ঢাকা
১৭ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
বিকাল ৪:৩৪
logo
প্রকাশিত : ডিসেম্বর ৮, ২০২৪

টিসিবির লাইনে মধ্যবিত্তরাও

একসময় টিসিবির ট্রাক ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকত। মাঝেমধ্যে ক্রেতারা এসে ট্রাক থেকে পণ্য ক্রয় করত। সময় বদলেছে। এখন তীর্থের কাকের মতো মানুষ অপেক্ষা করে কখন আসবে টিসিবির ট্রাক। ট্রাক আসার পর হুড়মুড়িয়ে সবাই পণ্য কেনার জন্য ছুটে যান। এ ছুটে চলা যে শুধু নিম্ন-মধ্যবিত্তদের তা নয়। এখন মধ্যবিত্তরাও টিসিবির ট্রাকের পিছনে ছুটছেন। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) নভেম্বর মাসের তথ্যে দেখা যায়, খাদ্য মূল্যস্ফীতি বেড়ে প্রায় ১৪ শতাংশে উঠেছে। যার প্রভাব পড়েছে মধ্যবিত্তদের জীবনযাত্রায়ও। ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) সূত্রে জানা গেছে, রাজধানীর ৫০টি স্থানে ফ্যামিলি কার্ড ছাড়া বিশেষ ট্রাকসেলে পণ্য বিক্রি করে টিসিবি। প্রতিটি ট্রাকে ৩৫০ জনের জন্য পণ্য থাকে। তবে অধিকাংশ জায়গায়ই এর চেয়ে ১০০ থেকে ১৫০ জন বেশি মানুষ উপস্থিত থাকেন। যাদের পণ্য দেওয়া যায় না। তারা দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে ফিরে যান। মানুষের চাপ বাড়ায় গত সপ্তাহ থেকে প্রতি ট্রাকে ৩৫০ এর স্থলে ৪০০ জনে উন্নীত করেছে টিসিবি। এরপরও বিভিন্ন জায়গায় পণ্য না পেয়ে খালি হাতে ফিরে যায় মানুষ। ঢাকা ছাড়াও ঢাকার বাইরে ২০ স্থানে ট্রাকে করে পণ্য বিক্রি হয়ে থাকে। রাজধানীর খিলক্ষেত রেলগেটে গত বৃহস্পতিবার দেখা যায়, টিসিবির পণ্য কিনতে কয়েক শ মানুষ দাঁড়িয়েছেন। তাদের মধ্যে কবির আলম নামে এক দোকানের কর্মচারী বলেন, আগে কখনো টিসিবি থেকে পণ্য কিনি নাই। মানুষ থেকে শুনলাম এখানে কমদামে তেল পাওয়া যায় তাই লাইনে দাঁড়ালাম। তা ছাড়া দোকানে বেশি দাম দিয়েও তেল কিনতে পাচ্ছি না। একটু কষ্ট করে লাইনে দাঁড়িয়ে যদি কম দামে পাওয়া যায় তাহলে তো ভালোই হবে। মনোয়ারা নামে এক নারীকে তার সঙ্গে টিসিবির কার্ড আছে কি না জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, শুনলাম সরকার কার্ডের বাইরেও ক্রেতাদের কাছে পণ্য বিক্রি করে। তাই লাইনে এসে দাঁড়ালাম। মানুষের যে সিরিয়াল পণ্য পাব কি না সেটা নিশ্চিত না।

খিলক্ষেত বাজারে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নিচে আলু-পিঁয়াজ বিক্রি করেন বাদল হোসেন। তিনি বলেন, তার পরিবার টিসিবির ট্রাক থেকে পণ্য কিনে থাকে। তাদের এক পরিবারের চার সদস্যের কার্ড রয়েছে। এক সদস্য গিয়ে চারজনের প্যাকেজ নিয়ে আসে। তেলের কথা জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, কার্ড দেখিয়ে যতবার ইচ্ছা পণ্য নেওয়া যায়। প্যাকেজের চাল খাওয়ার উপযোগী না তাই সে চাল অন্য কারও কাছে বিক্রি করে দেই।

দক্ষিণখান থানার কাছাকাছি টিসিবির পণ্যের অপেক্ষায় থাকা লোকদের দীর্ঘ সারির দেখা মেলে। সেখানে কথা হয় বেসরকারি কোম্পানির অফিস সহায়ক সোহেল মিয়ার সঙ্গে। তিনি বলেন, বেতনে চলে না। রোজই জিনিসপত্রের দাম বাড়ে। এখন আর মানুষের কাছে ধারদেনাও পাওয়া যায় না। আগে চাল, ডাল আর সবজির মধ্যেই খাওয়া সীমাবদ্ধ রেখেছিলাম। এখন সবজির দাম বাড়ছে। আলুর মতো জিনিস বাজার থেকে ৮০ টাকায় কেনা লাগছে। সংসার চালাতে খেই হারিয়ে ফেলছি। নিরুপায় হয়ে টিসিবির লাইনে এসেছি।

তবে টিসিবির ট্রাকের পেছনে এখনো গৃহকর্মী, রিকশাচালক ও দিনমজুরদের উপস্থিতিই বেশি। কার্ডের বাইরে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকেও বর্তমানে টিসিবির ট্রাকের সিরিয়ালে দেখা যাচ্ছে।

টিসিবির মুখপাত্র মো. হুমায়ুন কবির বলেন, টিসিবি বর্তমানে ঢাকায় ৫০ স্থানে এবং ঢাকার বাইরে ২০ স্থানে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। একটি ট্রাকে আগে ৩৫০ মানুষকে পণ্য দেওয়া হতো। গত ১ তারিখ থেকে ৪০০ মানুষকে আমরা পণ্য দিতে পারছি।

তবে মালামাল পর্যাপ্ত থাকলে ভবিষ্যতে আরও বাড়ানোর চিন্তা করা হবে। ৭০টি ট্রাকে প্রতিদিন ৪০০ জন করে পণ্য পাচ্ছে। আলু বর্তমানে দেওয়া হচ্ছে না। বর্ডার খুললে তখন দেওয়া হবে। খাদ্য অধিদপ্তর থেকে চাল সরবরাহ না করার কারণে চাল আপতত বন্ধ আছে। এখন তেল এবং ডাল দেওয়া হচ্ছে। এ দুটি পণ্য নিতে একজন গ্রাহককে ৩২০ টাকা করে দিতে হয়।

logo
প্রকাশকঃ অধ্যাপক ড. জোবায়ের আলম
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ তাপস রায় সরকার
মোবাইল: +৮৮০ ১৭৩৬ ৭৮৬৯১৫
কার্যালয় : বিটিটিসি বিল্ডিং (লেভেল:০৩), ২৭০/বি, তেজগাঁও (আই/এ), ঢাকা-১২০৮
মোবাইল: +880 2-8878026, +880 1736 786915, +880 1300 126 624
ইমেইল: tbtbangla@gmail.com (online), ads@thebangladeshtoday.com (adv) newsbangla@thebangladeshtoday.com (Print)
বাংলাদেশ টুডে কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বে-আইনী।
Copyright © 2025 The Bangladesh Today. All Rights Reserved.
Host by
linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram