ঢাকা
২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
রাত ৯:২৯
logo
প্রকাশিত : আগস্ট ২৬, ২০২৪

নিক্কেই এশিয়ার প্রতিবেদনে শেখ হাসিনার পতন ও এর নেপথ্যের সম্ভাব্য কারণ

বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে দীর্ঘ এক প্রতিবেদন করেছে জাপানি সংবাদমাধ্যম নিক্কেই এশিয়া। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে তিনি কীভাবে নিজ দেশে গণতন্ত্রের কণ্ঠরোধ করেছিলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে কীভাবে দেবতাতুল্য করে তুলেছিলেন এবং সাধারণ মানুষের মতামতকে উপেক্ষা করে কীভাবে একেবারে নিজের মনের মতো ধাঁচে গড়া গতানুগতিক শাসন চালিয়ে গেছেন দেড় দশকেরও বেশি সময়।

প্রতিবেদনটি লিখেছেন হাউজটির সিনিয়র স্টাফ রাইটার তোরু তাকাহাশি। একাধিক ব্যক্তির মন্তব্য, সমসাময়িক বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া ঘটনাপ্রবাহ এবং বাংলাদেশের রাজনৈতিক আবহের পাশাপাশি ইতিহাসের একটি মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন সেখানে।

প্রতিবেদনে উল্লিখিত ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপিং ইকোনমিসের নির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইউমি মুরাইয়ামার মন্তব্য অনুযায়ী, ১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনা যখন প্রথমবার প্রধানমন্ত্রী হন, তখন তার কাছে মনে হয়নি তিনি কর্তৃত্ববাদী শাসন কায়েম করবেন। তবে ২০০৯ পরবর্তী শেখ হাসিনার আমল বিশ্লেষণ করে অন্য আবহ খুঁজে পান মুইয়ামা। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ২০০৯ সালে দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই কর্তৃত্ববাদী শাসকের মতো আচরণ করতে শুরু করেন শেখ হাসিনা। তিনি দ্রুতই সংবিধান থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান তুলে নিতে মরিয়া হয়ে ওঠেন। অথচ এই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধানের কারণেই মোটামুটি সুষ্ঠু একটি নির্বাচনের মাধ্যমে দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি। এই দ্বিমুখী স্বভাব তার দেশের মানুষের খুব একটা পছন্দ করেনি।

নিক্কেই এশিয়ার নিবন্ধ বলছে, বিএনপিকে দমাতে দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মামলা দিয়ে কারাগারে বন্দী করা হয়। বিএনপির বহু নেতা-কর্মী মামলায় পড়ে কারাবন্দী হন। গুম করা হয় অনেককে। তৈরি হয় বিচারহীনতার সংস্কৃতি। তবে শুধু বিরোধী দলের উপর চড়াও হয়েই ক্ষান্ত হননি শেখ হাসিনা। তার বাবা শেখ মুজিবুর রহমানকে ‘দেবতার মতো’ উপস্থাপন করতে থাকেন। সারা দেশে এমন এক পরিস্থিতি তৈরি করেন, যাতে কেউই তার সরকারের কোনো সমালোচনা করার সাহস পায়নি।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ক্ষমতার সবচেয়ে বেশি প্রভাব দেখা যায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে। সেখানে সব ধরনের সুবিধায় এগিয়ে থাকতো ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে যায় বিরাট সংখ্যক সাধারণ শিক্ষার্থী। এটিও তার পতনে পরোক্ষভাবে রসদ জুগিয়েছে, যা সুপ্ত এবং দৃষ্টির অগোচরে ক্রমান্বয়েই বেড়েছে।

ভারতীয় সংবাদপত্র দ্য হিন্দুর বরাত দিয়ে এই প্রতিবেদনে বলা হয়, শেখ হাসিনা তার বিজ্ঞ উপদেষ্টাদের থেকে ক্রমশ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন। শেষ পর্যন্ত, কেবল তার বোন রেহানাই থেকে যান, যাকে হাসিনা বিশ্বাস করতেন বলে মনে করা হয়। নিজের উপদেষ্টাদের থেকে এই দূরত্বও নেতিবাচক একটি অনুঘটক হিসেবে তার পতনে পরোক্ষ ভূমিকা রেখেছে বলে মনে করা হচ্ছে।

প্রতিবেদনের শেষে, ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে এই মুহুর্তে সর্বজনস্বীকৃত ব্যক্তি হিসেবে প্রধান উপদেষ্টার পদে বসানোয় দেশের মানুষ খুশি বলেও বর্ণনা করা হয়। তবে জাতীয় নির্বাচনের আয়োজন বেশি দ্রুত করে ফেললে বিএনপি এই মুহূর্তে ক্ষমতায় আসবে এটাও অনুমেয় বলে উল্লেখ করা হয়। তাই তারাও যে আওয়ামী লীগের মতোই শুধু মোড়ক পাল্টে একই কাজ করবে না, এই শঙ্কাও প্রকাশ করা হয়েছে। সেইসাথে শেখ হাসিনার দ্বিতীয় দফার এই ১৫ বছরের শাসনামলে বাংলাদেশ কী দেখলো এবং কী শিখলো এই প্রশ্নও ছুড়ে দেয়া হয়।

সর্বশেষ
logo
প্রকাশকঃ অধ্যাপক ড. জোবায়ের আলম
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ তাপস রায় সরকার
মোবাইল: +৮৮০ ১৭৩৬ ৭৮৬৯১৫
কার্যালয় : বিটিটিসি বিল্ডিং (লেভেল:০৩), ২৭০/বি, তেজগাঁও (আই/এ), ঢাকা-১২০৮
মোবাইল: +880 2-8878026, +880 1736 786915, +880 1300 126 624
ইমেইল: tbtbangla@gmail.com (online), ads@thebangladeshtoday.com (adv) newsbangla@thebangladeshtoday.com (Print)
বাংলাদেশ টুডে কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বে-আইনী।
Copyright © 2024 The Bangladesh Today. All Rights Reserved.
Host by
linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram