রাজধানীর মেরাদিয়ায় বসবাসরত আমির কাজ করতেন কফিশপে। ১৯ জুলাই তারিখে উত্তাল ছাত্রজনতার আন্দোলনে চলছিল পুলিশের মুহূর্মুহু গুলি। বাঁচতে প্রাণান্ত চেষ্টা ছিল তার। অবশেষে জীবন বাঁচাতে ঝুলে ছিলেন নির্মাণাধীন ভবনের ছাদে।
বেঁচে আছেন যদিও দুই পা ভর্তি গুলির ক্ষত। মেরাদিয়ার ছোট্ট এক ঘরে শুয়ে সেরে ওঠার অপেক্ষায় জীবনের কঠিনতম সময় দেখা ১৮ বছরের এই তরুণ।
সেদিনের কথা বলতে গিয়ে তার চোখে মুখে ভেসে উঠছিল বীভৎসতার ছাপ। বলেন, এতো চেষ্টার পরেও খেতে হয়েছে ছয় রাউন্ড গুলি।
আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ এই তরুণ বলেন, দিনের কাজ সেরে বাসায় ফিরছিলেন তিনি। কিন্তু পথে পুলিশ ও বিজিবির গাড়ির মাঝখানে পড়ে যান। ভয়ে দৌড়ে উঠে যান একটি নির্মাণাধীণ ভবনের ছাদে। কিন্তু সেখানেও তেড়ে যায় পুলিশ। বারবার গুলি ছুড়ে ভয় দেখানো হয় এবং বলা হয় ছাদ থেকে ঝাঁপ দিতে।
আমির বলেন, আমি ঝাঁপ না দিয়ে ছাদের সাথে ঝুলে ছিলাম। তবে পুলিশ ৩ তলায় গিয়ে আমার পায়ে গুলি করে।
গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আমির সেই ভবনে পড়ে ছিলেন প্রায় তিন ঘণ্টা। পরে এক পথচারী তাকে নিয়ে যান হাসপাতালে। অভিযোগ রয়েছে, ভয়াবহ সেই বিপদেও গড়িমশি করেছে মেরাদিয়ার ফেমাস হাসপাতাল, ঢাকা মেডিকেলে যাওয়ার আগে গুনতে হয়েছে মোটা অংকের টাকা।
বয়স সবে মাত্র ১৮ পেরোলেও এখনই তাকে ধরতে হয়েছে সংসারের হাল। এখনও চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে হিমশিম খাচ্ছেন মা-হারা আমির। স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে দরকার আন্তরিক সহযোগিতা। এক বুক স্বপ্ন আর আশা নিয়ে বেঁচে থাকা তার।