ঢাকা
৬ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
রাত ১:২০
logo
প্রকাশিত : জুলাই ১০, ২০২৪

আটা খেয়ে দিন যাচ্ছে আনোয়ারা-জাহিদুল দম্পতির

সুজন মাহমুদ, রাজীবপুর (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি: কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার যাদুর চর ইউনিয়নের ধোনার চর মাঠ পাড়া এলাকার আনোয়ারা বেগম (৬৫) ও জাহিদুল ইসলাম (৮০) দম্পতি, থাকেন টিন ও পাঠ খড়ির বেড়া দেওয়া একটি ঘরে। পাঠ খড়ির বেড়ার অনেকাংশেই ভাঙ্গাচোরা। ঘরের এপাশ থেকে কুকুর-বিড়াল ঢুকে বের হয়ে যায় অন্য পাশ দিয়ে। ঘরের ভিতর টাও বেশ জরাজীর্ণ। দেখে বোঝার উপায় নেই সেখানে দু'জন মানুষের বসবাস। বাড়ির টয়লেটটিও রয়েছে অস্বাস্থ্যকর। এসময়ে সরকারি দেওয়া পাকা টয়লেট থাকার কথা তাদের, কিন্তু সেটিও নেই। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশেই এ দম্পতির বসবাস। শুধু তাই নয় মাসের প্রায় সময় ভাত না পেয়ে খান রুটি।

গতকাল মঙ্গলবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে এমন পরিবেশে থাকেন এ দম্পতি। কথা হয় আনোয়ারা-জাহিদুল দম্পতির সঙ্গে। তারা জানান, আমরা গরীব মানুষ। টাকা পয়সা নাই। ছেলে ঢাকায় একটি কনস্ট্রাকশন সাইডে পানি দেওয়ার কাজ করেন। বেতন পান ১২ হাজার টাকা। বাড়িতে প্রতিমাসে পাঁচ হাজার টাকা পাঠান। পাঁচ হাজারের মধ্যে চার হাজার টাকা একটি কিস্তি পরিশোধ করতে হয়। বাকী এক হাজার টাকা দিয়ে কারেন্ট বিল ও ঔষধ কিনতে খরচ হয়ে যায়।

এ দম্পতি আরও জানান, মেয়ের জামাই জয়ের আলী নিজের ফলানো গম ভাঙিয়ে আটা করে দিয়ে যান সেগুলো রুটি বানিয়ে খেয়েই দিন যায় তাদের। ভাত না পেয়ে সব সময় রুটি আর খেতে পারেন না বলেও জানান এ দম্পতি। গতকাল সরেজমিনে থাকা অবস্থায় দেখা গেছে, প্রতিদিনের মতো গতকালও তারা স্থানীয় এক শিক্ষার্থীর দেওয়া শুকনো খাবার খেয়ে ছিলেন সারাদিন। কথা হয় শ্রাবণী ইসলাম নামের ওই শিক্ষার্থীর সঙ্গে তিনি বলেন, আমি সোমবার এসে এ এলাকায় ২৫ প্যাকেট শুকনো খাবার দিয়েছি। তাদেরও দিয়েছিলাম। আজ এসে শুনি তারা সেই শুকনো খাবার খেয়েই সারাদিন পার করছে।

প্রতিবেশী নূরভানু, আনোয়ারা ও বুলবুলি খাতুন বলেন, বুড়া-বুড়ি দুইজন মানুষ ঠিক মতো খাবার পায় না। একটা ছেলে সে মাত্র পাঁচ হাজার টাকা পাঠায় এর মধ্যে প্রায় সব টাকা কিস্তি দিয়েই শেষ হয়। তারা অভিযোগ করে বলেন, এই এলাকার মেম্বার চেয়ারম্যান কোনো দিন আমাদের খোঁজ খবর নেয় না। শুধু ওই নির্বাচন যখন আসে তখন এসে ভোট চেয়ে যায়। তাছাড়া তাদের দেখা আর পাওয়া যায় না।

তবে আনোয়ারা জাহিদুল দম্পতির না খেয়ে থাকা এবং রুটি খেয়ে দিন পার করার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেন যাদুর চর ইউপি চেয়ারম্যান সরবেশ আলী। তিনি বলেন, কই আমরা তো গিয়েছিলাম তারা না খেয়ে নাই। তার বরাদ্দকৃত জিআর এর ১১ মেট্রিকটন চালের মধ্যে তাদের জন্য কি কোন চাল ছিলো না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ১১ মেট্রিকটন কে বলেছে। আমি বরাদ্দ পেয়েছি মোট ৮ টন। তিনি আরও জানান, আজকে ওই এলাকায় ২০ পরিবার কে চাল দেওয়া হবে।

এ বিষয়ে রৌমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাহিদ হাসনান খান বলেন, তাদের নাম ঠিকানা পাঠান আমি ব্যবস্থা নিচ্ছি।

কথা হয় কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক (ডিসি) সাইদুল আরিফ এর সঙ্গে তিনি বলেন, তাদের কথা শুনে আমি ইতিমধ্যে খাবারের ব্যবস্থা করেছি। আমরা প্রতিমাসে তাদের খাবারের ব্যবস্থা করবো।এবং তাদের যে ঋণ রয়েছে সেটি পরিশোধ করবেন বলেও জানান জেলা প্রশাসক।

সর্বশেষ
logo
প্রকাশকঃ অধ্যাপক ড. জোবায়ের আলম
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ তাপস রায় সরকার
মোবাইল: +৮৮০ ১৭৩৬ ৭৮৬৯১৫
কার্যালয় : বিটিটিসি বিল্ডিং (লেভেল:০৩), ২৭০/বি, তেজগাঁও (আই/এ), ঢাকা-১২০৮
মোবাইল: +880 2-8878026, +880 1736 786915, +880 1300 126 624
ইমেইল: tbtbangla@gmail.com (online), ads@thebangladeshtoday.com (adv) newsbangla@thebangladeshtoday.com (Print)
বাংলাদেশ টুডে কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বে-আইনী।
Copyright © 2024 The Bangladesh Today. All Rights Reserved.
Host by
linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram