শিল্পগোষ্ঠী এস আলম গ্রুপের মালিক সাইফুল আলম, তাঁর স্ত্রী ও সন্তানদের বিরুদ্ধে এক লাখ ১৩ হাজার ২৪৫ কোটি টাকা বিদেশে পাচারের অভিযোগে অনুসন্ধান শুরু করেছে অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
গতকাল শনিবার সিআইডির মিডিয়া উইংয়ের বিশেষ পুলিশ সুপার আজাদ রহমান এই তথ্য জানান। তিনি বলেন, ‘এস আলম গ্রুপের অর্থপাচারের বিষয়ে আমরা খোঁজ নিতে শুরু করেছি। তদন্তের পর বিস্তারিত জানানো হবে।
এদিকে এ বিষয়ে গতকাল সিআইডির এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এস আলম গ্রুপের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং আইনে অনুসন্ধান কার্যক্রম শুরু করেছে সিআইডি। এস আলম গ্রুপের মালিক সাইফুল আলমসহ তাঁর সহযোগীদের বিরুদ্ধে ‘প্রতারণা, জালিয়াতি, ওভার ইনভয়েস, আন্ডার ইনভয়েস ও সংঘবদ্ধ অপরাধের মাধ্যমে হুন্ডি কার্যক্রম পরিচালনা’ করে প্রায় এক লাখ ১৩ হাজার ২৪৫ কোটি টাকা বিদেশে পাচারের বিষয়ে অনুসন্ধান কার্যক্রম শুরু করেছে সিআইডি।
বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায়, এস আলমসহ সন্দেহভাজন ব্যক্তিরা বাংলাদেশের নাগরিকত্ব বাতিল করে এক দিনের ব্যবধানে আবার বাংলাদেশে স্থায়ীভাবে বসবাসের (পিআর) অনুমতি গ্রহণ করেছেন। তাঁরা সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, সাইপ্রাস ও ইউরোপে বাংলাদেশ থেকে অর্থ পাচার করে নিজের এবং তাঁদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে স্থাবর/অস্থাবর সম্পদ ক্রয় ও ব্যবসা পরিচালনা করেছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পাচার করা অর্থে তাঁরা সিঙ্গাপুরে প্রায় ২৪৫ কোটি ৭৪ লাখ টাকার পরিশোধিত মূলধনের ‘ক্যানালি লজিস্টিক প্রাইভেট লি.’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেছেন। এ ছাড়া তাঁরা ভুয়া নথি সৃজন, জালজালিয়াতি ও প্রতারণার মাধ্যমে বিদেশে পণ্য আমদানি-রপ্তানি ও বিনিয়োগের নিমিত্তে নামে-বেনামে ছয়টি ব্যাংক থেকে ৯৫ হাজার কোটি টাকা ঋণ গ্রহণ করে বিদেশে পাচার করেছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, তাঁরা বিদেশে শেল কম্পানি (নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠান) খুলে অফশোর ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে প্রায় ১৮ হাজার কোটি টাকা প্রতারণামূলকভাবে বিদেশে পাচার করেছেন। এস আলম, তাঁর স্ত্রী ফারজানা পারভীন, ছেলে আহসানুল আলম, আশরাফুল আলমসহ তাঁদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট অন্য ব্যক্তিদের সহযোগিতায় বিদেশে মানি লন্ডারিং করেছেন বলে প্রাথমিক প্রমাণ মিলেছে।
এই বিষয়ে মানি লন্ডারিং আইন ও বিধি অনুযায়ী সিআইডি অনুসন্ধান কার্যক্রম শুরু করেছে। এ বিষয়ে তথ্য যাচাই-বাছাই শেষে মানি লন্ডারিং আইনে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সিআইডির ফিন্যানশিয়াল ক্রাইম ইউনিটের এক কর্মকর্তা জানান, এস আলম গ্রুপের বিরুদ্ধে ওঠা মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগের প্রাথমিক তদন্ত শুরু করেছেন তাঁরা।