আগস্টে ফেনীসহ দেশের পূর্বাঞ্চলের ১১টি জেলায় আকস্মিক বন্যায় মোট ১৪ হাজার ২৬৯ কোটি ৬৮ লাখ ৩৩ হাজার টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে এবং এতে প্রাণ হারিয়েছেন ৭৪ জন ও আহত হয়েছে ৬৮ জন। এই বন্যায় কৃষি, বাসস্থান, রাস্তাঘাট ও সামগ্রিক অবকাঠামোর ক্ষতির ওপর ভিত্তি করে আর্থিক ক্ষতির হিসাব তৈরি করা হয়েছে।
বন্যায় সরকারি হিসাবে মারা গেছেন মোট ৭৪ জন, আহত হয়েছেন ৬৪ জন। সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন মোট ৯ লাখ ৪২ হাজার ৮২১ জন। ঘরবাড়ি ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছিলেন ৪৫ লাখ ৫৬ হাজার ১১১ জন।
গতকাল মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে আগস্টের বন্যার এক মাস পর মোট প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতির হিসাব তুলে ধরে এসব তথ্য জানান অন্তর্বর্তী সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম।
বাংলাদেশের উজানে পাহাড়ি ঢল আর অতি ভারী বৃষ্টির কারণে গত ২০ আগস্ট থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে ভয়াবহ বন্যা দেখা দেয়। দ্রুত তা ছড়িয়ে যায় ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সিলেট, লক্ষ্মীপুর ও কক্সবাজারে।
বিভিন্ন মন্ত্রণালয় থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করা হয়েছে জানিয়ে ফারুক-ই-আজম বলেন, ইতোমধ্যে ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন কর্মসূচি শুরু হয়েছে। এজন্য গঠন করা হয়েছে কেন্দ্রীয় কমিটি। জেলা ও উপজেলা কমিটিও গঠিত হবে। কমিটির সদস্যরা পুরো পুনর্বাসন কর্মসূচি তদারকি করবেন।
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সড়কপথের বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, ২ হাজার ২৩৩ কিলোমিটার পাকা সড়ক সম্পূর্ণ এবং ৩ হাজার ৯৮৪ কিলোমিটার সড়ক আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইট-খোয়া দিয়ে নির্মিত ২৯৯ কিলোমিটার সড়ক সম্পূর্ণ এবং ৯৪৯ কিলোমিটার সড়ক আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়া ১ হাজার ১৫২ কিলোমিটার কাঁচা সড়ক সূম্পর্ণ এবং ৮ হাজার ৮৫০ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
উপদেষ্টা জানান, বন্যায় ২৩ কোটি ৬০ লাখ ২৯ হাজার ৭৪০ টাকার ফসল সম্পূর্ণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৭১৮ কোটি ৫৭ লাখ ৫৬ হাজার ৬১০ টাকার ফসল। সম্পূর্ণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত পাকা ঘর, আধা পাকা ঘর ও কাঁচা বাড়ির সংখ্যা ২৮ হাজার ৩৮৬টি। আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১ হাজার ৯৭টি ঘর।