কোটা সংস্কারের দাবিতে আজ আবারও ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি পালন করবেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীরা। পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) বিকাল সাড়ে ৩টা থেকে দেশব্যাপী অবরোধ কর্মসূচি শুরু হবে। দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানের পাশাপাশি হাইওয়ে এবং রেলপথও এই ব্লকেডের আওতায় থাকবে। ফলে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বড় শহরগুলো যানজটের কবলে পড়তে পারে।
বুধবার (১০ জুলাই) সন্ধ্যায় শাহবাগে এ ঘোষণা দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক ঢাবি শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ।
কর্মসূচি অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৩টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট্রাল লাইব্রেরির সামনে জড়ো হবেন শিক্ষার্থীরা। পরে মিছিল নিয়ে বিভিন্ন এলাকা অবরোধ করবেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।
রাজধানী ঢাকায় যেসব এলাকায় ব্লকেড হতে পারে
১. শাহবাগ
২. কাওরানবাজার
৩. ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়
৪. ফার্মগেট
৫. চানখারপুল মোড়
৬. চানখারপুল ফ্লাইওভার এ উঠার মোড়
৭. বঙ্গবাজার
৮. শিক্ষা চত্বর
৯. মৎস্য ভবন
১০. জিপিও
১১. গুলিস্তান
১২. সায়েন্সল্যাব
১৩. নীলক্ষেত
১৪. রামপুরা ব্রিজ
১৫. সচিবালয়
১৬. মহাখালী
১৭. বাংলামোটর
১৮. পল্টন মোড়
১৯. ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক (জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়)
ঢাকার বাইরে যেসব এলাকায় ব্লকেড হতে পারে
১. রাজশাহী (জিরো পয়েন্ট, ধান গবেষণা ইন্সটিটিউট, রেলগেট, স্টেশনবাজার)
২. সিলেট-সুনামগঞ্জ রোড (সাস্ট)
৩. ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক (কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়)
৪. বটতলা চত্বর (ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়)
৫. ময়মনসিংহ (বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়)
৬. রংপুর মডার্ন মোড় (বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়)
৭. দেওয়ান হাট (চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও অধিভুক্ত কলেজসমূহ)
৮. খুলনা, নতুন রাস্তা, দৌলতপুর (জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা আঞ্চলিক কেন্দ্র)
৯. গাজীপুর (আওয়ালে বদরে আলম সরকারি কলেজ, গাজীপুর )
১০. নোয়াখালী প্রেসক্লাব (নোয়াখালী জেলার শিক্ষার্থীবৃন্দ
১১. ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের সামনে
১২. ঢাকা-পাবনা মহাসড়ক (পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়)
একই দাবিতে বুধবার সকাল-সন্ধ্যা দেশব্যাপী অবরোধ কর্মসূচি পালন করে শিক্ষার্থীরা।
গত ৭ জুলাই থেকে ‘বাংলা ব্লকেড’ নামে এই অবরোধ কর্মসূচি শুরু হয়। প্রথম দুদিন অর্ধদিবস অবরোধ চলার পর মঙ্গলবার বিরতি দেওয়া হয়।
২০১৮ সালে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনের পর সরকার প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরিতে পুরো কোটাব্যবস্থা বাতিল করে। ওই বছরের ৪ অক্টোবর কোটা বাতিলবিষয়ক পরিপত্র জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। পরে ২০২১ সালে সেই পরিপত্রের মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের অংশটিকে চ্যালেঞ্জ করে কয়েকজন বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান রিট করেন।
গত ৫ জুন রায় ঘোষণায় মুক্তিযোদ্ধা কোটায় নবম থেকে ১৩তম গ্রেডে নিয়োগ দেওয়ার বাধা দূর হয়। ওই রায় স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আবেদন করে।
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে বিচারাধীন মামলাটিতে পক্ষভুক্ত হতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সভাপতি আল সাদী ভূঁইয়া এবং উর্দু বিভাগের শিক্ষার্থী আহনাফ সাঈদ খান আবেদন করেন।
এরপর বুধবার আপিল বিভাগ সরকারি চাকরিতে কোটা বহালে হাইকোর্টের রায়ের ওপর চার সপ্তাহের স্থিতাবস্থা দিয়েছেন।