পররাষ্ট্র উপদেষ্টা এম তৌহিদ হোসেন বলেছেন, আমরা কারও জন্য হুমকি নই, কেউ আমাদের জন্য হুমকি হোক, এটা আমরাও চাই না। সব দেশের সঙ্গেই আমরা ভালো সম্পর্ক রক্ষা করতে চাই।
শনিবার নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট হলে এক আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
‘বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক: প্রত্যাশা, প্রতিবন্ধকতা এবং ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক ওই আলোচনা সভার আয়োজন করে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাউথ এশিয়ান ইন্সটিটিউট অব পলিসি অ্যান্ড গভর্নেন্স এবং সমাজ বিজ্ঞান বিভাগ।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা এম তৌহিদ হোসেন।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ৫ আগস্টের আগে ভারতের সঙ্গে এক রকম সম্পর্ক ছিল, এখন আরেক রকম। এই সম্পর্কে অনেক প্রতিবন্ধকতা আছে। পূর্ববর্তী সরকার তাদের (ভারতের) উদ্বেগে যথাসাধ্য চেষ্টা করেছে। আমাদেরও উদ্বেগ ছিল, তবে সেগুলোর বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
তিনি বলেন, আমরা দুই দেশের মধ্যে ভালো সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করতে চাই। তবে আমাদের পানি সমস্যা আছে, সীমান্ত হত্যা আছে। পৃথিবীর অনেক দেশ আছে, সীমান্ত আছে। তবে এমন সীমান্ত হত্যা হয় না। সীমান্তে অপরাধ হতেই পারে। তাই বলে কোনও সীমান্তে গুলি করে মারার কোনও যুক্তি থাকে না।
তিনি আরও বলেন, ভারতীয় মিডিয়া যে ভূমিকা নিয়েছে, সেটা দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কে কোনও সহায়ক নয়। আমাদের সম্পর্কে ভারতীয় মিডিয়া মিথ্যাচার করছে, সেটা আমাদের মিডিয়াকে তুলে ধরতে হবে।
এম তৌহিদ হোসেন বলেন, সবচেয়ে বড় প্রশ্ন জাতীয় ঐক্য। জাতীয় ঐক্য না থাকার কারণেই আমরা পিছিয়ে পড়েছি। আমাদের জাতীয় স্বার্থ থাকলেই জাতীয় ঐক্য থাকতে হবে।
উপদেষ্টা আরও বলেন, আমাদের দেখতে হবে, আমরা আমাদের ঘর ঠিক মতো গোছাচ্ছি কি না। কী করলে আমাদের স্বার্থ রক্ষা হবে, এটা ঠিক করতে হবে। আমাদের মূল উদ্দেশ্য হবে সক্ষমতা বাড়ানো। প্রবাসীদের উদ্দেশ্য আমি বলব, বিদেশে আপনারা স্থানীয় রাজনীতিতে জড়িত হন। ভারতীয়রা জড়িত হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, সে কারণেই ভারতীয় প্রভাব বেশি সেখানে। আমাদেরও এটা করতে হবে।
আলোচনা সভায় প্যানেলিস্ট ছিলেন ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ড. এস এম আসাদুজ্জামান রিপন, সাবেক কূটনীতিক সাকিব আলী, মানারত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আব্দুর রব প্রমুখ।
আলোচনা সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ড. এস এম আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, বাংলাদেশ কোনও সাম্প্রদায়িক দেশ নয়, বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক দেশ কখনওই ছিল না। বাংলাদেশের জনগণই বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।
তিনি বলেন, ভারত কেন আওয়ামী লীগের সঙ্গে থাকে। কারণ, আওয়ামী লীগ ভারতের স্বার্থ রক্ষা করে। বিএনপি জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করেই ভারতসহ অন্যান্য দেশের সঙ্গে সম্পর্ক রাখবে।
ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, বাংলাদেশের লোকদের বাধ্যতামূলক সামরিক প্রশিক্ষণ দিতে হবে। আমি এটা ৫ বছর ধরে বলে আসছি। আমাদের হাজার হাজার লোক আছেন, তারা আমাদের বিনা পয়সায় প্রশিক্ষণ দেবেন।
তিনি বলেন, মিস্টার বিনের সিরিজের মতো হঠাৎ করে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়নি। স্বাধীনতার জন্য আমাদের দীর্ঘ দিনের ইতিহাস আছে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক আবদুল হান্নান চৌধুরী। সভা সঞ্চালনা করেন অধ্যাপক ড. এম জসিম উদ্দিন।