গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি: ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলায় ৪৯টি স্থায়ী-অস্থায়ী পূজা মন্ডপে হিন্দু সম্প্রদায়ের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় অনুষ্ঠান শারদীয় দুর্গোৎসব উদযাপনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। প্রতিটি মন্ডপে প্রতিমা প্রস্তুতের কাজ শেষ, এখন চলছে শেষ পর্যায়ের তুলির আচড়। অন্যান্য বছরের মত এবছর স্থায়ী ও অস্থ্য়াী মন্দিরগুলো সুদৃশ্য বিশাল প্যান্ডেল, তোরণ এবং বর্ণাঢ্য আলোকসজ্জার মাধ্যমে সজ্জিত হওয়ার বিষয়টি লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। ৯অক্টোবর বেলতলায় ষষ্টী পূজার মধ্য দিয়ে শুরু হবে মুল দেবী বন্দনা, চলবে ৫দিন ব্যাপি অর্থাৎ ১৩অক্টোবর পর্যন্ত।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ সূত্র জানিয়েছে, গত বছরের চেয়ে এবছর ১২টি মণ্ডপে পূঁজা কমে গৌরীপুর পৌর শহরে ১৫টি পূঁজাসহ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে সর্বমোট ৪৯টি পূঁজা অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। তার মাঝে পৌর এলাকার মাস্টার পাড়া, বাগানবাড়ী, কালিখলা, ষ্টেশনরোড, মধ্যবাজার, মধ্যবাজার পালমন্দির, হরিজন পল্লী, বালুয়াঘাট ঋষিবাড়ী, দুর্গাবাড়ি, চকপাড়া কালীবাড়ি, পাছেরকান্দা বর্মনপাড়া, পূর্ব দাপুনিয়া, মাঝিপাড়া, পুরাতন রাইছমিল, ঘোষপাড়া যতীন্দ্র মাস্টারের বাড়ি মন্দির সহ ১৫টি ও উপজেলার মইলাকান্দা ইউনিয়নের শ্যামগঞ্জ বাজারে ৭টি, ২নং গৌরীপুর ইউনিয়নে ৩টি, অচিন্তপুর ইউনিয়নে ৫টি, মাওহা ইউনিয়নে ৩টি, সহনাটি ইউনিয়নে ১টি, বোকাইনগর ইউনিয়নে ৩টি, রামগোপালপুর ইউনিয়নে ২টি, ডৌহাখলা ইউনিয়নে ৮টি, ভাংনামারী ইউনিয়নে ১টি ও সিধলা ইউনিয়নে ১টি সার্বজনিন বারোয়ারী দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে।
এক-একজন মৃৎশিল্পী কয়েকটি মন্ডপে মূর্তি তৈরির অর্ডার নেওয়ার কারণে দিনরাত কাজ করে এখন শেষ করে এনেছেন মূর্তির কাজ। কালীখলা বাজার কালী মন্দিরের মৃৎ শিল্পী সুকেশ পাল বলেন, পিতার কাছ থেকে এ পেশার শিক্ষা গ্রহণ। পারিবারিক ঐতিহ্য আর ভালালাগায় ৩৫বছর যাবত এ পেশায় আছেন। সারা বছরই তিনি মূর্তি তৈরীর কাজ করে থাকেন। এ পেশার মাধ্যমেই জীবিকা নির্বাহ হয়।
কালীখলা বাজার কালী মন্দিরের সাধারণ সম্পাদ শংকর ঘোষ পিলু বলেন, প্রশাসনসহ সকলের সার্বিক সহযোগিতায় সব কিছু ভাল ভাবেই চলছে। প্রশাসনের নিয়োজিত কর্মকর্তা প্রতিমা তৈরীর সময় থেকে নিরাপত্তার বিষয়টি মনিটরিং করছেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. শাকিল আহমেদ জানান, দুর্গাপূজায় আইন শৃংখলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এবং প্রতিমা তৈরীর সময় পূজা মণ্ডপের নিরাপত্তার জন্য প্রতিটি মণ্ডপে বিশেষ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পূজা চলাকালীন সময়ে নিরাপত্তার জন্য উপজেলায় একটি আইন শৃংখলার বিশেষ সভাও করা হয়েছে। মণ্ডপগুলোতে সিসি ক্যামেরো স্থাপন করা হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিশেষ ভিজিলেন্স টিম গঠন করা হয়েছে। মণ্ডপগুলোর পক্ষ থেকে নিরাপত্তার জন্য বিশেষ টিম গঠন করা হয়েছে।
গৌরীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মীর্জা মো. মাজহারুল আনোয়ার জানান, ইতিমধ্যেই পূজা মণ্ডপগুলোতে পুলিশ টহল দিচ্ছে, পূজা চলাকালীন সময়ে প্রতিটি মণ্ডপে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে এবং সেই সাথে থাকবে সেনাবাহিনী, র্যাব ও গোয়েন্দা পুলিশের টহল।
উল্লেখ্য যে, গত ২৬ সেপ্টেম্বর ভোররাতে গৌরীপুর উপজেলা সদরের গোবিন্দ জিউর মন্দিরে নির্মাণাধীন দুর্গা প্রতিমা ভাংচুরের ঘটনা ঘটে।