ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যে লেবানন থেকে প্রবাসী বাংলাদেশিদের ফেরানোর উদ্যোগের প্রথম দফায় আসছেন ৫৪ জন। বৈরুতের রফিকি হারিরি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে স্থানীয় সময় আজ রবিবার রাত ১০টা ৫০ মিনিটে তারা রওনা হবেন। জেদ্দা হয়ে পরদিন সোমবার সন্ধ্যা ৬টায় তাদের ঢাকায় পৌঁছানোর তথ্য এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে বৈরুতে বাংলাদেশ দূতাবাস।
প্রথম দফায় ৪৭ জন প্রাপ্তবয়স্কের সঙ্গে সাত শিশুও ফিরছে ওই ফ্লাইটে।
গাজা যুদ্ধ শুরুর পর থেকে পাল্টাপাল্টি হামলা চালিয়ে আসছে লেবাননের হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েল। গত সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি থেকে লেবাননে আক্রমণের গতি বাড়িয়েছে ইসরায়েল।
দেশটির দক্ষিণাঞ্চলে স্থল আক্রমণ শুরুর দুই সপ্তাহ পর ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর এলাকা খালি করার নির্দেশে লেবাননের ১২ লাখেরও বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা জানিয়েছে। এমন অবস্থার মধ্যে দেশে ফিরে আসার জন্য আকুতি জানিয়ে আসছেন প্রবাসী বাংলাদেশিদের অনেকেই।
এ বিষয়ে সরকারি সিদ্ধান্তের পর যারা ফিরতে ইচ্ছুক, তাদের নিবন্ধন করতে বলা হয়। সেই নিবন্ধনে ১ হাজার ৮০০ জনের তালিকা পাওয়ার কথা জানান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। নিয়মিত-অনিয়মিত সবার ক্লিয়ারেন্স পাওয়ার প্রক্রিয়া চলার কথাও বলেছেন তিনি।
প্রবাসীদের ফেরাতে বাংলাদেশ সরকারের এই উদ্যোগে প্রথমবারের মতো ৫৪ জন দেশে ফিরবেন সোমবার। নিবন্ধনকারী বাকিদেরও পর্যায়ক্রমে ফেরাবে সরকার।
এদিকে মধ্যপ্রাচ্যের দেশটি থেকে ফেরার আবেদন করলেও বৈরুত থেকে ফ্লাইটের সংখ্যা কমে আসায় ‘সংকটে পড়ার’ কথা জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা।
গত বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, “কোনো কোনো এয়ারলাইন্স এ উপলক্ষে ভাড়া বাড়িয়ে দিচ্ছে। আমাদের কিছু করার নেই, বাড়ালেও যাতে আনা যায়, আমরা সেই ব্যবস্থা করছি।”
ফ্লাইট সংকটের কারণে আকাশপথে বড় সংখ্যায় প্রবাসীদের আনাও সম্ভব না জানিয়ে তৌহিদ হোসেন বলেন, “সবাইকে আকাশপথে আনা যাবে এই নিশ্চয়তা নাই। কারণ, আমরা দৈনিক ৫০ জনের বেশি সিট পাচ্ছি না। মিডল ইস্ট এয়ার যেটা, বৈরুত থেকে যাবে। আপাতত আমরা চাচ্ছি যে, ৫০ জন করে আসতে থাকুক। প্রায়ই দেখা যায়, যারা রেজিস্ট্রেশন করেন, তারা সবাই আসতে চান না। ২০ তারিখের পর থেকে ৫০/৫২/৫৪ এই রকম করে আসবেন, ডকুমেন্টেড যারা। আপাতত এটা ঠিক হয়েছে।”
সমুদ্রপথে তুরস্ক হয়ে ফেরানোর বিষয়ও ভাবছেন বলে তুলে ধরেন তিনি। “আমরা চিন্তাভাবনা রাখছি যে, যদি প্রয়োজন পড়ে সমুদ্রপথে আমরা মেরসিনে নিয়ে যাব, তুরস্কে। সেখান থেকে হয়ত বিমানের চার্টার্ড ফ্লাইটে বা অন্য কোনো রেগুলার ফ্লাইটে নিয়ে আসব। সেটা অনেক ব্যয়বহুল। তবুও আমরা মানুষের জীবনের প্রশ্নে সেই ব্যবস্থা রাখছি।”