সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে গ্রেপ্তার ১৭ জনের মধ্যে দুই সহোদর মো. সাখাওয়াত হোসেন (৩৪) ও সাইম হোসেন (২০)। তারা ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার ইচাইল গ্রামের মো. সাহেদ আলীর ছেলে।
বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) তাদের গ্রামে যান এই প্রতিবেদক। তবে, দীর্ঘদিন ঢাকায় বসবাস করায় এলাকাবাসী তাদের সম্পর্কে তেমন কিছু জানেন না। কিন্তু, দুই ভাইয়ের গ্রেপ্তারের খবরে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
সাখাওয়াত ও সাইমের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, একটি পুরোনো আধাপাকা ঘর আছে। তবে, এখনও সম্পন্ন হয়নি ঘরের প্লাস্টার। এই বাড়িতে তাদের পরিবারের কেউ থাকে না। সেখানে পাওয়া যায় তাদের ফুফু জমেলা খাতুনকে।
জমেলা খাতুন জানান, সাখাওয়াত ও সাইমের মা কিশোয়ারা বেগম ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে প্রায় ১২ বছর আগে মারা গেছেন। ওরা দুই ভাই ও দুই বোন। এর মধ্যে, এক বোন ঢাকায় একটি ব্যাংকে চাকরি করে। আর ছোট বোন ময়মনসিংহের একটি বেসরকারি নার্সিং কলেজে লেখাপড়া করে। আর শাখাওয়াতের বাবা সাহেদ আলী ময়মনসিংহের দিঘারকান্দা বাইপাস এলাকায় ওয়েল্ডিং মিস্ত্রি হিসেবে কাজ করেন।
ইচাইল গ্রামের আজিজুল নামে এক ব্যক্তি বলেন, সাখাওয়াত ও সাইম দীর্ঘদিন ধরে ঢাকায় থাকে। শুনেছি, তারা ব্যাটারির ব্যবসা করে। আয়-রোজগারও ভালো। মাঝেমধ্যে প্রাইভেটকার নিয়ে দুই ভাই এলাকায় আসত।
রফিক মিয়া নামে আরেকজন বলেন, প্রশ্নফাঁসে দুই ভাইয়ের গ্রেপ্তারের খবরে অবাক লাগছে। এরা এসব করত! এদের বাবা এখনো ওয়েল্ডিং মিস্ত্রি।
সাখাওয়াতের মামাতো ভাই মাজহারুল ইসলাম বলেন, সাখাওয়াত ঢাকার রাজারবাগ এলাকায় থেকে ব্যবসা করতেন। পরে সাইমও একই কাজে যুক্ত হন। সর্বশেষ রোজার ঈদে তারা বাড়িতে এসেছিল।
সাখাওয়াত ও সাইমের বাবা সাহেদ আলী বলেন, আমার স্ত্রী মারা যাওয়ার পর দুই ছেলেকে তাদের মামা ঢাকায় নিয়ে যায়। সেখানে ছেলেরা ব্যবসা করছে। সম্প্রতি ব্যবসার জন্য বাড়ি থেকে জমি বিক্রি করে টাকা নিয়ে গেছে।
প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় দুই ছেলের গ্রেপ্তারের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এগুলো মিথ্যা। আমার ছেলেরা এসবের সঙ্গে জড়িত না। ষড়যন্ত্র করে আমার ছেলেদের ফাঁসানো হচ্ছে।
দুই ভাইয়ের প্রাইভেটকারে চলাফেরার বিষয়ে জানতে চাইলে সাহেদ আলী বলেন, ব্যবসার টাকা দিয়েই দুই বছর আগে ওরা একটি প্রাইভেটকার কিনেছে।