মোঃ ইব্রাহীম মিঞা, বিরামপুর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি: দ্রব্যমূল্যে উর্দ্ধগতির কারণে সরকারের পাশাপাশি ভর্তুকি মূল্যে পণ্য প্রদান, স্বাস্থ্য সেবা, ফ্রি তে ডাক্তারি পরামর্শ প্রদানসহ বিভিন্ন কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা ও সহায়তার নামে ভুয়া রেশন ও স্বাস্থ্য কার্ড দিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের কারণে ৬ জনকে ভ্রাম্যমান আদালতে ২৬ হাজার টাকা জরিমানা করেন বিরামপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নুজহাত তাসনিম আওন ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মীজ নাজিয়া নওরীন।
মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) দুপুরে উপজেলার পলিপ্রয়াগপুর ইউনিয়নের শ্রীপুর গ্রামে প্রতারক চক্র বাংলাদেশ ইউনিয়ন সমাজসেবা সংস্থা (বি ইউ এস ডি ও) এর নামে কিছু স্থানীয় ব্যক্তিদের ভুল বুঝিয়ে রেশন ও স্বাস্থ্য কার্ড এর মাধ্যমে ১৫০ টাকা করে কার্ড প্রতি সংগ্রহ করে। পরবর্তীতে প্রতিটি কার্ডের গ্রাহককে ১ হাজার টাকায় ১০টি পণ্য সোয়াবিন তেল ২ লিটার, সরিষার তেল 200 গ্রাম, লাইফবই সাবান ১পিস, লবন ১ কেজি, ডিটারজেন্ড পাউডার ১ কেজি, মুগডাল ১ কেজি, আটা ২ কেজি, সেমাই ২০০ গ্রাম, হলুদ ২০০ গ্রামসহ চিনি ১ কেজি করে প্রদান করেন। রেশন ও স্বাস্থ্য কার্ডের নামে অতিরিক্ত ১৫০ টাকা নেওয়ার বিষয়ে কার্ডগ্রহীতারা জানতে চাইলে প্রতারক চক্রের সদস্যরা সংস্থার পক্ষ হতে নিম্নোক্ত সেবাসমূহ প্রদানের কথা বলে- পণ্য সেবা, দ্রবমূল্যে উর্দ্ধগতির কারণে সরকারের পাশাপাশি ভর্তুকি মূল্যে পণ্য প্রদান করা, ফ্রি তে ডাক্তারি পরামর্শ প্রদান ২০% হইতে ৩০% ছাড়ে বিভিন্ন পরীক্ষা বা টেষ্ট ফি ছাড়, ফ্রিতে চক্ষু চিকিৎসা, দর্জি প্রশিক্ষণ, হাঁস, মুরগী পালন প্রশিক্ষণ, কম্পিউটার এন্ড ফ্রিল্যানসিং প্রশিক্ষণ ও কর্ম সংস্থানের ব্যবস্থা সহায়তা করণ, বাংলাদেশ সরকারের উদ্যোগে জলবায়ু পরিবর্তনে সাশ্রয় ভাবে ইডকলের উন্নত চুলা স্থাপনে সহযোগিতা করা। কার্ডগ্রহীতারা তাদের সংস্থার কোন রেজিষ্ট্রেশন আছে কিনা জানতে চাইলে তারা বলেন, গাইবান্ধা জেলার সাদুল্যাপুরে তাদের অফিস রয়েছে।
এই প্রতারক চক্রের বিষয়ে উপজেলা প্রশাসন জানতে পেরে মালামালসহ তাদের ঘটনাস্থল থেকে আটক করে উপজেলা পরিষদে নিয়ে আসে। পরবর্তীতে এই প্রতারক চক্রের গাইবান্ধা জেলার সাদুল্যাপুর থানার রঞ্জু মিয়ার ছেলে আবু হানিফ (২৫), দিনাজপুর জেলার হাকিমপুর উপজেলার পালশা গ্রামের আব্দুর রহিমের ছেলে মোহাম্মদ সারোয়ার হোসেন, বিরামপুর উপজেলার খানপুর ইউনিয়নের সাহাবুল ইসলামের ছেলে সবুর ইসলাম (৩০) সহ স্থানীয় ২ জনসহ মোট ৫ জনকে ৫ হাজার টাকা করে ভোক্তা অধিকার আইনে ২৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড এবং সড়ক পরিবহন আইনে একজনকে ১ হাজার টাকা অর্থদণ্ড ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে প্রদান করা হয়। এসময় বিরামপুর উপজেলার পলিপ্রয়াগপুর ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হোসেনকে প্রতারণার শিকার কার্ড গ্রহিতাগণকে তালিকা করে মালামালসহ ১৫০ টাকা ফেরত দেয়ার নির্দেশ দেন বিরামপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নুজহাত তাসনিম আওন।