কাপাসিয়া (গাজীপুর) প্রতিনিধি: গাজীপুরের কাপাসিয়ায় শীতলক্ষ্যা নদীর তীরঘেঁষা রাণীগঞ্জ-তারাগঞ্জ-নরসিংদী সড়কে ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের ঘিঘাট মুচিবাড়ি এলাকায় পাকা সড়কটির বেশ কিছু অংশ নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।
জানা যায়, সড়কটি ধসে যাওয়ায় বিভিন্ন ধরনের যাত্রীবাহী ও পণ্যবাহী যানবাহন অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। ভাঙন প্রতিরোধে দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে এ সড়ক দিয়ে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যাবে বলে স্থানীয়রা আশঙ্কা করছেন।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের গাজীপুর উপবিভাগীয় প্রকৌশলী রায়হান খান বলেন, নদীর তীর ভেঙে গেছে। বাড়ী ঘর ভেঙে যাচ্ছে এমন ভিডিও পেয়েছি। আমরা ব্যবস্থা নিব। একই নদীতে এমন আরো একটি ঘটনা ঘটেছিলো। আমরা বাঁধ দিয়েছি।
ঘিঘাট সংঘ মিত্র পূজা মন্ডপের সহ সভাপতি পারুল রবীদাস বলেন, এ ভাঙ্গন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া না হলে পূজা মন্ডপসহ ত্রিশটি পরিবারের সব বাড়ী ঘর ভেঙে যাবে।
মঙ্গলবার সকালে কাপাসিয়ার রানীগঞ্জ চরসিন্দুর সড়কের ঘিঘাট এলাকায় গিয়ে এ ভাঙন দেখা গেছে। দুর্গাপুর ইউনিয়নের রাণীগঞ্জ বাজার থেকে তারাগঞ্জ বাজার হয়ে চরসিন্দুর সেতু পর্যন্ত ১২ ফুট প্রশস্ত সড়কটির বেশির ভাগ অংশ শীতলক্ষ্যা নদীর তীর ঘেঁষে নির্মাণ করা হয়েছে। এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন কাপাসিয়া ও শ্রীপুর এলাকা থেকে গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলা, নরসিংদী জেলার বিভিন্ন উপজেলা ও সিলেট অঞ্চলে শত শত যাত্রীবাহী ও পণ্যবাহী যানবাহন চলাচল করে। রাণীগঞ্জ বাজার থেকে দেড় কিলোমিটার দক্ষিণে ঘিঘাট মুচিবাড়ি এলাকায় নদীর পানি থেকে সড়কটি ১৫-১৬ ফুট ওপরে অবস্থিত। বেশ কিছু অংশের মাটি ধসে নদীতে পড়ে যায়। এমনকি পিচঢালাই করা সড়কটির বেশ কিছু অংশের প্রায় অর্ধেকটাই ধসে নদীতে বিলীন হয়ে যায়। ফলে যানবাহনগুলো বেশ সতর্কতার সঙ্গে চলাচল করছে। তবে সড়কটি অপরিচিত যানবাহন চালকদের জন্য রাতের বেলা মারাত্মক হুমকি বলে অনেকেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
নাসেরা গ্রামের মাসুদ আলম সরকার বলেন, এই জায়গাটা পুরোটা এখন ঝুকিপূর্ণ। বাজার ব্যবসায়ী মোহাম্মদ পরাগ আহমেদ বলেন, নরসিংদী থেকে আমাদের মালামাল আনা নেওয়ার একমাত্র সড়ক এটি। গত শনিবার থেকে এই সড়কটিতে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে ব্যবসা স্থবির হয়ে গেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার লোকজন জানায়, এই নদী থেকে আগে অবৈধভাবে প্রচুর বালি উত্তোলন করে বিক্রি হতো বছরের পর বছর এ বালি ব্যবসা হয়েছে। তাদের অবৈধ বালি ব্যবসার কারণে আজকে ভাঙন শুরু হয়েছে।
উপজেলা প্রকৌশলী মো. মাঈনউদ্দিন জানান, অত্যন্ত ব্যস্ত এ সড়কে ভাঙনের সংবাদ পেয়ে তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় অস্থায়ী বাঁধ দিয়ে সড়কটি সচল রাখার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। বরাদ্দ পাওয়ার পর স্থায়ী সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হবে।