চট্টগ্রামের রাউজানের সাবেক সংসদ সদস্য এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরীর নির্দেশে উপজেলার গহিরা কলেজে ‘আয়নাঘর’ সৃষ্টি করে সেখানে সাধারণ মানুষকে নির্যাতন করেছেন আওয়ামী লীগের লোকজন। এ ছাড়া সাধারণ মানুষ জমি লিখে দিতে না চাইলে তাদের ওই ‘আয়নাঘরে’ নিয়ে জোর করে দস্তখত নেওয়া হতো।
গতকাল শুক্রবার দুপুরে গহিরায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন রাউজানের সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি নেতা আবু জাফর চৌধুরী, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল হুদা, ফিরোজ আহমেদ, মনজুরুল আলম মঞ্জু, সাবের সুলতান কাজল, নুরুল ইসলাম বাবুল, আনিসুজ্জামান সোহেল প্রমুখ।
গিয়াস কাদের বলেন, ‘আওয়ামী লীগ আমলে রাউজান সন্ত্রাসের রাজত্ব ছিল। সাবেক এমপি ফজলে করিম প্রতিটি সেক্টরে ট্যাক্স বসিয়েছিলেন। বাড়ি বানাতে সিমেন্ট, রড ও ইট কিনতে হতো তাঁদের লোকদের কাছ থেকে।’
তিনি বলেন, ‘গরিব-দুঃখী মানুষ বিদেশে কষ্ট করে দেশে জমি কেনে।
তাদের জমি দখল করেছেন আওয়ামী লীগের লোকজন।’ গিয়াস কাদের বলেন ‘গহিরা কলেজে একটি আন্ডারগ্রাউন্ডে আয়নাঘর সৃষ্টি করা হয়েছে। জমি দিতে না চাইলে সেই আয়নাঘরে জোরপূর্বক দস্তখত নেওয়া হতো।’
তিনি প্রশাসনের উদ্দেশে বলেন, সম্প্রতি গহিরায় সাবেক এমপি ফজলে করিমের বাড়ি থেকে যে অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে, সেটা গণমাধ্যমের সামনে প্রদর্শনী করা হলো না কেন।
তিনি বলেন, ‘আমার দলের কেউ চুরি, ডাকাতি, চাঁদাবাজিসহ কোনো অপরাধ করার খবর হলে তা আমার দলের নেতারা প্রতিরোধ করবেন। সাংবাদিকরা আমার ভুলত্রুটি দেখিয়ে দেবেন।’
এদিকে রাউজান পৌর এলাকার বিএনপিকর্মী আজিম উদ্দিন সংবাদমাধ্যমে দাবি করেছেন, সাবেক এমপি ফজলে করিম চৌধুরী উপজেলা সদরে নিজের বাগানবাড়ির এক পাশে একটি নির্যাতনের কক্ষ বানিয়েছিলেন। সেখানে ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে তাঁকে ধরে এনে নির্যাতন করা হয়েছিল। তারপর তাঁকে পুলিশে ধরিয়ে দেওয়া হয় অস্ত্রসহ।
আজিম উদ্দিন জানান, বাগানবাড়ির এক পাশে অপেক্ষাকৃত নিরিবিলি জায়গায় খাল ঘেঁষে সুড়ঙ্গের মতো দরজা করে মাটির নিচে তৈরি করা হয় এই ‘আয়নাঘর’। এখানে অনেক নারীও নির্যাতনের শিকার হন বলে জানান তিনি।
গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর গ্রেপ্তার হয়েছেন সাবেক এমপি ফজলে করিম চৌধুরী।