ঢাকা
২০শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
রাত ১০:৪৬
logo
প্রকাশিত : আগস্ট ২৬, ২০২৪
আপডেট: আগস্ট ২৬, ২০২৪
প্রকাশিত : আগস্ট ২৬, ২০২৪

শঙ্কামুক্ত সাবেক বিচারপতি মানিক, চিকিৎসায় ৮ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড

সাবেক বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকের শরীরে অস্ত্রোপচারের পর এখন তিনি শঙ্কামুক্ত। শনিবার (২৪ আগস্ট) রাতে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার অণ্ডকোষে সফল অস্ত্রোপচার হয়।

ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাহবুবুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, ‘সাবেক বিচারপতি মানিকের শরীরে অস্ত্রোপচার হয়েছে। তিনি ভাল আছেন। তিনি হার্ট ও ডায়াবেটিসে ভুগছেন। তবে তিনি শঙ্কামুক্ত।’

চিকিৎসকরা জানান, শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকের শরীরের অভ্যন্তরীণ অংশে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। তার অণ্ডকোষে আঘাত লেগেছিল।

শনিবার আদালতে নেওয়ার সময় উত্তেজিত জনতার হামলায় মানিক আহত হলে কারা কর্তৃপক্ষ তাকে হাসপাতালে ভর্তি করে। অস্ত্রোপচারের পর সাবেক বিচারপতি মানিককে পোস্ট অপারেটিভ বিভাগে রাখা হয়েছে।

ভারতে অনুপ্রবেশকালে সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার ডনা সীমান্ত থেকে শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে আটক করে বিজিবি। শনিবার বিকালে তাকে আদালতে হাজির করা হলে উত্তেজিত জনতা তার উপর হামলা চালায়। ডিম ও জুতা নিক্ষেপের পাশাপাশি তাকে মারধরও করা হয়। পরে আদালত তাকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠান।

এদিকে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকের (৭৪) চিকিৎসায় ৮ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয় রবিবার।

মেডিকেল বোর্ডের প্রধান করা হয় ওসমানী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ও মেডিসিন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক শিশির চক্রবর্ত্তীকে।

বোর্ডের অন্য সদস্যরা হলেন, রেডিওলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক আশিকুর রহমান মজুমদার, অ্যান্ড্রোক্রাইনোলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক মো. শাহ ইমরান, কার্ডিওলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক মো. মোখলেছুর রহমান, সার্জারি বিভাগের প্রধান সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ খালেদ মাহমুদ, অ্যানেস্থেসিয়া বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. খায়রুল বাশার, ইউরোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. শফিকুল ইসলাম ও প্যাথলজি বিভাগের ভারপ্রাপ্ত জ্যেষ্ঠ ক্লিনিক্যাল প্যাথলজিস্ট কান্তা নারায়ণ চক্রবর্তী।

সূত্র জানায়, শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকের হার্টে বাইপাস করা হয় কয়েক বছর আগে। বর্তমানে তিনি উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিসে ভুগছেন।

সিলেটের কানাইঘাটের ডনা সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় তিনি প্রথমে স্থানীয় লোকজনের হাতে আটক হন মানিক। স্থানীয় লোকজন প্রথমে তার পরিচয় পাননি। একজন ব্যক্তিকে ভারতে অবৈধ পথে পাঠানো হচ্ছে- এই তথ্যের ভিত্তিতে এলাকাবাসী তাকে আটকাতে তৎপর হন। পরে সীমান্তের একটি জঙ্গল থেকে বিজিবি তাকে আটক করে। আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদে তার পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়।

শুক্রবার (২৩ আগস্ট) রাত সাড়ে নয়টার দিকে সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার সীমান্তবর্তী ডনা এলাকা থেকে স্থানীয় জনতার সহায়তায় শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে আটক করে বিজিবি তাদের ক্যাম্পে নিয়ে আসে। পরদিন শনিবার সকালে তাকে কানাইঘাট থানায় হস্তান্তর করা হয়।

এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক আপিল বিভাগের বিচারপতি ছিলেন। ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে তিনি অবসরে যান। এরপর তিনি বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও টেলিভিশনের টক শোতে কথা বলতেন। তিনি আওয়ামী লীগপন্থী হিসেবে পরিচিত এবং হাসিনা সরকারের পক্ষে সরব ছিলেন। এ ছাড়া সম্প্রতি তিনি এক টক শোতে নারী উপস্থাপকের সঙ্গে আক্রমণাত্মক আচরণ করে সমালোচনার মুখে পড়েন।

