ঢাকা
৫ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
সকাল ৭:৪৩
logo
প্রকাশিত : নভেম্বর ২৩, ২০২৪

টিআর-কাবিখায় মুহিববুরের থাবা, ৪০০ কোটি বরাদ্দের অর্ধেকই পকেটে

হাসিনা সরকারের সর্বশেষ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ছিলেন পটুয়াখালী-৪ (কলাপাড়া-রাঙ্গাবালী) আসনের সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ মহিববুর রহমান মহিব। সময় পেয়েছিলেন মাত্র ছয়-সাত মাস। এ সময়ের মধ্যেই তিনি সরকারি অর্থ লুটপাটে ছিলেন সিদ্ধহস্ত। মন্ত্রণালয়সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের অভিযোগ, গত অর্থবছরে (২০২৩-২৪) টিআর-কাবিখায় অন্তত ৪০০ কোটি টাকার অর্ধেকই ঢুকেছে প্রতিমন্ত্রীর পকেটে।

সব বরাদ্দেই প্রতিমন্ত্রীর ছিল ফিফটি-ফিফটি। তবে প্রতিমন্ত্রীর এমন অনৈতিক কাজে বাধা হয়ে দাঁড়ান ত্রাণসচিব কামরুল হাসান। এ কারণে নিজ দপ্তরে সচিবকে ডেকে জুনিয়রদের সামনেই বকাঝকা করতেও ছাড়েননি। সচিবকে বাদ দিয়ে পছন্দের একজন অতিরিক্ত সচিবকে বেছে নেন প্রতিমন্ত্রী।

যিনি অতীতের কোনো একসময় তার এলাকায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হিসেবে কাজ করেছেন। তখন থেকেই ওই অতিরিক্ত সচিবের সঙ্গে অনৈতিক লেনদেনের সম্পর্ক ছিল মহিববুরের। প্রতিমন্ত্রী হওয়ার পর থেকে ৫ আগস্ট সরকারের পতন পর্যন্ত ওই কয়েক মাস ত্রাণ মন্ত্রণালয় চালাতেন ওই অতিরিক্ত সচিব। যিনি এখনো বহাল তবিয়তে আছেন মন্ত্রণালয়ে।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের অভিযোগ, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের মে মাসে টিআর ও কাবিখা খাতে বরাদ্দের জন্য চাল ও নগদ অর্থ মিলিয়ে ছিল ৩৭৫ কোটি টাকা। এরপর ঘূর্ণিঝড়ের ঘটনায় আরো অন্তত ২৫ কোটি টাকা অতিরিক্ত বরাদ্দ পায় মন্ত্রণালয়। এর অর্ধেকই ঢুকেছে প্রতিমন্ত্রী মহিববুর রহমানের পকেটে। যার একটি বড় অংশ সংশ্লিষ্ট অতিরিক্ত সচিবও পেয়েছেন বলে খবর চাউর আছে। যদিও নীতিমালা অনুযায়ী মন্ত্রণালয় থেকে এ ধরনের বরাদ্দের কোনো সুযোগ নেই।

দালালের মাধ্যমে ইউএনও এবং ডিসি অফিস থেকে প্রকল্প তৈরি করিয়ে এনে নগদ লেনদেনে এসব অর্থের বাটোয়ারা করা হয়। দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় এবং মন্ত্রণালয়সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মধ্যে এ নিয়ে কানাঘুষাও চলে।

অভিযোগ আছে, ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে লুটপাটে মাফিয়া হিসেবে পরিচিত অডিট সেলের একজন ফাইন্যান্স অফিসার (সিভিল রিলিফ)। যিনি এসব লুটপাটের নেপথ্যের নায়ক। সারা দেশের টিআর-কাবিখার দালালদের সঙ্গে এই কর্মকর্তার রয়েছে বিশেষ সম্পর্ক। মূলত তার মাধ্যমেই ওই অতিরিক্ত সচিব বরাদ্দ ও অগ্রিম লেনদেনের বিষয়টি চূড়ান্ত করেন।

আর এসব আলাপ-আলোচনা ও লেনদেন হয় বেইলি রোডের প্রতিমন্ত্রীর বাসায় এবং মহাখালীর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর ভবনে বসে। যাতে মন্ত্রণালয়ের লোকজন না টের পায়। ওই ভবনের বিশেষ একটি কক্ষে বসে পূর্বনির্ধারিত বিভিন্ন প্রকল্পের অনুকূলে বরাদ্দপত্র চূড়ান্ত করা হয়, যেসব প্রকল্পের বিপরীতে অগ্রিম ঘুষও লেনদেন হয়। কোটি টাকা বরাদ্দের জন্য ৫০ লাখ, আর ৫০ লাখ বরাদ্দের জন্য ২৫ লাখ টাকা অগ্রিম দিতে হয়। মোট কথা সরকারি অর্থের এভাবে ফিফটি-ফিফটি ভাগ-বাটোয়ারা হয়।

ভুক্তভোগী কর্মকর্তাদের অনেকে নাম প্রকাশ না করে জানান, ওই অতিরিক্ত সচিব অধিদপ্তর হতে ফাইল পেনড্রাইভে করে মন্ত্রণালয়ে এনে নিজের কম্পিউটারে নিয়ে চূড়ান্ত করতেন। অথচ যেকোনো ফাইলের নোট উপস্থাপন হওয়ার কথা সংশ্লিষ্ট শাখা থেকে। কিন্তু ওই শাখার কর্মকর্তারা এসব ফাইল সম্পর্কে আগে থেকে কিছুই জানতেন না।

তাদের হঠাৎ করে ডেকে পাঠানো হতো ওই অতিরিক্ত সচিবের কক্ষে। কর্মকর্তারা নথিতে সই করতে রাজি না হলে প্রতিমন্ত্রীর নির্দেশের কথা জানানো হতো। বলা হতো নথিতে স্বাক্ষর না করলে শাস্তিমূলক বদলি করা হবে। অনেকে ভয়ে সই করতেন। এভাবেই টিআর-কাবিখার টাকা হরিলুট হতো বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান।

সর্বশেষ
logo
প্রকাশকঃ অধ্যাপক ড. জোবায়ের আলম
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ তাপস রায় সরকার
মোবাইল: +৮৮০ ১৭৩৬ ৭৮৬৯১৫
কার্যালয় : বিটিটিসি বিল্ডিং (লেভেল:০৩), ২৭০/বি, তেজগাঁও (আই/এ), ঢাকা-১২০৮
মোবাইল: +880 2-8878026, +880 1736 786915, +880 1300 126 624
ইমেইল: tbtbangla@gmail.com (online), ads@thebangladeshtoday.com (adv) newsbangla@thebangladeshtoday.com (Print)
বাংলাদেশ টুডে কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বে-আইনী।
Copyright © 2024 The Bangladesh Today. All Rights Reserved.
Host by
linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram