শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পর আন্দোলনকারী লাখো ছাত্র-জনতার আক্রোশের শিকার হয়েছে রাজধানীর বেশ কয়েকটি থানা। ঘণ্টার পর ঘণ্টা অবরোধের পর হামলা ভাঙচুর এবং আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে থানা ভবন। জনরোশে পড়ার করুণ মুহুর্তেও আটকে পড়া পুলিশ সদস্যদের উদ্ধারে এগিয়ে আসেনি পুলিশ সদর দফতর বা অন্য কোনো আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তার আগে আটকে পড়া পুলিশের এলোপাতারি গুলিতে আহত হয়েছেন শতাধিক মানুষ।
সোমবার দুপুরে সাধারণ ছাত্রজনতাকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়ে সেনা সদস্যরা কনভয় নিয়ে যাত্রাবাড়ী ছেড়ে দেয়ার পরই বিক্ষুব্ধ জনতা চারদিক থেকে এগিয়ে আসে চৌরাস্তার হানিফ ফ্লাইওভারের নিচে। তখন থেকেই মোড়ের যাত্রাবাড়ী থানা ভবন ঘিরে ফেলার চেষ্টা শুরু হয় বিক্ষুব্ধ ছাত্র জনতার। পাল্টা প্রতিরোধের চেষ্টা করে পুলিশ। কিছুক্ষণ পর পর মুহুর্মুহ গুলি, টিয়ার গ্যাস আর সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে ছত্রভঙ্গ করে দেয়া হয় জনতাকে। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন অর্ধশতাধিক মানুষ।
বেলা ৩ টার দিকে পুলিশের একটি কনভয় এসে ছত্রভঙ্গ করে দেয়ার চেষ্টা করে জনতাকে। তারপরও থানা ভবন ও ব্যারাকে আটকা পড়েন অনেক সদস্য। টানা দুই ঘণ্টা এলোপাতারি গুলি ছুড়েও ব্যর্থ হন তারা। এক সময় থানা কম্পপাউন্ডের দেয়াল ও গেট ভেঙ্গে ঢুকে পড়েন বিক্ষুব্ধরা। ভাঙচুরের পর দেয়া হয় আগুন। ভেতরে টিকতে না পেরে বেরিয়ে আসা পুলিশ সদস্যরা আক্রোশে পড়েন বিক্ষুব্ধ জনতার। লুট করা অস্ত্র নিয়ে উল্লাস করতে দেখা যায় অনেককে।
বিকেল ৫টার দিকে বাড্ডা, খিলক্ষেত, ভাটারা থানাও চতুর্দিক থেকে আন্দোলনকারীরা ঘিরে রাখে। থানায় আটকে পড়েন পুলিশ সদস্যরা। আন্দোলনকারীরাও বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিয়ে ইটপাটকেল ছুড়ছেন। পরে আগুন দেয়া হয় থানায়। লুট করে নেয়া হয় অস্ত্রও।
প্রায় একইভাবে পল্টন থানা ঘেরাও করে হামলা চালায় বিক্ষুব্ধ আন্দোলনকারীরা। পাল্টা প্রতিরোধ করেও টিকতে পারেনি ভেতরে থাকা পুলিশ সদস্যরা। সন্ধায় হামলার শিকার হয় উত্তরা পূর্ব থানা। হামলা ভাঙচুর ও আগুন দিয়ে ক্ষোভ জানায় জনতা। উত্তেজিত জনতার আক্রোশে পড়েছে মিরপুর মডেল থানাসহ আরও কয়েকটি থানা।