মোঃ ইব্রাহীম মিঞা, বিরামপুর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি: দিনাজপুরের বিরামপুরে আগাম শীতের সবজি চাষে কৃষকের ব্যস্ততা। কেউ জমি চাষ করছেন, কেউবা শীতের আগাম সবজির বীজ ছিটাচ্ছেন, সবজি চাষে ব্যবহৃত বাঁশের মাচা তৈরিসহ কেউবা নিড়ানি বা সেচের পানি দিচ্ছেন খেতের জমিতে। কে আগে শীতের আগাম সবজি বাজারে নিতে পারবেন সে নিয়ে প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে দিনাজপুর জেলার বিরামপুর উপজেলায়। পৌরসভাসহ ছোট যমুনা নদীর পাড়ের মুকুন্দপুর, কাটলা, জোতবানী, পলিপ্রয়াগপুরসহ ইউনিয়নগুলোতে শুরু হয়েছে সবজি চাষের ব্যস্ততা। এরমধ্যে সবচেয়ে আগে সবজি বাজারে তোলেন পৌরশহরের মাহমুদসরের আঃ কাদেরসহ ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের কৃষকরা।
শীতকালীন মূলা, ফুলকপি, বাঁধাকপি, সিম, টমেটো, লালশাক, পালংশাক, পুঁইশাক উল্লেখিত এলাকার কৃষকরা আগেই বাজারে তোলেন।
বিরামপুর উপজেলা অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম ইলিয়াস জানায়, বিরামপুর উপজেলায় প্রতি বছর শীতকালীন সবজির ভালো ফলন হয়। এসব সবজি স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠানো হয়ে থাকে। এ বছর উপজেলায় ১ হাজার ২৯০ হেক্টর জমিতে শীতকালীন আগাম সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। যার উৎপাদন হবে আনুমানিক ৩২ হাজার ২৫০ টন।
বিরামপুর উপজেলার পৌরশহরের দয়েরপাড় গ্রামের কৃষক রশিদুল ইসলাম প্রতি বছর আগাম সবজি চাষ করেন। এবার দুই বিঘা জমিতে তিনি আগাম ফুলকপি লাগিয়েছেন। তিনি বলেন, আগাম সবজি চাষ কষ্টসাধ্য হলেও দ্বিগুণ লাভ হয়। এবার ৪-৬ টাকা দরে চারা কিনে রোপণ করেছি। প্রতি বিঘা জমিতে সবজি চাষের জন্য খরচ হয় ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা। প্রতি বিঘায় সবজি চাষের খরচ সমূহ বাদ দিয়ে ৮০-১ লক্ষ ২০ হাজার টাকার সবজি বিক্রি করে থাকেন।
উপজেলার মুকুন্দপুর ইউনিয়নের ভেলার পাড়া গ্রামের মিলন ইসলাম জানান, তিনি প্রত্যেক শীতে তিনবার সবজি চাষ করেন। ইতোমধ্যে দেড় বিঘা জমিতে ১০ হাজার ৫০০ পিস আগাম বাঁধাকপি চাষ করছেন। এতে তার খরচ হবে প্রায় ৩৫ হাজার থেকে ৪০ হাজার টাকা যা বিক্রি করবেন ১ থেকে দেড় লক্ষ টাকায়। শীতকালীন সবজি চাষে প্রতি বছরই সফল হয়েছেন তিনি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কমল কৃষ্ণ রায় বলেন, অনেক কৃষক বেশি লাভের আশায় আগাম সবজির চাষ করেন। এ বছরও লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী আগাম সবজির চাষ করেছেন কৃষকরা। যা বাজারে উঠতে শুরু করেছে। এতে ভালো পয়সা পাচ্ছেন তারা। মাঠ পর্যায়ে কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক তাদের পাশে আছেন এবং প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছেন।