ঢাকা
১০ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
সন্ধ্যা ৬:৫৬
logo
প্রকাশিত : অক্টোবর ১৪, ২০২৪

সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করেছে এফবিসিসিআই

অতীতে যখন যে সরকার ক্ষমতায় আসে, তখন সে সরকারের দালালির শীর্ষ থাকে ব্যবসায়ীদের প্রধান বাণিজ্য সংগঠন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশন-এফবিসিসিআইয়ের কতিপয় নেতা। তারা এফবিসিসিআই দলীয়করণে রাজনীতিবিদদেরও ছাড়িয়ে গেছেন।

ভুঁইফোঁড় নেতারা নিজেদের আখের গোছাতে গিয়ে সাধারণ ব্যবসায়ী থেকে বৃহৎ শিল্পপতি ও বিভিন্ন বাণিজ্য সংগঠনের নেতাদের ক্ষমতাসীন সরকারের পক্ষে সাফাই গাইতে বাধ্য করেছেন বলে বিভিন্ন সূত্র জানায়।

এফবিসিসিআইর সাবেক সভাপতি মীর নাসির হোসেন গতকাল বলেন, বিগত ১৫ বছরে প্রকৃতপক্ষে এফবিসিসিআই সরকারের দালালি করেছে।

অনেক ভয়ভীতি দেখিয়ে অতীত সরকারের স্বার্থ রক্ষা ও এজেন্ডা বাস্তবায়ন করা হয়েছে। ব্যবসায়ীদের আওয়ামী লীগ সরকারের পক্ষে সাফাই গাইতে বাধ্য করা হয়েছে। ব্যবসায়ীদের সাদা পতাকা হাতে শান্তি সমাবেশ কিংবা নির্বাচনের আগে সরকারের পক্ষে জোরালো বক্তব্য দিতে বাধ্য করানো হয়েছে। এসব ক্ষেত্রে নেপথ্যে কলকাঠি নেড়েছে এফবিসিসিআই।

এ শীর্ষ ব্যবসায়ী নেতা আরো বলেন, আগামী দিনে সত্যিকার অর্থে ব্যবসায়ীদের সুরক্ষায় এফবিসিসিআই সংস্কার করতে হবে। বিগত ১৫ বছর ন্যাক্কারজনক রাজনীতিকরণের কারণে ব্যবসায়ীদের স্বার্থ রক্ষা হয়নি। সরকার যা চেয়েছে, এফবিসিসিআই তাই বাস্তবায়ন করেছে। সরকারের সঙ্গে ন্যূনতম দরকষাকষিতে ব্যর্থ হয়েছে এফবিসিসিআই।

ব্যবসায়ীদের স্বার্থ রক্ষায় প্রকৃত বাণিজ্য সংগঠন হিসেবে গড়ে তুলতে এফবিসিসিআইর নির্বাচন প্রক্রিয়া বদল করতে হবে। শুধু ট্রেডিং ব্যবসার সঙ্গে জড়িত এমন নয়, যারা উৎপাদনমুখী দেশীয় শিল্প খাত বিকাশে ভূমিকা রাখছেন, সেসব প্রকৃত ব্যবসায়ীকে এফবিসিসিআইর নেতৃত্বে আনতে হবে।

ভালো ব্যবসায়ীদের নেতৃত্বে আসার পথ খুলে দিতে হবে। দেশে এখন অনেক ভুয়া বাণিজ্য সংগঠন রয়েছে। এসব পকেট সংগঠন বাতিল করতে হবে।

সূত্র বলছে, এফবিসিসিআই দলীয়করণের ন্যক্কারজনক উদাহরণ তৈরি হয় বিগত ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফর ঘিরে। সে সফরে তৎকালীন এফবিসিসিআই সভাপতি ও পরবর্তীতে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আনিসুল হককে বাদ দিয়ে আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদকে ভারত সফরকারী ব্যবসায়ী দলের প্রধান করা হয়।

এরপর থেকে এফবিসিসিআইতে যারাই সভাপতি হয়েছেন, তারাই শেখ হাসিনার অনুকম্পা নিয়ে এসেছেন। শুধু সভাপতি পদই নয়, অনেকে সহসভাপতি ও পরিচালক বনে গেছেন আওয়ামী সরকারের প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায়। এরই ধারাবাহিকতায় আওয়ামী লীগের বিগত সাড়ে ১৫ বছরে শেখ হাসিনার তল্পিবাহক হিসেবে এফবিসিসিআই সভাপতি হয়েছেন হা-মীম গ্রুপের মালিক এ কে আজাদ।

এরপর এফবিসিসিআই সভাপতি পদ দখল করেছেন আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক উপকমিটির চেয়ারম্যান ও শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ আত্মীয় কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ, নিটল-নিলয় গ্রুপের চেয়ারম্যান আবদুল মাতলুব আহমাদ, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন। এফবিসিসিআইতে বিতর্কিত অনেক ভূমিকা পালন করে সংগঠনটির সভাপতি পদ দখল করেছেন শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ আত্মীয় ও আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা শেখ সেলিমের পুত্র এবং যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলে ফাহিম।

এরপর সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন বেঙ্গল গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান মো. জসিম উদ্দিন ও চট্টগ্রাম চেম্বারের সাবেক সভাপতি মাহবুবুল আলম। বিগত সময়ে বিতর্কিত ভূমিকার কারণে বর্তমান সরকার সংগঠনটিতে প্রশাসক নিয়োগ দিয়েছে।

জানা গেছে, অতীতে বাণিজ্য সংগঠন আইন সংশোধন করে ব্যবসায়ীদের দলীয়করণের পথে ঠেলে দেওয়া হয়। তখন থেকে যখন যে সরকার ক্ষমতায় আসে, তাদের রাজনৈতিক শাখায় পরিণত হয় এফবিসিসিআইসহ অন্যান্য সংগঠন। দলীয়করণের ফলে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সাড়ে ১৫ বছরে এফবিসিসিআইর অধীনে থাকা পণ্যভিত্তিক অ্যাসোসিয়েশনসমূহ ও জেলা চেম্বারগুলোতে আওয়ামী লীগ আর যুবলীগের রাম রাজত্ব কায়েম হয়।

অধিকাংশ সংগঠনেই পকেট কমিটি হয়। বর্তমানে এফবিসিসিআইর সাধারণ পরিষদে যে আড়াই হাজারের মতো সদস্য রয়েছেন, তার মধ্যে অনেকের প্রকৃতপক্ষে ব্যবসায়ী নয় বলে সূত্র জানায়। জানা গেছে, অতীতে সরকার বাণিজ্য সংগঠন আইনে সংশোধনী এনে চালু করে মনোনীত পরিচালক প্রথা। অর্থাৎ এ পরিচালকরা বিনা ভোটে এফবিসিসিআই পরিচালনা পর্ষদে সব সুযোগ-সুবিধা ভোগ করবেন নির্বাচিতদের মতোই। হবেন সিআইপি বা বাণিজিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। তবে ব্যবসায়ীদের উদ্বেগ হলো- প্রতি বছরই এই মনোনীত পরিচালকের সংখ্যা বাড়ছে।

সূত্র : বাংলাদেশ প্রতিদিন

logo
প্রকাশকঃ অধ্যাপক ড. জোবায়ের আলম
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ তাপস রায় সরকার
মোবাইল: +৮৮০ ১৭৩৬ ৭৮৬৯১৫
কার্যালয় : বিটিটিসি বিল্ডিং (লেভেল:০৩), ২৭০/বি, তেজগাঁও (আই/এ), ঢাকা-১২০৮
মোবাইল: +880 2-8878026, +880 1736 786915, +880 1300 126 624
ইমেইল: tbtbangla@gmail.com (online), ads@thebangladeshtoday.com (adv) newsbangla@thebangladeshtoday.com (Print)
বাংলাদেশ টুডে কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বে-আইনী।
Copyright © 2024 The Bangladesh Today. All Rights Reserved.
Host by
linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram