ঢাকা
১৯শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
রাত ১১:২১
logo
প্রকাশিত : ডিসেম্বর ২, ২০২৪

বিমানে শিডিউল বিপর্যয় আবারও ‘নিয়মে’ পরিণত হয়েছে

ক্ষমতার পালাবদলের পরও রাষ্ট্রীয় এয়ারলাইনস বিমানের সেবার মানে উন্নতি হয়নি। বরং অপেশাদারির কারণে যাত্রী ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে। সাম্প্রতিক সময়েও বেশ কয়েকটি ঘটনা বিমানের সেবার মানকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। অকারণে বিলম্বে যাত্রা, লাগেজ পেতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষাসহ বিনা নোটিশে যাত্রী ভোগান্তির সেই পুরনো চিত্র যেন।

ভুক্তভোগীরা তাদের হয়রানি ও ভোগান্তির কথা জানালেও স্বীকার করছে না বিমান কর্তৃপক্ষ।
জানা যায়, গত ১ ডিসেম্বর শনিবার রাতে শতাধিক যাত্রী নিয়ে দুবাই থেকে ছেড়ে আসে বিমানের বিজি-৩৪৮ ফ্লাইটটি। এটি দুবাই থেকে নির্ধারিত সময়ের প্রায় পৌনে দুই ঘণ্টা পর ছাড়ে। দেরিতে ছাড়ার কারণে ঢাকায় বিলম্বে পৌঁছানো ও এয়ারপোর্টে যাত্রীদের লাগেজ না পাওয়া নিয়ে হুলুস্থুল কাণ্ড ঘটে।

বিমানের যাত্রীরা জানান, এমন অব্যবস্থাপনা আর ভোগান্তিতে বিমান বাংলাদেশে ভ্রমণে নিরুৎসাহ হবেন দেশি-বিদেশি যাত্রীরা।
বিজি-৩৪৮ ফ্লাইটের বিজনেস ক্লাসের যাত্রী অরাদ ইসমাম বলেন, ‘বাংলাদেশ বিমানের দুবাই কাউন্টারে যারা আছেন তাদের সংশ্লিষ্ট কাজের কোনো জ্ঞান নেই। এ জন্য ভোগান্তির শুরু হয় একেবারে শুরু থেকে। আমি ও আমার পরিবার দুবাইয়ের রেসিডেন্ট।

আর বাংলাদেশের নাগরিক। এ জন্য বাংলাদেশ অ্যাম্বাসি আমাদের পাসপোর্টে ‘নো ভিসা রিকোয়ার্ড’ সিল মেরে দিয়েছে। এর অর্থ হলো দুবাই এবং বাংলাদেশ ভ্রমণে আমাদের কোনো ভিসা লাগবে না। আমাদের পাসপোর্টের মেয়াদ যত দিন আছে আমরা তত দিন যখন ইচ্ছা দুবাই-বাংলাদেশে ভ্রমণ করতে পারব। অথচ বিমান বাংলাদেশের কাউন্টারে এটা দেখার পরও এত দিন কেন দুবাইয়ে আছি ইত্যাদি প্রশ্ন করছিল।

তাদের দাবি, এক মাসের বেশি থাকার নিয়ম নেই। এসব নানা অপ্রাসঙ্গিক প্রশ্ন করে অকারণে হয়রানি করে। অনেকক্ষণ ধরে তাদের বোঝানোর শেষে ইমিগ্রেশন করার পর বিমানে উঠার জন্য করতে হয় আরেক যুদ্ধ।’

তিনি আরো বলেন, ‘বিশ্বের সব দেশের এয়ারলাইনসে বিজনেস ক্লাসের যাত্রীদের জন্য প্রায়োরিটি বেইজড সুযোগ-সুবিধা থাকলেও বাংলাদেশ বিমানে এটি নেই। কোনো সিকিউরিটি সার্ভিস নেই। দুবাই এয়ারপোর্ট থেকে ফ্লাইটটি রাত ২টা ১০ মিনিটে ছাড়ার কথা থাকলেও প্রায় এক ঘণ্টা ৪৫ মিনিট বিলম্বে ছাড়ে। এদিকে বিমানে উঠার পর দেখি আমাদের সিটগুলো নষ্ট। টিভিগুলো চলে না। বউ-বাচ্চাদের নিয়ে পড়ি বিপদে। বিমানের ভেতরে একেবারে হুলুস্থুল কাণ্ড। কারণ বিজনেস ক্লাসের এমন অবস্থা হলে ইকোনমি ক্লাসের অবস্থা কেমন হবে সেটি সহজেই বোঝা যায়।’

অরাদ ইসমাম জানান, ফ্লাইটটি ঢাকার হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে সাড়ে ৮টায় নামার কথা থাকলেও এসে পৌঁছায় সাড়ে ১০টায়। এরপর দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে ইমিগ্রেশন করেন। অথচ অন্যান্য এয়ারলাইনসে বিজনেস ক্লাসের যাত্রীদের ইমিগ্রেশন, লাগেজ পাওয়াসহ সব আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয় সবার আগে।

তিনি আরো জানান, এই ফ্লাইটের যাত্রীরা সবচেয়ে বড় ধাক্কা খায় বাংলাদেশে ইমিগ্রেশন শেষ করার পর। কারণ ইমিগ্রেশন শেষ করার পর শতাধিক যাত্রীর লাগেজ উধাও হয়ে যায়। সবাই বেল্টের পাশে দাঁড়িয়ে থাকলেও কারো লাগেজ, কারো ব্যাগ, কারো কোনো কিছুই পাওয়া যাচ্ছিল না। এ নিয়ে সেখানে তুলকালাম বেধে যায়। যাত্রীদের চিল্লাচিল্লির প্রায় দুই ঘণ্টা পর লাগেজ বেল্টে তোলা হয়। তিনি নিজেও প্রায় দুই ঘণ্টা বেল্টের পাশে দাঁড়িয়ে থাকার পর লাগেজ পান বলে জানান।

এর আগে গত ২৯ অক্টোবর বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের আবুধাবিগামী একটি বিমানে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে যাত্রীদের ৯ ঘণ্টা ভুগতে হয়েছিল। ওই দিন রাত ৯টা ১০ মিনিটে ঢাকা থেকে আবুধাবির উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল বিজি-১২৮ ফ্লাইটটির। এরপর রাত পৌনে ৩টায় আবার আবুধাবি থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশে আসার কথা ছিল বিমানটির। তবে উড্ডয়নের আগে ডানায় ত্রুটির কারণে প্রায় ৯ ঘণ্টা পর বুধবার (৩০ অক্টোবর) আমিরাতের স্থানীয় সময় ভোর ৬টায় অন্য একটি বিমান আবুধাবি পৌঁছায়। পরে আমিরাতের শেখ জায়েদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সকাল পৌনে ১১টায় ১৪৩ জন যাত্রী নিয়ে ফ্লাইটটি চট্টগ্রামের উদ্দেশে ছেড়ে আসে।

গত ২১ সেপ্টেম্বর যাত্রীদের কাছ থেকে পাঁচবার সময় নিয়ে ছয় ঘণ্টা বসিয়ে রাখার পর মদিনা-ঢাকা ফ্লাইট বাতিল করেছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। ওই দিন বিমানের বিজি-১৩৮ ফ্লাইটটি মদিনার স্থানীয় সময় রাত ১১টা ৩০ মিনিটে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল। অথচ ছয় ঘণ্টা যাত্রীদের বসিয়ে রাখার পর ভোর ৬টা ৩০ মিনিটে ফ্লাইট বাতিলের ঘোষণা দেয় বিমান বাংলাদেশ। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েন ২৭১ আসনের বিমানের ২৫০ যাত্রী।

এর আগে চলতি বছরের ২৪ জুন ঢাকা থেকে আবুধাবিগামী একটি ফ্লাইট আকাশে উড়ার পর উইন্ডশিল্ডে ফাটল দেখা দেয়। ফলে পাঁচ ঘণ্টা পর যাত্রীদের অন্য ফ্লাইটে আবুধাবি পাঠানো হয়।

এসব বিষয়ে জানতে বিমান বাংলাদেশের গ্রাহকসেবা শাখার পরিচালক হায়ত উদ দৌলা খান বলেন, ‘বিজি-৩৪৮ ফ্লাইটের যাত্রীদের ভোগান্তির বিষয়ে আমার জানা নেই। এ বিষয়ে বিস্তারিত জেনে আমি আপনাকে বলতে পারব এমনটি কেন হয়েছে।’

logo
প্রকাশকঃ অধ্যাপক ড. জোবায়ের আলম
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ তাপস রায় সরকার
মোবাইল: +৮৮০ ১৭৩৬ ৭৮৬৯১৫
কার্যালয় : বিটিটিসি বিল্ডিং (লেভেল:০৩), ২৭০/বি, তেজগাঁও (আই/এ), ঢাকা-১২০৮
মোবাইল: +880 2-8878026, +880 1736 786915, +880 1300 126 624
ইমেইল: tbtbangla@gmail.com (online), ads@thebangladeshtoday.com (adv) newsbangla@thebangladeshtoday.com (Print)
বাংলাদেশ টুডে কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বে-আইনী।
Copyright © 2025 The Bangladesh Today. All Rights Reserved.
Host by
linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram