মাঈন উদ্দিন সরকার রয়েল, কেন্দুয়া প্রতিনিধি: কেন্দুয়া উপজেলার চিরাং ইউনিয়নের সাজিউড়া বাজার হতে গোগবাজার সড়কের তেতুলিয়াস্থ ১৫৬ মি: চেইনেজে মাত্র ১৬ মি: দীর্ঘ আরসিসি গার্ডারের একটি ব্রীজ নির্মাণের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও পাইল-বোরিং প্রতিবন্ধকতায় এখন পর্যন্ত কাজই শুরু করতে পারেনি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।
পুরাতন ব্রীজটা ভেঙ্গে বাঁশের মাছা (পাটাতন) করে দেওয়া হলেও কয়েক মাসেই অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে এটি। রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, নতুন ব্রিজ নির্মাণ করতে গত মে মাসে পুরাতন ব্রিজটি ভেঙ্গে মানুষ ও যানবাহন চলাচলের জন্য রাজি নদীটির উপর (যদিও এখন সরু খাল) একটি বাঁশের মাছা তৈরী করে দেওয়া হয়।
সেটিও এখন দেবে গিয়ে মারাত্নক ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ এই ব্রিজটির উত্তর পাশেই রয়েছে তেতুলীয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। বাঁশের মাছাটিতে যেকোন সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে সেই আশঙ্কায় আতংকিত থাকেন শিক্ষক,শিক্ষার্থী ও অভিভাবক।
বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক মোতাহার হোসেন জানান, সাজিউড়া বাজারের এই সড়কে প্রতিদিন অটোরিক্সা,ট্রলিসহ বিভিন্ন যানবাহন ও মানুষজন চলাচল করেন। ব্রিজের আশপাশের শিক্ষার্থীদের প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে স্কুলে আসা যাওয়া করতে হয়। তিনি ব্রিজটি দ্রুত নির্মাণ সম্পন্ন করার দাবী জানান।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়,ব্রিজটি নির্মাণের জন্য এলজিইডি হতে গত ২ নভেম্বর/২০২৩ ইং নির্মাণ কাজ শুরুর কার্যাদেশ তারিখ এবং ১৮ সেপ্টেম্বর/২০২৪ইং নির্মাণ কাজ সমাপ্তের তারিখ দেওয়া হয়েছে। এটি CAFDRIRP এর আওতায় প্যাকেজের একটি কাজ যার মূল্য ধরা আছে ১ কোটি ৩১ লাখ ১০ হাজার টাকা।
উপজেলা এলজিইডি সূত্র জানায়, উক্ত ব্রিজটি সিঙ্গেল স্পেন এবং দুইটি Abutment- এর প্রতিটিতে ৬০০ মিঃমিঃ ব্যস ও ২৩.৫০ মিঃ দৈর্ঘ্য বিশিষ্ট ৮টি করে মোট ১৬টি RCC Cast-in Citu Pile অন্তর্ভূক্ত রয়েছে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান গত ২০ মে ব্রিজের দক্ষিণপাশে ৬নং পাইল পয়েন্টে বোরিং এর কাজ শুরু করলে ৩মিঃ গভীরে পুরাতন ব্রিজের বেইজ এ বাঁধাপ্রাপ্ত হয়।
১ঘন্টা চেষ্টার পর বাঁধা অতিক্রম সম্ভব হলেও ১০মিঃ গভীরে ৩ ঘন্টা চেষ্টা করেও অতিক্রম করা সম্ভব হয়নি। বোর হোলের অন্য আরও ২টি পয়েন্টে বোরিং করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। পরে ২৮ মে আবার উভয় পাশে সোয়েল টেস্ট করা হলে ৩মিঃ অধিক অতিক্রম করা সম্ভব হয়নি।
এলাকাবাসী জানান,পুরনো ব্রীজটি করার সময় ব্রিজের নিচে গাছের বল্লী দ্বারা পাইলিং করা হয়ে ছিল। পরে ১০মিঃ পর্যন্ত বোরিংএর সময় গাছের বাকল ও গোলাকার পাথর পাওয়া যায়। এ সময় CAFDRIRP এর উপ-সহকারি প্রকৌশলী মো: সোহেল রানা উপস্থিত ছিলেন এবং উক্ত প্রকল্পের সুপারভিশন প্রকৌশলী একেএম রুহুল আলম সরেজমিন পরিদর্শন করেন বলে এলজিইডি সূত্র জানায়।
কেন্দুয়া উপজেলা প্রকৌশলী মো: আল আমিন সরকার জানান, ব্রীজটি নির্মাণের সমস্যা গুলো নিয়ে নেত্রকোনা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মহোদয়কে লিখিত ভাবে জানানোর পর নির্বাহী প্রকৌশলী স্যার বর্ণিত কাজটি বাস্তবায়নে সিদ্ধান্তের পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য প্রকল্প পরিচালক "ঘূর্ণিঝড় আম্পান ও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ পল্লী সড়ক অবকাঠামো পুনর্বাসন" শীর্ষক প্রকল্প,স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরকে অনুরোধ করে পত্র প্রেরণ করেন। আশা করছি ব্রিজের কাজটি বাস্তবায়নে দ্রুত ব্যবস্থা হবে