চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি: দেশের চলমান পরিস্থিতিতে চাঁপাইনবাবগঞ্জে সীমান্তে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-বিজিবির সদস্যরা। সীমান্তে অতিরিক্ত বিজিবি মোতায়েতনসহ বাড়ানো হয়েছে টহল। তবে, সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে আজ বৃহস্পতিবার ভারতীয় পণ্যভর্তি ট্রাক প্রবেশ করেছে এবং বন্দরে স্বাভাবিক কার্যক্রম রয়েছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে দায়িত্বরত ৫৩ বিজিবির অধিনায়ক লেফট্যানেন্ট কর্নেল মনির উজ জামান ও ৫৯ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফট্যানেন্ট কর্নেল গোলাম কিবরিয়া এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এছাড়া জেলার সোনামসজিদ ইমিগ্রেশন চেকপোস্টেও বাড়ানো হয়েছে নজরদারি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, সরকারের পতনের পর শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তা, রাজনৈতিক নেতা বা সরকার সংশ্লিষ্টরা সীমান্ত অতিক্রম করে পালিয়ে যেতে পারে এমন আশঙ্কা রয়েছে। পাশাপাশি ভারত থেকেও বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করতে পারে দুস্কৃতিকারীরা। এসব বিষয় মাথায় রেখেই সীমান্তে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি’র সদস্যরা। আগের চেয়ে সীমান্ত এলাকায় বিজিবির সদস্য সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। সীমান্ত এলাকায় কাউকে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। সীমান্ত এলাকায় সড়কগুলোতে চলাচলের ক্ষেত্রে বিজিবির জিজ্ঞাসাবাদের মুখে পড়তে হচ্ছে মানুষকে। একইভাবে দিনের চেয়ে রাতের নিরাপত্তা ব্যবস্থা অধিকতর জোরদার করা হয়েছে।
৫৩ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফট্যানেন্ট কর্নেল মনির উজ জামান বলেন, ‘বিজিবি’র সদর দপ্তর থেকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই অনুযায়ী আমাদের দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থা নিশ্চিত করেছি। কেউ যাতে অবৈধপথে ভারত যেতে না পারে বা আসতেও না পারে সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রয়েছে। এছাড়া নদীপথের সীমান্ত এলাকাগুলিতে বোর্ড পেট্রোলিং করা হচ্ছে।
৫৯ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফট্যানেন্ট কর্নেল গোলাম কিবরিয়া বলেন, ‘আমাদের নিয়মিত যে টহল ছিল সেখানে জনবল বৃদ্ধি করা হয়েছে। আগে যেখানে ৪ জন ছিল সেখানে ৬ জন করা হয়েছে। ৬ জনের জায়গায় ১০ জন দায়িত্ব পালন করছে। যে সব পয়েন্ট দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ আছে সে সব পয়েন্টে সেখানেও অতিরিক্ত জনবল দিয়ে নজরদারি করা হচ্ছে। বলা যায় সীমান্তে স্মরণকালের সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে বিজিবি।’
এদিকে, জেলার সোনামসজিদ ইমিগ্রেশন চেকপোস্টেও বাড়তি সতকর্তা দেখানো হচ্ছে। পাসপোর্টধারী যাত্রীদের অধিকতর যাচাই-বাচাই শেষে অনুমতি দেওয়া হচ্ছে ভারতে যাওয়ার।
মঙ্গলবার(৬ আগষ্ট) ভারত পালিয়ে যাওয়ার সময় ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে আটক করা হয় রাজশাহী সিটি করপোরেশনের হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা নিজামুল হোদাকে। এরপর থেকে সতর্কাবস্থায় ইমিগ্রেশনসহ বিজিবি সদস্যরা।
সোনামসজিদ ইমিগ্রেশন পুলিশের ইনচার্জ জাফর ইকবাল জানান, সরকারের পতনের দিনই তাদেরকে বিভিন্ন নির্দেশনা দেওয়া হয় ঊর্ধতন কর্মকর্তাদের তরফ থেকে। সেখানে বলা হয়, রাজনৈতিক নেতা বা সরকারের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তারা এনওসি (অনাপত্তিপত্র) ছাড়া ভারতে যেতে পারবেন না। নির্দেশনা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
জাফর ইকবাল বলেন, ‘ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। কোন দূরভিসন্ধি নিয়ে কেউ ইমিগ্রেশন অতিক্রম করতে পারবে না।
বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৫৩ ও ৫৯ বিজিবির অধীনে ভারতের সাথে ১২৯ কিলোমিটারব্যাপী সীমান্ত রয়েছে যেখানে ৫০ কিলোমিটার সীমান্ত অরক্ষিত(নদীপথ ও কাঁটাতারের বেড়া ছাড়া) রয়েছে।