কাপাসিয়া (গাজীপুর) প্রতিনিধি: কদিন আগেও গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলা শহরের দেয়ালগুলো দিকে তাকানো যেত না। রাজনৈতিক ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠারে বিজ্ঞাপনী পোস্টারে ছেয়ে ছিল। এখন দেয়ালজুড়ে নান্দনিকতা।
দেয়ালের সব নোংরা পরিষ্কার করে রংতুলির ছোঁয়ায় নান্দনিকভাবে সাজাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। দলবেঁধে শিক্ষার্থীরা
দেয়ালে দেয়ালে তুলে ধরছেন আন্দোলনের নানা স্মৃতিপট, নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়, অসাম্প্রদায়িক চেনতার বাংলাদেশ। ছাত্র- জনতার আন্দোলনকে ঘিরে রক্তাক্ত জুলাইকে গ্রাফিতির মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে দেয়ালে দেয়ালে।
উপজেলা শহরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ চত্বর, তরগাঁও মেডিকেল মোড়, উপজেলা পরিষদ, সরকারি পাইলট স্কুল, কাপাসিয়া ডিগ্রি কলেজে ঘুরে দেখা গেছে, দেয়ালগুলোর নোংরা পরিষ্কার করে তাতে আঁকা হচ্ছে ছাত্র জনতার আন্দোলনের গৌরবময় নানা গ্রাফিতি। দলবেঁধে দিনভর কাজ করছে শিক্ষার্থীরা। কেউ দেয়ালের পোস্টার তুলে পরিষ্কার করছে, কেউ রং করছে আবার কেউ রং তুলির আঁচড়ে ইতিহাস ও সাহসিকতার নানান স্লোগান লিখছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, শিক্ষার্থীদের রং-তুলির আঁচড়ে করা ক্যালিওগ্রাফি-গ্রাফিতি চোখ আটকে যাচ্ছে শিশু থেকে বয়োবৃদ্ধ সবার। শিক্ষার্থীদের এক হাতে রঙয়ের কোটা, অন্যহাতে তুলি। সকলের চোখে-মুখে উচ্ছ্বাস । অপরিচ্ছন্ন
প্রতিটি দেওয়াল কালো, সাদা, লাল, নীল, হলুদসহ নানা রঙে জল তুলির আঁচড়ে রাঙাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। তাদের কারও হাতে ছিল রঙ-তুলি, আবার কেউ কেউ একে অপরকে পান করাচ্ছেন পানি। অনেকেই আবার দেখিয়ে দিচ্ছেন কোথায় কি রং, কোন ক্যালিওগ্রাফি করবেন।
তাজউদ্দীন আহমদ চত্বরে আরবি ক্যালিওগ্রাফি করছিলেন জামিয়া রহমানিয়া মাদরাসার শিক্ষার্থী সাজিদ আহমদ। তার সঙ্গে ছিলেন সিফাতুল্লাহ ফাহিম ও নাইম হাসান। তারা জানান, দেয়ালগুলো বিভিন্ন পোস্টারে নোংরা ছিল। তারা সম্মিলিত ভাবে তা পরিষ্কার করে তাতে কোরআনের বিভিন্ন আয়াত ও আন্দোলনের নানা স্মৃতিপট রং তুলির মাধ্যমে তুলে ধরছে। তাদের সঙ্গে গ্রাফিতি করছে মাও. আরিফ ও মুহাম্মদ সিয়াম। তাজউদ্দীন আহম্মদ চত্বর ও মেডিকেল মোড়ের কাজ শেষ হয়েছে বলে তারা জানান।
কাপাসিয়া ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী সুমাইয়া জান্নাত বলেন, আমরা যারা এখানে গ্রাফিতি আঁকার কাজ করছি তারা সবাই কলেজের প্রাক্তণ শিক্ষার্থী। আমাদের সঙ্গে বর্তমান শিক্ষার্থীরাও অংশ নিয়েছেন। আমরা বিশ্বাস করি তরুণদের হাত ধরেই বাংলাদেশে নতুন সূর্য উদিত হবে। তাই আমাদের এই আয়োজন ও অংশগ্রহণ।