ঢাকা
২০শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
সন্ধ্যা ৬:৪৫
logo
প্রকাশিত : আগস্ট ২৯, ২০২৪
আপডেট: আগস্ট ২৯, ২০২৪
প্রকাশিত : আগস্ট ২৯, ২০২৪

৬ বছরে ৫১,৬৮০ অস্ত্রের লাইসেন্স

নিজস্ব সুরক্ষায়, প্রতিষ্ঠান ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সুরক্ষায় বিত্তশালী ব্যক্তিরা বেসামরিকভাবে লাইসেন্সের মাধ্যমে বৈধ অস্ত্র ব্যবহার করে থাকেন। গত ছয় বছরে সারা দেশে এই তিন ক্যাটাগরিসহ বিভিন্ন ব্যক্তিমালিকানাধীন বৈধ অস্ত্রের লাইসেন্স দেয়া হয়েছে ৫১ হাজার ৬৮০টি। এর মধ্যে ব্যক্তির নামে ৪৫ হাজার ২২৬টি এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে ৫ হাজার ৮৪টিরও বেশি। ব্যবহারকারীদের মধ্যে প্রায় ৩০ হাজারের বেশি ব্যবসায়ী। বিভিন্ন পেশাজীবী ও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের হাতে রয়েছে ২১ হাজার ৬৮০টি বৈধ অস্ত্র। এসব মালিকরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারিতে রয়েছেন। বৈধ অস্ত্র সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট গোয়েন্দা সূত্র জানায়, ২০১৮ থেকে ২০২৪ সালের আগস্ট পর্যন্ত দেয়া বৈধ অস্ত্রের লাইসেন্সের সংখ্যা ৫১ হাজার ৬৮০। কিন্তু এর প্রকৃত সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে নিশ্চিত করেছে সংশ্লিষ্ট সূত্র। এর আগে ২০০৯ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত বৈধ অস্ত্রের হিসাব সম্পর্কে এখন পর্যন্ত সম্মিলিত তথ্য আসেনি।

দীর্ঘ ১৫ বছর আওয়ামী লীগ সরকার টানা ক্ষমতায় থাকায় লাইসেন্সপ্রাপ্ত আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারকারীর সংখ্যা হু হু করে বেড়েছে। বৈধ অস্ত্র ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাড়লেও রাজস্ব সেভাবে আদায় করা হয়নি।

যাদের অনেকেরই আয়কর ফাইলে দেখানো আয় ও সম্পদের হিসাবে কৌশলে বড় অঙ্কের কর ফাঁকি দিয়ে অস্ত্র ব্যবহার করেছেন বলে জানিয়েছে এনবিআরের সংশ্লিষ্ট বিভাগ। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) সূত্র জানায়, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে বেসামরিক জনগণকে প্রদানকৃত আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স ইতিমধ্যে স্থগিত করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স স্থগিত করা ও জমা দেয়ার বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে একটি আদেশ জারি করা হয়েছে। এতে আগামী ৩রা সেপ্টেম্বরের মধ্যে গোলা-বারুদসহ আগ্নেয়াস্ত্র সংশ্লিষ্ট থানায় জমা দেয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়।

অস্ত্র আইন, ১৮৭৮ এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক জারিকৃত আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স প্রদান, নবায়ন ও ব্যবহার নীতিমালা ২০১৬ অনুযায়ী জেলা ম্যাজিস্ট্রেট প্রয়োজনীয় ব্যবহার গ্রহণ করে থাকেন। স্পেশাল ব্রাঞ্চ কর্তৃক তৈরি করা বেসামরিক আগ্নেয়াস্ত্র্ত্রের তথ্য সংরক্ষণ সফটওয়্যার এ আগ্নেয়াস্ত্রের হাল নাগাদ তালিকা সম্পর্কে জানা যায়, ২০১৮ সাল থেকে এখন পর্যন্ত সর্বমোট ৫১,৬৮০টি বৈধ আগ্নেয়াস্ত্রের ধরন অনুযায়ী পিস্তল ৪,৮৪০টি, রিভলবার ২,৬৯২টি, একনলা বন্দুক ২১,৩৯৫৪টি, দোনলা বন্দুক ১১,০২২টি, শটগান ৫,৯৩৮টি, রাইফেল ১,৮৬৪টি। এ ছাড়া এর আগের বছরগুলোর আগ্নেয়াস্ত্রের বিষয়ে হালনাগাদ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। একইসঙ্গে এ সকল আগ্নেয়াস্ত্রে সম্পূর্ণ নিয়মতান্ত্রিক ভাবে সংশ্লিষ্ট লাইসেন্সধারী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে প্রদান করা হয়েছে কিনা তা যাচাই করে দেখা হবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, দেশের বিভিন্ন জেলার অন্তর্গত থানা ও পুলিশ ফাঁড়িতে অগ্নিসংযোগ ভাঙচুর, আগ্নেয়াস্ত্র লুটপাটসহ গাড়ি পোড়ানোর ঘটনায় পুলিশের স্থাপনায় ব্যাপক ক্ষতি হওয়ায় গত ১৫ বছরের ইস্যুকৃত আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্সের বিষয়ে পুলিশ এখনো স্বাভাবিক কাজ শুরু করতে পারেনি। অনেক থানায় লাইসেন্সকৃত আগ্নেয়াস্ত্রে জমা নেয়ার ক্ষেত্রে জটিলতাসহ অস্ত্রের রক্ষণাবেক্ষণের নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে। এ ছাড়া লুট হওয়া পুলিশের অস্ত্রশস্ত্র্ত্র এখনো সম্পূর্ণ উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।

২০১৬ সালের আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স প্রদান, নবায়ন ও ব্যবহার নীতিমালা অনুযায়ী, ব্যক্তিপর্যায়ে আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স নিতে হলে ওই ব্যক্তিকে বাংলাদেশি নাগরিক ‘ব্যক্তি শ্রেণির’ আয়করদাতা হতে হবে। আবেদনকারীকে আবেদনের পূর্ববর্তী তিন বছর ধারাবাহিকভাবে পিস্তল, রিভলবার, রাইফেলের ক্ষেত্রে ন্যূনতম তিন লাখ এবং শটগানের ক্ষেত্রে ন্যূনতম এক লাখ টাকা আয়কর দিতে হবে। আবেদনকারী কর্তৃক পরিশোধিত আয়করের পরিমাণ উল্লেখসহ এনবিআর কর্তৃক ইস্যুকৃত প্রত্যয়নপত্র আবেদনের সঙ্গে দাখিল করতে হয়। এদিকে আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স স্থগিত এবং আগামী ৩রা সেপ্টেম্বরের মধ্যে জমা দেয়ার নির্দেশের পর থেকে বিভিন্ন থানায় যোগাযোগ করছেন ব্যবহারকারীরা। তারা কীভাবে অস্ত্র জমা দেবেন, সে বিষয়ে জানতে চাইছেন। রাজধানীর মিরপুরের একটি থানায়, পাঁচজন বৈধ আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারকারী সংশ্লিষ্ট থানার সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। তারা অস্ত্র জমা দেয়ার প্রক্রিয়া জানতে চেয়েছেন। যেকোনো সময়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি করে অস্ত্র জমা দেয়া যাবে বলে জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এর জননিরাপত্তা বিভাগ এর উপসচিব (রাজনৈতিক-৪ শাখা) মো. আরিফ-উজ-জামান এ বিষয়ে বলেন, বৈধ আগ্নেয়াস্ত্র জমাদানের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। নির্ধারিত তারিখের মধ্যে যারা অস্ত্র জমা না দিবেন তাদের বিরদ্ধে পরবর্তীতে পদক্ষেপ নেয়া হবে। কি ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হবে সেটা পরবর্তীতে জানানো হবে।

সর্বশেষ
logo
প্রকাশকঃ অধ্যাপক ড. জোবায়ের আলম
কার্যালয় : বিটিটিসি বিল্ডিং (লেভেল:০৩), ২৭০/বি, তেজগাঁও (আই/এ), ঢাকা-১২০৮
মোবাইল: +880 2-8878026, +880 1300 126 624
ইমেইল: tbtbangla@gmail.com (online), ads@thebangladeshtoday.com (adv) newsbangla@thebangladeshtoday.com (Print)
বাংলাদেশ টুডে কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বে-আইনী।
Copyright © 2024 The Bangladesh Today. All Rights Reserved.
Host by
linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram