গোলাম মাহবুব, চিলমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি: কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলা ডাকঘরের ৪৩বছরের পরিত্যক্ত ও ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দাপ্তরিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন ডাক বিভাগের কর্মীরা। একটি কক্ষে কোন রকমে অফিস কার্য পরিচালনা করা হলেও সৌচাগারসহ অফিস এবং কোয়ার্টারের প্রায় সকল কক্ষ পরিত্যাক্ত। ভবটির বাহিরে শেওলা এবং ভিতরে বিভিন্ন জায়গায় পলিস্তার ধসে গেছে। অবস্থাদৃষ্টে ডাক ঘর তো নয় যেন ভূতুরে বাড়ী।
জানা গেছে, ১৯৮১ সালের ৪ নভেম্বর তারিখে তৎকালীন ডাক, তার ও টেলিফোন মন্ত্রী এ,কে,এম, মাইদুল ইসলাম চিলমারী সাব-পোষ্ট অফিস হিসাবে বর্তমান এই ভবনটির শুভ উদ্বোধন করেন। উপজেলার কলেজমোড় এলাকায় ২১ শতাংশ জমির উপরে ৫কক্ষ বিশিষ্ট একতলা এই ভবন নির্মিত হয়। এরপর দীর্ঘ প্রায় ৪৩ বছর পেরিয়ে গেলেও ভবনটির কোন সংস্কার করা হয়নি। একে একে ভবনের সকল কক্ষ অকেজো হয়ে পড়ছে। সামনের একটি কক্ষে কোন রকমে পোষ্ট ই-সেন্টার পরিচালিত হচ্ছে। একটি কক্ষে পোষ্ট অফিসের দাপ্তরিক কাজ চললেও বাকী সব কক্ষ অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে। ভবনের বাহিরে সর্বত্র শেওলা জমেছে আর ভীতরের বিভিন্ন স্থানে পলিস্তার ধসে গেছে। অবস্থাদৃষ্টে সেটি পরিত্যাক্ত এক ভূতুরে বাড়ী।
সরেজমিনে ডাক ঘর ভবনে গিয়ে দেখা যায়, একটি কক্ষে কোন রকমে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ডাক আদান-প্রদান এবং অর্থনৈতিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। পাশের দুইটি কক্ষে চলছে পোষ্ট ই-সেন্টারের কার্যক্রম। অফিসে থাকা একমাত্র সৌচাগারটি পরিত্যাক্ত হয়ে পড়ায় দরজা ঠেস দিয়ে রাখা হয়েছে। পোষ্ট মাষ্টারের জন্য আবাসিক অংশটিও সম্পূর্ণরুপে পরিত্যাক্ত হয়ে পড়ে আছে। নিরাপত্তার অভাবে অফিস শেষে ষ্ট্যাম্প ও নগদ অর্থসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র থানায় জমা রাখছে এবং সকালে অফিস খুলেই থানা থেকে সব মালামাল নিয়ে আসতে হয়। জড়াজীর্ণ অফিসটিতে পোষ্ট মাষ্টার ১জন, অপারেটর ১জন, পোষ্ট ম্যান ১জন, প্যাকার ১জন, রানার ১জন ও ইবি নৈশ-প্রহরী ১জন মিলে মোট ৬জন কর্মকর্তা-কর্মচারী প্রতিনিয়ত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দাপ্তরিক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন।
এসময় এলাকাবাসী মিজানুর রহমান, সবুজ, আলমগীর, আরাফাতসহ অনেকে বলেন, উপজেলায় এত কিছুর উন্নয়ন হয়, পোষ্ট অফিসটির কোন উন্নয়ন হয় না? জরাজীর্ণ এই পোষ্ট অফিসটিতে যেকোনো সময় ঘটে যেতে পারে বড় রকমের দুর্ঘটনা বলে জানান তারা।
উপজেলা পোষ্ট অফিসের পোষ্ট মাষ্টার মো.সফিকুল ইসলাম জানান, অফিসটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে, আমরা প্রতিনিয়ত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অফিসে কাজ করছি। অফিসটি সংস্কারের জন্য উপরে বলেছি কিন্তু বরাদ্দ না আসায় তা হয়নি।