দুর্নীতি দমন ব্যুরো থেকে ২০০৪ সালে কমিশনে রুপ নেয় দুদক। এর লক্ষ্য ছিল স্বাধীনভাবে দুর্নীতিবাজ, অর্থপাচারকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া। কিন্তু রাজনৈতিক প্রতিপত্তির যাঁতাকলে এই লক্ষ্য বারবারই পিষ্ট হয়েছে। অনেকটা শক্তের ভক্ত ও নরমের যম প্রবাদের বাস্তব রূপ ছিল দুদক।
জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের পর আবারও আলোচনায় আসে স্বাধীন এই কমিশন। দুদকের সংস্কারে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামানকে প্রধান করে একটি কমিশন গঠন করে সরকার। সম্প্রতি আগের পুরো কমিশন পদত্যাগ করলে দুদক পুনর্গঠনে আপিল বিভাগের বিচারপতি রেজাউল হককে সভাপতি করে পাঁচ সদস্যের সার্চ কমিটির প্রজ্ঞাপনও জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। এই কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন হাইকোর্টের বিচারপতি ফারাহ মাহবুব, মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক নূরুল ইসলাম, পিএসপি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোবাশ্বের মোনেম ও সদ্য সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন।
দুদক সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, সংস্থাটিকে রাজনৈতিক প্রভাব ও দুর্নীতিমুক্ত করতে সার্চ কমিটির বড় ভূমিকা থাকবে। এক্ষেত্রে পেশাগত দক্ষতা, সৎ সাহসিকতা ও দলীয় প্রভাবমুক্ত ব্যক্তিকে খুঁজতে হবে। কোনো বিশেষ মহলের প্রতি অনুগত বা ক্ষোভ থাকা ব্যক্তিরা কমিশনে আসলে তারা অভ্যন্তরীণ সংস্কার করতে পারবেন না। কমিশন গঠনে সংস্কার কমিটির সরাসরি কোনো ভূমিকা না থাকলেও সার্চ কমিটি চাইলে নানাভাবে সহযোগিতা করার সুযোগ রয়েছে বলেও জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, দুদকের দুর্বলতার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে প্রসিকিউশন। সংস্থাটির জন্য আলাদা প্রসিকিউশন টিম থাকা জরুরি। প্রসিকিউশনে দলীয় বিবেচনায় আইনজ্ঞদের নিয়োগ দেয়া হতো। এই বিষয়গুলো থেকে উত্তরণে সুপারিশ করবে সংস্কার কমিশন। যেকোনো সরকারের সময় রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো যাতে স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে তা নিশ্চিতে সংস্কার কমিশন বিশেষ গুরুত্ব দেবে বলেও জানান ড. ইফতেখারুজ্জামান।
দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশনে সদস্য হিসেবে রয়েছেন সাবেক কম্পট্রোলার ও অডিটর জেনারেল মাসুদ আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক মোবাশ্বের মোনেম, ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনের সোয়াস অধ্যাপক মোস্তাক খান, ব্যারিস্টার মাহদীন চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ফারজানা শারমিন ও শিক্ষার্থী প্রতিনিধি।