সরকারি চাকরিতে আবেদন বিনামূল্যে করতে হবে। কোনো ফি রাখা যাবে না। সরকারি চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা আগামী ২ বছরের জন্য ৩৫ বছর, পরবর্তীতে স্থায়ীভাবে ৩৩ বছর এবং অবসরের বয়সসীমা ৬২ বছর করতে হবে। এমন প্রস্তাবনা তুলে ধরেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।
আজ বুধবার (৯ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর একটি হোটেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব প্রস্তাবনা উপস্থাপন করেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ও সাবেক সংসদ সদস্য ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের।
এর আগে, অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। এসময় জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে ছাত্রজনতার অবদানের কথা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন তিনি। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সম্পাদক মতিউর রহমান আকন্দ।
সংস্কারের প্রস্তাবনা তুলে ধরে আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেন, নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিতে জামায়াতের পক্ষ থেকে অন্তবর্তী সরকারের কাছে সংক্ষিপ্ত প্রস্তাব তুলে ধরা হয়েছে। রাষ্ট্র সংস্কারে দলের পক্ষ থেকে মূল ৪১টি প্রস্তাবনা রয়েছে।
তিনি বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে ব্যাপক সংস্কার করতে হবে। বিচার বিভাগ সংস্কার করতে হবে। সুপ্রিম কোর্টের অধীনে আইন কমিশন গঠন করতে হবে। সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিল করতে হবে। বিভাগীয় পর্যায়ে হাইকোর্টের বেঞ্চ গঠন করতে হবে। সর্বোচ্চ পাঁচ ও তিন বছরের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি করতে হবে। সংসদে বিরোধীদলের জন্য পর্যাপ্ত সময় দিতে হবে।
ডা. তাহের বলেন– জনপ্রশাসনে যোগ্যতা, দক্ষতা ও সততাকে প্রাধান্য দিতে হবে। চাকরিতে বিরাজমান আন্তঃক্যাডার বৈষম্য দূর করতে হবে। যারা চাকরিতে থেকে দুর্নীতি ও অন্যায় করেছেন, তাদের বহিষ্কার করতে হবে। দুদকে যোগ্য, দক্ষ ও সৎ ব্যক্তিকে নিয়োগ দিতে হবে। এক ব্যক্তি পরপর দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবেন না। সকল শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে ২০২৪ সালের অভ্যুত্থানের ইতিহাস এবং মহানবী (সা.) এর জীবনী অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা স্থায়ীভাবে ফেরত আনতে হবে। নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) বাতিল করতে হবে। পররাষ্ট্র ক্ষেত্রে ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে হবে। বিগত সরকারের আমলে সম্পাদিত চুক্তি রিভিউ করতে হবে। এজন্য একটি রিভিউ কমিশন গঠন করা যেতে পারে। বাংলাদেশকে আসিয়ানের সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্কার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ঐতিহাসিক বিষয়কে সামনে রেখে চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে হবে। নাটক, কন্টেন্ট থেকে অশ্লীলতা দূর করতে হবে। ইসলামের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়ানো কন্টেন্ট দূর করতে হবে। মূর্তি নির্ভর ভাস্কর্য তৈরি না করে দেশীয় প্রকৃতি তুলে ধরতে হবে।