বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা সর্বাত্মক অসহযোগের দ্বিতীয় দিন সোমবার (৫ আগস্ট) রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, শনির আখড়াসহ বিভিন্ন স্থানে গোলাগুলির ঘটনায় তিন শতাধিক মানুষ গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। মারা গেছেন অনেকে। এর মধ্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (ঢামেক) মর্গে রয়েছে ৩৬ জনের গুলিবিদ্ধ লাশ। খবর পেয়ে হাসপাতালে আসেন স্বজনরা। পরে ময়নাতদন্ত ছাড়াই অনেকেই লাশ নিয়ে যান। এ সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন স্বজনরা।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) দুপুরে সরেজমিন দেখা যায়, মর্গে দেখা যায় কারও মাথায়, কারও বুকে, কারও হাতে-পায়ে গুলির দাগ। হাসপাতালে আসার পর চিকিৎসকরা কাউকে মৃত ঘোষণা করেন, আবার কাউকে জরুরি চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। গুলিবিদ্ধ মানুষের রক্তে ভিজে যায় ঢামেকের পিচঢালা সড়ক, ফ্লোর ও জরুরি বিভাগ। স্তব্ধ দাঁড়িয়ে এসব দৃশ্য দেখেন শত শত মানুষ। কিছু মানুষ গুলিতে ঝাঁজরা হয়ে যায়। এসব বীভৎস দৃশ্য দেখে বাকরুদ্ধ মানুষ। অনেকেই চোখের পানি ফেলে কাঁদছেন।
ঢামেকের জরুরি বিভাগের তথ্যমতে, সোমবার (৬ আগস্ট) সকাল থেকে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত পাঁচ শতাধিক আহত মানুষ সহিংসতায় আহত হয়ে চিকিৎসা নিতে আসেন। ৭০ জন ভর্তি হন। রাত ৮টা পর্যন্ত ৩৬ জনের লাশ গ্রহণ করা হয়। চিকিৎসাধীন অনেকে।
সোমবার ঢামেকে জরুরি বিভাগের গেট দিয়ে আন্দোলনকারীরা ঢুকে পড়লে চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক। এ সময় অনেক রোগীকে ভয়ে হাসপাতাল ছাড়তে দেখা যায়। হাসপাতালের সামনে পুলিশ গুলি ছোড়ে। এতে দুজন নিহত হয়। আহত হয় বেশ কয়েকজন।
মর্গে আসা পারভীন সুলতানা নামে এক নারী কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘আমার স্বামী আবু ইসহাক (৫২) সৌদি আরবে থাকতেন। দেশে ফিরে তাঁকে লাশ হতে হলো। এখন আমার সন্তানের কী হবে।’
তবে আন্দোলনে এ পর্যন্ত কতজন মারা গেছেন তার তালিকা করা সম্ভব হয়নি বলে জানান ঢামেক হাসপাতাল পরিচালক আসাদুজ্জামান। তিনি বলেন, হাসপাতালে অনেককে মৃত অবস্থায় আনা হয়েছে এবং চিকিৎসাধীন অবস্থায় অনেকেই মারা গেছেন।