স্থানীয়রা জানান, ২১ আগস্ট শামসুদ্দিন চৌধুরী কানাইঘাট উপজেলার আটগ্রামে অবস্থান নেন। নির্দিষ্ট টাকার বিনিময়ে সীমান্ত পার করে দেওয়ার জন্য তিনি স্থানীয় দালালদের সহযোগিতা নেন। পরে তাদের সঙ্গেই গত বৃহস্পতিবার বিকালে সীমান্ত পাড়ি দিতে রওনা হন। তখন সীমান্তের একটি জঙ্গলে দালালরা শামসুদ্দিন চৌধুরীকে রেখে চলে যান। রাতে তিনি জঙ্গলে একাই ছিলেন। শুক্রবার তাকে ভারতে পাঠানোর কথা ছিল। তবে তা আর হয়নি। তার সঙ্গে থাকা বিপুল পরিমাণ টাকা-পয়সাসহ মূল্যবান জিনিষপত্র সীমান্তে খোয়া যায় বলে তিনি জানিয়েছেন।

ডনা বিজিবি ক্যাম্পের নায়েক সুবেদার মহিবউল্লা সংবাদ মাধ্যমকে জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর শামসুদ্দিন চৌধুরীর পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যাওয়ার পরই বিষয়টি ছড়িয়ে পড়ে।

শামসুদ্দিন চৌধুরীকে আটকের সময়ের সীমান্তবর্তী এলাকায় ধারণ করা একটি ভিডিওতে দেখা গেছে- জঙ্গলের মতো একটি স্থানে শামসুদ্দিন ক্লান্ত হয়ে কলাপাতায় শুয়ে আছেন। তার পরনে গাঢ় নীল চেকের হাফহাতা শার্ট।

ভিডিওতে শামসুদ্দিনকে বলতে শোনা যায়, ‘আমি তোমাদের পয়সা দিয়ে দেব।’ উত্তরে ব্যক্তিটি বলেন, ‘আচ্ছা, ঠিক আছে।’

শামসুদ্দিন এরপর বলেন, ‘পয়সা আমি দেব। আমার ভাই-বোনেরা দিয়ে দেবে।’

জবাবে ভিডিও করা ওই ব্যক্তি বলেন, ‘আমাদের পয়সার কোনো প্রয়োজন নেই। ঠিক আছে? আপনি যদি সেফটি মনে…।’

কথার মাঝখানে ওই ব্যক্তিকে থামিয়ে শামসুদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘ওই ফালতু লোক দুইটারে আনিও না। আমি এই দেশে (ভারত) এত কষ্ট করে এসেছি কি বাংলাদেশে ফেরত যাওয়ার জন্য?’

এরপর নাম জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার নাম বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক।’ ‘কার ভয়ে’ পালাচ্ছেন জিজ্ঞাসা করলে উত্তরে শামসুদ্দিন বলেন, ‘প্রশাসনের ভয়ে।’

শামসুদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘আমার সাথে ছিল ব্রিটিশ পাসপোর্ট, বাংলা পাসপোর্ট, টাকা, কয়টা ডেবিট কার্ড আর ক্রেডিট কার্ড।’

এরপর প্রশ্নকর্তা আবার প্রশ্ন করেন, ‘কালকে যে টাকাগুলো ছিল, আজকে কি কোনো টাকা ছিল সাথে?’

শামসুদ্দিন এর জবাবে বলেন, ‘আজকে টাকা ছিল না। কত জানি, ৪০ হাজার টাকা ছিল।’ প্রশ্নকর্তা এরপর জানতে চান, ‘কালকে যে দুজন টাকা নিয়েছিল, ওদের কাছে কত টাকা ছিল?’ শামসুদ্দিন বলেন, ‘ধরেন ৬০-৭০-এর মতো। ওরা নিয়ে গেছে।’ এ ধরনের বেশ কথোপকথন রয়েছে।

সর্বশেষ
logo
প্রকাশকঃ অধ্যাপক ড. জোবায়ের আলম
কার্যালয় : বিটিটিসি বিল্ডিং (লেভেল:০৩), ২৭০/বি, তেজগাঁও (আই/এ), ঢাকা-১২০৮
মোবাইল: +880 2-8878026, +880 1300 126 624
ইমেইল: tbtbangla@gmail.com (online), ads@thebangladeshtoday.com (adv) newsbangla@thebangladeshtoday.com (Print)
বাংলাদেশ টুডে কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বে-আইনী।
Copyright © 2024 The Bangladesh Today. All Rights Reserved.
Host by
linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram