহিত সংশোধন যৌক্তিক নয়। এছাড়া বয়স সংশোধন হলে অপ্রাপ্ত বয়সে ভোটার হয়েছে বলে বিবেচিত হয়।

আবার দেখা যায় কর্মকর্তার ইচ্ছা হলে ভোটার নিবন্ধনের পরের দলিলাদি ও অপ্রাপ্ত বয়স হলেও তদন্ত ছাড়া সেসব দলিলাদি দিয়েই সংশোধনের অনুমোদন দেয়। এর পক্ষে যুক্তি হিসেবে কর্মকর্তারা উল্লেখ করেন, অনলাইনের যাচাইকৃত সনদ অনুযায়ী সংশোধন করা হলো।

জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনের জন্য জারীকৃত বিদ্যমান স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওরতে(এসওপি) দেখা যায়, জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনের যে-সকল দলিলাদি প্রয়োজন সেখানে কোথাও উল্লেখ নেই যে উন্মুক্ত, কারিগরি বা মাদ্রাসা বোর্ডের শিক্ষা সনদ আমলে নেওয়া যাবে না। আবার ভোটার নিবন্ধনের পরের শিক্ষা সনদ, জন্ম সনদ বা দলিলাদি দিয়ে সংশোধন হবে না এমন কোনো সুনির্দিষ্ট ব্যাখ্যা দেওয়া নেই। এছাড়া এনআইডি’র বয়স সংশোধন হলে নিবন্ধনের সময় অপ্রাপ্ত বয়স হয় এক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন করা যাবে কি, যাবে না তারও কোনো সুস্পষ্ট বর্ণনা দেওয়া নেই।

জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন আইন ২০২৩ পর্যালোচনা করে দেখা যায়, সেখানেও সংশোধনের জন্য অপ্রাপ্ত বয়স বা নিবন্ধন পরবর্তী কোনো শিক্ষা সনদের কথা উল্লেখ নেই। তবে তথ্য গোপন করে জাতীয় পরিচয়পত্র নিলে শাস্তির বিধান রয়েছে।

জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন আইনের ৯ ধারা অনুযায়ী, এনআইডির তথ্য-উপাত্তের সংশোধনের প্রয়োজন হলে নাগরিক কর্তৃক প্রদত্ত আবেদনের ভিত্তিতে, নির্ধারিত পদ্ধতিতে ও ফি প্রদান সাপেক্ষে, নিবন্ধক কর্তৃক সেটা সংশোধন করা যাবে অথবা উক্ত তথ্য-উপাত্ত জাতীয় পরিচয়পত্রে সঠিকভাবে লিপিবদ্ধ না হলে উক্ত নাগরিক কর্তৃক প্রদত্ত আবেদনের ভিত্তিতে নিবন্ধক কর্তৃক, কোনো প্রকার ফি প্রদান ব্যতিরেকে তা সংশোধন করা যাবে।

এদিকে এ আইনের ১৮ ধারা অনুযায়ী, কোনো নাগরিক জাতীয় পরিচয়পত্র প্রাপ্তির লক্ষ্যে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে বা জ্ঞাতসারে কোনো মিথ্যা বা বিবৃত তথ্য প্রদান বা তথ্য গোপন করলে তিনি এই আইনের অধীন অপরাধ করেছেন বলে গণ্য হবে। উক্তরূপ অপরাধের জন্য তিনি অনূর্ধ্ব ১ (এক) বছর কারাদণ্ড বা অনধিক ২০ (বিশ) হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

ইসি কর্মকর্তারা জানান, ভোটার তালিকা আইন অনুযায়ী ১৮ বছরের নিচে কেউ ভোটার তালিকায় যুক্ত হতে পারবে না। তবে বর্তমানে নাগরিকদের জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়ার লক্ষ্যে আমরা আগাম তথ্য নিচ্ছি ফলে ভোটার না হলেও তারা জাতীয় পরিচয়পত্র পাচ্ছে। এতে যাদের ১৮ বছর বা তার বেশি তারা জাতীয় পরিচয়পত্র পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোটার তালিকায় যুক্ত হচ্ছে। আর যাদের ১৮ বছর হয়নি তারা শুধু জাতীয় পরিচয়পত্র পাবে এবং এনআইডি’র তথ্য অনুযায়ী যে সময় ১৮ বছর পূর্ণ হবে ঠিক ওই সময়ে সফটওয়্যারের মাধ্যমে স্বয়ংকৃতভাবে ভোটার তালিকা যুক্ত হবে। এজন্য আমরা ব্যাপক প্রচার করছি যে, জাতীয় পরিচয়পত্র পেলেই কিন্তু তিনি ভোটার নন।

এনআইডিতে বয়স সংশোধনের ক্ষেত্রে নিবন্ধন পরবর্তী শিক্ষা সনদ হলেই কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের মাধ্যমিক পাশের শিক্ষা সনদ আমলে নেওয়া হচ্ছে না বিষয়টি আপনি কীভাবে দেখছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (অডিট ও আইন) মো. আজিজ তাহের খান বলেন, এটা কেন গ্রহণ করবে না? এটা তো আমাদের কারিগরি শিক্ষা বোর্ড থেকে নেওয়া। গ্রহণ না করার কোনো কারণ নাই। এ বিষয়ে নিয়ে আমি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করব।জানান।

এনআইডি অনুযায়ী উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ব্যবস্থা বা এনআইডি দিয়ে শিক্ষা সনদ সংশোধনের করে দেওয়া- এমন কোনো চুক্তি উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ও নির্বাচন কমিশনের মধ্যে হয়েছে কি না জানতে চাইলে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. মো. শফিকুল আলম বলেন, চুক্তি হয়েছে কি না সেটি কন্ট্রোলার বলতে পারবেন। তবে আমি একদিন ওনাদের (ইসি)মিটিংয়ে গিয়েছিলাম। সেখানে তারা এনআইডি অনুযায়ী ভর্তির ব্যবস্থা করা ও শিক্ষা সনদ সংশোধন করে দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছিলেন। আমাদের যা কিছু হবে এনআইডি অনুযায়ী হবে।

উন্মুক্তের শিক্ষা সনদ দিয়ে এনআইডি সংশোধন করা হবে না, এমন কোনো নির্দেশনা ইসি দিয়েছে কি? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এরকম কোনো কিছু আমার জানা নাই।

উন্মুক্তের মাধ্যমিক পাশের শিক্ষা সনদ এনআইডি’র তথ্য সংশোধনের ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন আমলে নেয় না এ বিষয়টি আপনি কীভাবে দেখছেন? জানতে চাইলে তিনি বলেন, উন্মুক্তের শিক্ষা সনদ এখন তো আমলে নিয়ে থাকে। আগে ওনারা গ্রহণ করতো না। কিন্তু এখন তো সমস্যা হওয়ার কথা না। কারণ এটা একটা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়। সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের শিক্ষা সনদে যদি হয় তাহলে আমাদেরটা দিয়ে কেন হবে না? এটার তো যুক্তি নাই। এ বিষয়ে আমি উপাচার্যের সঙ্গে আলোচনা করব।

কারিগরি, মাদ্রাসা, উন্মুক্ত এমনকি সাধারণ শিক্ষা সনদকে ভোটার পরবর্তী সনদ বিবেচনা করে তা আমলে না নিয়ে এনআইডি সংশোধনের আবেদন বাতিল করা হচ্ছে। এ ধরনের শিক্ষা সনদগুলো আমলে না নেওয়ার বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট ড. মো. শাহজাহান বলেন, এটার কোনো কারণ আমি দেখি না। যেকোনো শিক্ষা সনদ আমলে নিতে বাধ্য তারা। কারণ এগুলো তো সরকার স্বীকৃত প্রতিষ্ঠান। উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ও কিন্তু সরকার স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয়। তাহলে হবে না কেন?

শিক্ষা সনদ দিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সংশোধনে কর্মকর্তাদের ভিন্ন ভিন্ন সিদ্ধান্ত নেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সচিব বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত হলে এবং কমিশন বৈঠকে বিষয়টি তুলে ধরলে এটার সমাধান আসবে। তখন আর কেউ ইচ্ছেমতো সিদ্ধান্ত নিতে পারবে না।

সবশেষ ড. মো. শাহজাহান বলেন, নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা নিজ নিজ জায়গা থেকে নিজেদের মতো ভিন্ন ভিন্ন সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকলে জনগণের ভোগান্তি বাড়বে। এক্ষেত্রে কমিশন থেকে একটি নির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত নেওয়া দরকার। যেখানে স্পষ্ট উল্লেখ থাকবে, মাদ্রাসা বোর্ড, উন্মুক্ত, কারিগরি বা অন্যান্য যেকোনো প্রতিষ্ঠান যেগুলো বাংলাদেশের সরকারের স্বীকৃত সেগুলো দিয়ে আবেদন করলে অবশ্যই এনআইডি সংশোধন করে দিতে হবে।

সর্বশেষ
logo
প্রকাশকঃ অধ্যাপক ড. জোবায়ের আলম
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ তাপস রায় সরকার
মোবাইল: +৮৮০ ১৭৩৬ ৭৮৬৯১৫
কার্যালয় : বিটিটিসি বিল্ডিং (লেভেল:০৩), ২৭০/বি, তেজগাঁও (আই/এ), ঢাকা-১২০৮
মোবাইল: +880 2-8878026, +880 1736 786915, +880 1300 126 624
ইমেইল: tbtbangla@gmail.com (online), ads@thebangladeshtoday.com (adv) newsbangla@thebangladeshtoday.com (Print)
বাংলাদেশ টুডে কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বে-আইনী।
Copyright © 2024 The Bangladesh Today. All Rights Reserved.
Host by
linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram