বাংলাদেশে কোটা সংস্কার বিরোধী আন্দোলন থেকে এক দফা দাবির প্রেক্ষিতে দেশজুড়ে আন্দোলন-বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে শেষ পর্যন্ত দেশ ছাড়তে বাধ্য হন শেখ হাসিনা। গত ৫ আগস্ট বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করার পরই ভারতে পালিয়ে যান তিনি।
শেখ হাসিনা এভাবে হুট করেই পালিয়ে যাওয়ার আগের রাতে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান তার জেনারেলদের সঙ্গে বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, কারফিউ বলবৎ রাখতে সেনাবাহিনী বেসামরিক নাগরিকদের ওপর গুলি চালাবেন না। সেনাপ্রধান পরদিন সকালে শেখ হাসিনার সরকারি আবাস গণভবনে যান। প্রধানমন্ত্রীকে তিনি জানান, দেশজুড়ে যে কারফিউ ডাকা হয়েছে তা বাস্তবায়নে সেনাবাহিনী অপারগ। বিষয়টি সম্পর্কে ব্রিফ করা হয়েছে। এমন একজন ভারতীয় কর্মকর্তা এ তথ্য জানিয়েছেন।
ওই ভারতীয় কর্মকর্তা বলেন, শেখ হাসিনার প্রতি সেনাবাহিনীর আর সমর্থন ছিল না এ বিষয়টি তখন একেবারেই পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিল। তবে ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তাদের মধ্যকার অনলাইন বৈঠকের বিশদ বিবরণ এবং শেখ হাসিনার কাছে দেওয়া বার্তার বিষয়ে আগে কোনো তথ্য প্রকাশ করা হয়নি।
এসব বিষয় থেকে এটা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে যে, শেখ হাসিনা তার ১৫ বছরের শাসনকালে ভিন্নমত সহ্য করেননি। গত সোমবার তিনি বাংলাদেশ থেকে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর তার এমন শাসনকালের বিশৃঙ্খলা হুট করেই যেন শেষ হয়ে গেছে।
গত রোববার দেশব্যাপী সংঘর্ষে কমপক্ষে ৯১ জন নিহত এবং শতাধিক আহত হওয়ার পর দেশব্যাপী অনির্দিষ্টকালের কারফিউ জারি করা হয়। জুলাইয়ে শেখ হাসিনার সরকারের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পর সবচেয়ে প্রাণঘাতী দিন ছিল এটি।
সেনাবাহিনীর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল সামি উদ দৌলা চৌধুরী রোববার সন্ধ্যার আলোচনার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে তিনি এ বিষয়টিকে যেকোনো বিশৃঙ্খলার পর হালনাগাদ তথ্য নিয়ে নিয়মিত বৈঠক হিসেবে বর্ণনা করেছে। ওই বৈঠকে কি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল সে বিষয়ে আরও প্রশ্ন করা হলে তিনি বিস্তারিত জানাননি।
এসব বিষয়ে শেখ হাসিনার সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি কারণে তিনি বর্তমানে ভারতে অবস্থান করছেন। এছাড়া তার ছেলে ও উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনো ধরনের মন্তব্য করতে রাজি হননি।