অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর নানা বিষয়ে একসময়ের মিত্র জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে কি বিএনপির দূরত্ব তৈরি হয়েছে? এমন প্রশ্নের জবাবে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনায় যুগপৎ আন্দোলনে থাকলেও জামায়াত ও বিএনপির আদর্শগত পার্থক্য রয়েছে। দুইটি দলেরই চিন্তা ও উদ্দেশ্য ভিন্ন।
ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকারকে সময় দেয়াসহ কিছু ইস্যুতে দুইটি দলের বক্তব্যে ভিন্নতা দেখা যাচ্ছে। বিএনপি মহাসচিব বলছেন, অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থন দেয়ার ক্ষেত্রে কোনও দূরত্ব নেই।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, জামায়াত ইসলামী সম্পূর্ণ একটি রাজনৈতিক দল। আমরা আলাদা একটি রাজনৈতিক দল। জামায়াতের চিন্তা, সবকিছু আমাদের থেকে ভিন্ন। তাদের সাথে আমাদের নির্বাচনী জোট হয়েছিল ২০০১ সালের আগে, পরবর্তীকালে গণতন্ত্রকে ফিরে পেতে আমরা একসাথে আন্দোলন করেছি। পরে সেটারও পরিবর্তন হয়, আমরা যুগপৎ আন্দোলনে ছিলাম। অন্তর্বর্তী সরকারকে আমরাও সমর্থন করছি, তারাও সমর্থন করছে; আমি খুব একটা পার্থক্য দেখতে পারছি না।
তার মতে, বিএনপি মানেই প্রগতি। অথচ এই দলটিকেই মৌলবাদী বলে অভিযুক্ত করার চেষ্টা করা হয়েছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, বিএনপি কোনো প্রগতিশীল দল নয়, বিএনপি একটি মৌলবাদী দল, এভাবেই প্রচারণা চালানো হয়েছে। এটা প্রচারের উদ্দেশ্য ছিল, বিএনপিকে একটি ভুল ন্যারেটিভ দিয়ে আধুনিক বিশ্ব থেকে সরিয়ে দেয়া। বিএনপি টোটালি লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি। প্রগতি বলতে যা বুঝায় তা তো বিএনপি। ফ্যাসিবাদের জায়গা বিএনপিতে নেই, স্বৈরচারের জায়গা বিএনপিতে নেই। বিএনপিতে পেছনে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এটি কোনো মৌলবাদী দল নয়।
৫ আগস্টের পর বিএনপির কিছু কিছু নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে দখল, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অভিযোগ ওঠে। তাদেরকে বহিষ্কারসহ শাস্তিমূলক ব্যবস্থাও নিচ্ছে দল। মহাসচিব জানান, যেকোনও অভিযোগের বিষয়েই কঠোর তারা।
এ নিয়ে তিনি বলেন, বিএনপি অত্যন্ত কঠোর। যখনই কোনো অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে, মুহূর্তের মধ্যেই সে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আরও বললেন, একটাই লক্ষ্য গণতন্ত্র পুনরায় প্রতিষ্ঠা করা। প্রয়োজন হলে আবারও রাস্তায় নামবো। আমরা অবশ্যই তাদেরকে (অন্তর্বর্তী সরকার) একটা যৌক্তিক সময় দিতে চাই। রাতারাতি সব তো সম্ভব না।