উত্তম গোলদার, মির্জাগঞ্জ (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি: পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলায় ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়েই চলেছে। রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকায় বেড সংকুলন হচ্ছে না উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। হাসপাতালের বারান্দা ও সিঁড়ির পাশে শুয়ে থেকে ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসা নিতে দেখা গেছে। ডেঙ্গু রোগীদের মশারী টানিয়ে থাকতে বলা হলেও হাসপাতালের বারান্দায় ও মেঝেতে থাকায় তারা মশারী টানাতেও পারেন না। তাই কয়েল জ্বালিয়ে থাকতে হচ্ছে রোগী ও সাথে থাকা স্বজনদের। কোন রকমে স্যালাইন ঝুলিয়ে বিছানা পেতে নিচ্ছেন চিকিৎসা। ফলে সৃষ্টি হয়েছে শয্যা সংকট। তবে অনেকেই আবার বাড়িতে বসে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তবে উপজেলায় ইদানীং সাপে কাটা রোগীর সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে।
মির্জাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে পাওয়া তথ্যে জানা গেছে, গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২৬ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি আছেন। গত ২৪ ঘন্টায় ৯ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন। দিন দিন রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স-এ ৫০ শয্যা হাসপাতালে বর্তমানে ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ১০১ জন। তবে এখন পর্যন্ত কোন মৃত্যু নেই, সবাই সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরছেন বলে জানান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা। বর্তমানে রোগীদের চাপ সামলাতে হিমসিম খেতে হচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে উপজেলার চরখালী গ্রামের এক ব্যক্তি বলেন, বুধবার রাত দশটার দিকে শিশু পুত্র ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন এবং এসে কোন শয্যা পাননি। হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা বেশি তাই বাধ্য হয়ে বারান্দায় থাকতে হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, ডেঙ্গু রোগীর জন্য আরও কয়েকটি ওয়ার্ড এবং শিশুদের জন্য আলাদা ওয়ার্ড তৈরি করা হলে ভালো হতো। হাসপাতালের বিভিন্ন স্থানে আলাদাভাবে রোগী থাকায় চিকিৎসা নিতেও সমস্যা হচ্ছে। বারবার লোডশেডিং, তাছাড়া মশা ও গরমে রোগীরা অতিষ্ঠ অবস্থায় রয়েছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ তেন মং বলেন, হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর চাপ এতটাই বেড়েছে যে, অন্য রোগীদের ভর্তি রাখা কষ্টসাধ্যে হয়ে পড়েছে। ডেঙ্গু রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন নার্স ও চিকিৎসকরা। তিনি আরো বলেন, ডেঙ্গু রোগী যদি এই হারে বাড়তে থাকে তাহলে স্যালাইনেরসহ ওষুধের সংকট দেখা দিতে পারে। আমরা কোন রোগীকে ফেরত দিচ্ছি না, তবে মেঝেতে, সিঁড়ির পাশেও রোগীগুলোকে রেখে চিকিৎসা দিতে হচ্ছে। এ বিষয়ে উপজেলা পরিষদ মিটিংয়ে আলোচনা করা হয়েছে এবং ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সকল পদক্ষেপ নেওয়া হবে। ইদানীং উপজেলায় সাপে কাটা রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে। তাই সবাকে সতর্ক থাকতে হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ তরিকুল ইসলাম বলেন, উপজেলায় ডেঙ্গু রোগীদের সংখ্যা বাড়ছে। এ লক্ষ্যে জনসচেতনতা বৃদ্ধি ও উপজেলার বিভিন্ন পয়েন্টে মশা নিধনের জন্য ফগার মেশিন সরবরাহ করতে দেয়া হয়েছে। যা শনিবার থেকে কাজ শুরু করা হবে। আমাদের ইউনিয়ন কমিটিগুলো এ নিয়ে কাজ করবে।