দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ২৪ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় আরও কিছু ব্যক্তির বিরুদ্ধে শাপলা চত্বরে গণহত্যার অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থায় আবেদন করা হয়েছে।
এক দশকের বেশি সময় আগে ঢাকার শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের কর্মসূচি ঘিরে ‘নির্বিচার গুলি করে হত্যা করে লাশ গুম করে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হয়েছে’—মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থায় এমন অভিযোগ করেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মুফতি হারুন ইজহার চৌধুরী।
এ তথ্য জানিয়ে তার আইনজীবী গাজী এম এইচ তামিম বলেন, অভিযোগটি গ্রহণ করেছে তদন্ত সংস্থা।
আবেদনে ঘটনার তারিখ হিসেবে ২০১৩ সালের ৫ ও ৬ মে এবং স্থান হিসেবে মতিঝিলের শাপলা চত্বর এলাকা, ঢাকা, চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ ও কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
আবেদনে আসামি হিসেবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, রাশেদ খান মেনন, সাবেক মেয়র ও সংসদ সদস্য শেখ ফজলে নূর তাপস, সাবেক মন্ত্রী হাছান মাহমুদ, সাবেক সংসদ সদস্য হাজী সেলিম, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমান, সাবেক উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিকী, সাবেক আইজিপি এ কে এম শহীদুল হক ও বেনজীর আহমেদ, র্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক জিয়াউল আহসান, সাবেক ডিবি প্রধান হারুন অর রশীদ, সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা বিপ্লব কুমার সরকার, ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির, সদস্য মুনতাসীর মামুন ও তুরিন আফরোজ, গণজাগরণ মঞ্চের কথিত মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার।
এ ছাড়া একাত্তর টিভির এমডি মোজাম্মেল হক বাবু, সময় টিভির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহমেদ জোবায়ের, এবি নিউজ টোয়েন্টি ফোর ডটকমের সম্পাদক সুভাষ সিংহ রায়, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ও দৈনিক আমাদের নতুন সময়ের সম্পাদক নাঈমুল ইসলাম খান, বিজিবির সাবেক ডিজি ও সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদ, এনএসআইয়ের সাবেক ডিজি এম মনজুর আহমেদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। পাশাপাশি অজ্ঞাতনামা আসামি হিসেবে তৎকালীন কতিপয় মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, সংসদ সদস্য ও কতিপয় বিজিবি, র্যাব, পুলিশ সদস্য এবং তৎকালীন কয়েকটি ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার নীতিনির্ধারকেরা রয়েছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
অপরাধের ধরণে বলা হয়েছে, হেফাজতে ইসলামীর আন্দোলনকারী নেতাকর্মীদের সমূলে বা আংশিক নির্মূল করার উদ্দেশ্যে এক থেকে ২৪নং আসামিদের নির্দেশে ও পরিকল্পনায় অন্যান্য আসামীগণ কর্তৃক শহরব্যাপী ‘ব্ল্যাক আউট’ করে টিভি চ্যানেল সম্প্রচার বন্ধ ও নিয়ন্ত্রণ করে আগ্নেয়াস্ত্র দ্বারা নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করে হত্যা, লাশগুম করে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘঠিত হয়।
এ নিয়ে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে হত্যা-গণহত্যার অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থায় তিনটি মামলা দায়ের করা হয়।