সাতক্ষীরার দ্বীপ ইউনিয়ন পদ্মপুকুরে জন্ম ও বেড়ে ওঠা, ছোট থেকেই প্রতিকূল পরিবেশের সাথে যুদ্ধ শুরু; আইলা, আম্ফান, বুলবুলসহ অসংখ্য ঘূর্ণিঝড়ের সাক্ষী তরুণ জলবায়ু কর্মী এসএম শাহিন আলম। দৌঁড়ে বেড়িয়েছেন উপকূলের একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে।
উপকূলবাসীর দুঃখ-দুর্দশাকে নিজের মনে করেই কাজ করে গেছেন মানুষের কল্যাণে। পরিচিত হয়ে উঠেছেন ‘উপকূল এক্সপ্রেস’ হিসেবে। এবার তিনি যাচ্ছেন কপ-২৯ জলবায়ু সম্মেলনে।
সোমবার (১১ নভেম্বর) আজারবাইজানের রাজধানী বাকুর উদ্দেশ্য ঢাকা ত্যাগ করেছেন শাহিন। সম্মেলনে অংশ নিয়ে তিনি জলবায়ুর বিরূপ প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত সাতক্ষীরা উপকূলের মানুষের কথা তুলে ধরতে চান বলে জানিয়েছেন।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ের ব্যাজ নিয়ে ন্যাচার কনজার্ভেশন ম্যানেজমেন্টের (ন্যাকম) অর্থায়নে কপ-২৯ এ অংশ নিতে যাওয়া শাহিন আলম পরিবেশবাদী সংগঠন ইয়ুথনেট ফর ক্লাইমেট জাস্টিস'র ঢাকা বিভাগীয় সমন্বয়কারী। তিনি গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান ও সমাজকর্ম বিভাগে পড়াশোনা করছেন।
উপকূলের অস্বাভাবিক পরিবেশই নিজেকে একজন জলবায়ু কর্মী হিসেবে গড়ে তুলেছে উল্লেখ করে শাহিন আলম বলেন, ‘এটা উপলব্ধি করতে পারি যে আমরা নিজেরা না দাঁড়ালে কেউ আমাদের পক্ষে লড়বে না।’
তিনি বলেন, ‘এটা শুধু একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশগ্রহণ নয়, বরং দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় এলাকার সংকটের গল্প বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরার একটি বিরাট সুযোগ।’
শাহিন জানান, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সাতক্ষীরা উপকূলীয় অঞ্চল বসবাসের অযোগ্য হয়ে উঠছে। এটা এখন বাঁচা-মরার লড়াই। এই সম্মেলনে বিশ্ব নেতাদের সামনে আমাদের পরিস্থিতির কথা তুলে ধরবো। দাবি একটাই-উন্নত দেশগুলো যেন তাদের অতীতের ভুলগুলোর মাশুল আমাদের উপরে চাপিয়ে না দেয়।’
তার ভাষ্য, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবেলায় স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন, যা উপকূলীয় জনগোষ্ঠীকে আশার আলো দেখাবে। তাঁর প্রত্যাশা, উন্নত দেশগুলো তাদের প্রতিশ্রুত অনুদান এবং সহায়তা নিশ্চিত করবে। একই সাথে উন্নত দেশগুলোকে কার্বন নিঃসরণের হার কমিয়ে শূন্যে আনতে হবে।’
শাহিন আলম পরিবেশ, জলবায়ু ও উপকূল সংক্রান্ত বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও সবসময় সরব। শাহিনের স্বপ্ন উপকূলের শিশুরা জন্মের পর থেকেই যাতে মৌলিক অধিকারের নিশ্চয়তা পায়, উপকূলের মানুষকে যেন আর বাস্তুচ্যূত না হতে হয়।