সারাদেশ জুড়ে ‘ব্ল্যাক আউটের’ করার কারণে মামলা, বরখাস্ত আর বদলির শাস্তি পাচ্ছেন বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (বিআরইবি) কর্মকর্তারা। এবার আরও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আরো পাঁচ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (বিআরইবি)। একই সঙ্গে সমিতির তিন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়েছে।
বিআরইবি সূত্রে জানা গেছে, বিদ্যুতের উপকেন্দ্র, ফিডার শাটডাউন ও ফোর্স শাটডাউন করার অভিযোগ এনে এসব কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
গতকাল সোমবার (২১ অক্টোবর) এক অফিস আদেশে এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (বিআরইবি)। সাময়িক বরখাস্ত হওয়া এ কর্মকর্তারা হলেন—কুমিল্লা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১-এর জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার (ওঅ্যান্ডএম) মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম, সহকারী জেনারেল ম্যানেজার (ওঅ্যান্ডএম) ফয়সাল চৌধুরী, তানভীর আহমেদ (অর্থ) সহকারী জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার (ওঅ্যান্ডএম) নূর মোহাম্মদ, মো. মিজানুর রহমান সাগর (প্রশাসন/মানবসম্পদ)। বরখাস্তের চিঠিতে বলা হয়, উপকেন্দ্র বন্ধ, ফিডার শাটডাউন ও ফোর্স-ডাউন দেয়াসহ দাপ্তরিক শৃঙ্খলা পরিপন্থী কাজে যুক্ত থাকায় তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
চাকরিচ্যুতি ও গ্রেফতারের মধ্যে গতকাল পল্লী বিদ্যুতের তিন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে বদলি (স্ট্যান্ড রিলিজ)/পদায়ন করা হয়েছে। এর মধ্যে হবিগঞ্জ পবিসের জেনারেল ম্যানেজার প্রকৌশলী সুজিত কুমার বিশ্বাসকে ভোলা পবিসে, মানিকগঞ্জ পবিসের এজিএম মো. রাজিবুল হাসানকে বিআরইবির বরিশাল জোনের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর কার্যালয়ে এবং ঝালকাঠি পবিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার সুপ্রিয়া সমাদ্দারকে জামালপুর বিআরইবির নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয়ে বদলি করা হয়েছে।
এর আগে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ছয় কর্মকর্তাকে তাৎক্ষণিক বদলি (স্ট্যান্ড রিলিজ) করা হয়। রোববার এক অফিস আদেশে এ সিদ্ধান্তের কথা জানায় বিআরইবি।
গ্রামাঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহে নিয়োজিত পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দুই দফা দাবিতে কয়েক মাস ধরে আন্দোলন করে আসছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত বৃহস্পতিবার সমিতির ২০ কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত করে বিআরইবি। এ ঘটনার প্রতিবাদে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেন সমিতির কর্মচারীরা। এতে জেলায় জেলায় ৩ ঘণ্টা ব্ল্যাকআউট হয়ে যায়।
বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সারা দেশের মানুষ তীব্র ভোগান্তিতে পড়েন। ওইদিন সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলমের আশ্বাসে কর্মসূচি স্থগিত করে বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করেন আন্দোলনকারীরা।
বিআরইবির অধীনে কাজ করে ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি। সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংখ্যা প্রায় ৪৫ হাজার। দেশের মোট বিদ্যুৎ সরবরাহের ৫৫ শতাংশ বিআরইবির অধীন।