চিলমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি: কুড়িগ্রামের চিলমারী পাত্রখাতা এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের বরোপিটে(নালা) মৎস্য দপ্তর থেকে পোনামাছ ছেড়ে দেয়ায় সেখানে এলাকাবাসীকে নামতে না দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় মৎস দপ্তরের যোগসাজসে সমিতির নাম করে গুটিকয়েক প্রভাবশালী ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরে মৎস্য চাষের নামে ভোগ-দখল করে আসছে ওই বরোপিট(নালা)টি। ফলে স্থানীয় হতদরিদ্র ও মৎস্যজীবী শ্রেণির মানুষ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নালার সরকারী মাছ ধরা থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছে।
জানা গেছে, উপজেলার রমনা ইউনিয়নের পাত্রখাতা এলাকায় কাশেম মেম্বারের বাড়ী সংলগ্ন কাঠের ব্রীজ হতে দক্ষিণ-পূর্ব পাশ্বে স্লুইসগেট পর্যন্ত বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড(বাপাউবো)’র বরোপিটে(নালা) মৎস্য দপ্তর থেকে ২০০কেজি পোনামাছ অবমুক্ত করা হয়। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে পোনামাছ অবমুক্তকরণ কর্মসূচীতে উপজেলায় মোট ২৫৮কেজি জীবন্ত পোনামাছ অবমুক্ত করার বরাদ্দ হয়। সেখানে মৎস্য দপ্তর কর্তৃক ওই একটি স্থানে ২০০কেজি পোনামাছ অবমুক্ত করাকে সন্দেহের দৃষ্টিতে দেখছেন এলাকার সচেতন মহল। সরকারীভাবে পোনামাছ অবমুক্ত করা এবং স্থানীয় মৎস দপ্তরের যোগসাজসে সমিতির নাম করে গুটিকয়েক প্রভাবশালী ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরে স্থানটির মাছ ভোগ-দখল করে আসছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ফলে স্থানীয় হতদরিদ্র ও মৎস্যজীবী শ্রেণির মানুষ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নালার সরকারী মাছ ধরা থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছে বলে জানা যায়।
বুধবার সরেজমিনে পাত্রখাতা এলাকায় দেখা যায়, কাঠের ব্রীজ সংলগ্ন ওই বরোপিটের(নালা)অন্তত প্রায় ১কি.মি. এলাকাজুড়ে দুই পার্শ্বে বানা এবং নেট দিয়ে বেরিগেট সৃষ্টি করে মাঝখানে কয়েক স্থানে খুটির সাথে লাল পতাকা সাটানো হয়েছে। এসময় সায়িদা খাতুন নামের এক নারী অভিযোগ করে বলেন, আমার স্বামী নালায় ও খালে-বিলে মাছ ধরে বিক্রি করেন। তাই দিয়ে আমাদের সংসার চলে। বর্তমানে নালায় সরকারী মাছ ছেড়ে দেওয়ায় আর আমাদের নামতে দেয় না। হাফেজ ফরহান বলেন, মাছ ছেড়ে দেয়ার পর মানুষকে গোসল করার জন্যও পানিতে নামতে দেয় না তারা।
স্থানীয় নুর মোহাম্মদ, সামিউল ইসলাম, কুরবান আলী, সাহেবুল ইসলাম, রমজান আলী, রহম আলী, হাসেন আলী, জবেদ আলী, সাহেরা বেগমসহ অনেকে জানান, নালাটি ডেকে নেয়ার নাম করে প্রভাবশালীরা কমিটি বানিয়ে মৎস্য অফিসারের যোগসাজসে সরকারী ও প্রাকৃতিক মাছ ভোগ দখল করছে। আমরা গরীব মানুষ সেখানে দুটা মাছও ধরতে পারি না। দুই পার্শ্বে বেরা দিয়ে লাল পতাকা দেয়ার কথাও জানান তারা।
ওই বরোপিটের মৎস্য উন্নয়ন কমিটির অর্থ সম্পাদক হাফেজ ওমর ফারুক বলেন, এখানে শরীফেরহাট এলাকার ইউসুফ আলীকে সভাপতি করে ১২২জনের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির সদস্যদের চাঁদা দিয়ে মাছের খাবারসহ বিভিন্ন ব্যয় নির্বাহ করা হয়। মৎস্য অফিসের সাথে যোগাযোগ করে ২০০কেজি পোনামাছ অবমুক্ত করে নেয়া হয়েছে। মৎস্য কর্মকর্তার পরামর্শে ওই কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিতে সকলকে আসতে বলা হয়েছিল। যারা আসে নাই তারা বাদ পড়েছে।
উপজেলা মৎস্য অফিসার মো.বদরুজ্জামান রানা বলেন, ওই এলাকায় সরকারীভাবে ২০০কেজি পোনামাছ অবমুক্ত করা হয়েছে। নালায় বেরিগেট দিয়ে আটকানোর কোন নিয়ম নেই। তবে ওই এলাকার সুবিধাভোগী ১২২জনের নামের একটি তালিকা অফিসে জমা হয়েছে।