আগামী ২০ জানুয়ারি দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে অভিষেক হতে যাচ্ছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের। সেই অভিষেক অনুষ্ঠানের আগেই হামাসের কাছে জিম্মি ইসরায়েলিদের মুক্তি চান তিনি। হামাস যদি তাদের মুক্তি না দেয়, তবে ‘ভয়াবহ পরিণতি’ ভোগ করতে হবে বলে জানিয়েছেন নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
সোমবার (২ ডিসেম্বর) নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে পোস্ট করা এক বার্তায় এ হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ট্রাম্প। ওই বার্তায় তিনি লিখেছেন, মধ্যপ্রাচ্যের চলমান যুদ্ধে অত্যন্ত নিষ্ঠুর ও অমানবিকভাবে এবং পুরো বিশ্বের ইচ্ছের বিরুদ্ধে যাদেরকে জিম্মি রাখা হয়েছে, তাদের মুক্তির জন্য সবাই সরব; কিন্তু সবাই শুধু কথাই বলছে, কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না।
ট্রাম্প তার সতর্কবার্তায় আরও লিখেন, ২০২৫ সালের ২০ জানুয়ারি আমার অভিষেক অনুষ্ঠান। যদি তার আগে জিম্মিদের মুক্তি দেওয়া না হয়, তাহলে মধ্যপ্রাচ্যে ভয়াবহ পরিণতি ঘটবে। যুক্তরাষ্ট্র এমন আঘাত হানবে, যা এর আগে তার দীর্ঘ ইতিহাসে কখনও ঘটেনি। যারা মানবতাবিরোধী অপরাধ ও সহিংসতার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট, তাদের সবাইকে নরকে পাঠানো হবে।
এর আগে গত ২৯ নভেম্বর মার্কিন সিনেটের সদস্য এবং ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত রিপাবলিকান পার্টির রাজনীতিবিদ লিন্ডসে গ্রাহাম এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, নিজের অভিষেক অনুষ্ঠানের আগেই গাজায় যুদ্ধবিরতি চান ট্রাম্প।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম এক্সিওসকে দেওয়া সেই সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, গাজায় আটক ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি এবং সেখানে যুদ্ধবিরতির জন্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ডোনাল্ড ট্রাম্প। এমনকি তিনি চাইছেন, প্রেসিডেন্ট হিসেবে অভিষেক অনুষ্ঠানের আগেই যেন এ ব্যাপারে সুরাহা হয়।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ভূখণ্ডে ঢুকে অতর্কিত হামলা চালায় গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধারা। এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে ১ হাজার ২০০ জনকে হত্যার পাশাপাশি ২৪২ জনকে জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে যায় তারা। এর প্রতিক্রিয়াস্বরূপ ওইদিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী, যা এখনও চলছে। ভয়াবহ এ অভিযানের শুরু থেকে এ পর্যন্ত গাজায় নিহত হয়েছেন প্রায় সাড়ে ৪৪ হাজার ফিলিস্তিনি, আহত হয়েছেন আরও এক লক্ষাধিক।
এই জিম্মিদের মধ্যে ১০৭ জনকে গত বছর নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে ঘোষিত এক অস্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে মুক্তি দিয়েছিল হামাস। তারপর গত এক বছরে কয়েকজন জিম্মিকে উদ্ধার করতে পেরেছে ইসরায়েলি বাহিনী, কয়েকজন নিহতও হয়েছেন। বর্তমানে হামাসের কাছে ১০১ জন ইসরায়েলি বন্দি রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।