মিজানুর রহমান নয়ন, কুমারখালী (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি: কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালীন সময়ে কুষ্টিয়ার কুমারখালীর নিহত তিনজনের স্বজনদের আর্থিক অনুদানের চেক প্রদান করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১ আগষ্ট) বিকেলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে স্বজনদের হাতে চেক তুলে দেন জেলা প্রশাসক মো. এহেতেশাম রেজা। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় প্রত্যেককে ২৫ হাজার করে মোট ৭৫ হাজার টাকার চেক প্রদান করা হয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম সিকাইল ইসলাম, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আমিরুল আরাফাত, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সাইদুর রহমান, শিলাইদহ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গাজী হাসান তারেক বিপ্লব, জগন্নাথপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল বাকী বিশ্বাস, নিহতদের স্বজন, সাংবাদিক প্রমূখ।
নিহতরা হলেন - উপজেলার শিলাইদহ ইউনিয়নের কসবা গ্রামের ইজারুল হকের ছেলে আলমগীর শেখ (৩৬)। তিনি ঢাকার রামপুরা এলাকায় হেলথকেয়ার ফার্মাসিটিক্যালের গাড়ি চালক ছিলেন। ১৯ জুলাই দুপুরে পুলিশের গুলিতে আহত আন্দোলনকারীদের পানি পান করাতে গিয়ে তিনি গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। ২০ জুলাই তার লাশ গ্রামের সামাজিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। পরিবারে তাঁর বাবাসহ বয়োজ্যেষ্ঠ মা আলেয়া খাতুন, স্ত্রী রিমা খাতুন (৩০), মেয়ে তুলি খাতুন (১১), ছেলে আব্দুল আওলাদ (৭) ও ছোট ভাই আজাদ হক (১৮) রয়েছেন।
অপর দুজন হলেন- উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের চর ভবানীপুর গ্রামের মৃত সাবের আলীর ছেলে আব্দুস সালাম (২৪) ও ওহাব মন্ডলের ছেলে সেলিম মন্ডল (২৮)। তারা নারায়নগঞ্জ চিটাগাং রোড এলাকার একটি বহুতল ভবনে ডাচ বাংলা ব্যাংকে সাজসজ্জার কাজ করছিলেন। ২০ জুলাই বিকেলে ওই ভবনে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। আগুনে পুড়ে তারা নিহত হন। গত ২৩ জুলাই তাঁদের সন্ধায় তাদের লাশ গ্রামে আনা হয় এবং রাতেই সামাজিক কবরস্থানে লাশ দাফন করা হয়।
সালামেরপরিবারে স্ত্রী মারিয়া খাতুন (২০), দেড় বছর বয়সি সন্তান মাহিম, বড় ভাই আলামিন (২৫) ও মা বুলজান খাতুন। আলামিন রাজবাড়ী জেলার পাংশা সরকারি কলেজের অনার্স (বাংলা) তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। আর সেলিমের পরিবারে স্ত্রী শোভা খাতুন, মেয়ে হুরাইয়া (৩), বাবা ও মা রয়েছে।
জেলা প্রশাসক মো. এহেতেশাম রেজা দুঃখ প্রকাশ করে জানান, যেকোনো মৃত্যুর ক্ষতিপূরণ কোনোভাবেই পূরণ করা সম্ভব নয়। তবুও স্বজনদের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে প্রত্যেককে ২৫ হাজার করে মোট ৭৫ হাজার টাকার চেক প্রদান করা হয়েছে। নিহতদের পরিবারের স্বজনরা সরকারি যেকোনো সুযোগ সুবিধায় অগ্রাধিকার পাবেন।