চাকুরিচ্যুত ও অধিকার বঞ্চিত গ্রামীণফোন শ্রমিক ঐক্য পরিষদ ২ ডিসেম্বর ২০২৪, ঢাকার বসুন্ধরায় গ্রামীণফোন প্রধান কার্যালয়ের সামনে শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছে। কর্মসূচিতে অবৈধভাবে চাকরি হারানো শ্রমিকদের অধিকার পুনরুদ্ধার করার দাবি জানানো হয়।
গ্রামীণফোন বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় একটি লাভজনক মোবাইল সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠান। ১৯৯৭ সাল থেকে অদ্যাবধি প্রতিষ্ঠানটি সফলতার সাথে ব্যবসা করে আসছে। দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক অগ্রগতিতে গ্রামীনফোনের অবদান অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই সফলতার মূল চাবিকাঠি প্রতিষ্ঠানটির দক্ষ কর্মী, যারা না খেয়ে না ঘুমিয়ে দিন রাত আক্লান্ত পরিশ্রম করে তিলে তিলে একটা ছোট্ট চারা গাছকে বৃহৎ বটবৃক্ষ বানিয়েছে। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়, এই রক্ত-ঘাম দেওয়া দক্ষ শ্রমিকদের গ্রামীণফোন নির্দয়ভাবে পেটে লাথি মেরে চলেছে।
গ্রামীণফোনের জন্ম হয়েছিল মানবতার কল্যাণ সাধনের জন্য, কিন্তু অত্যান্ত পরিতাপের বিষয় গ্রামীণফোন বর্তমানে লক্ষ্যের সম্পূর্ণ বিপরিতে অবস্থান নিয়েছে। শ্রমিক অধিকার প্রশ্নে গ্রামীণফোন বহুদিন পূর্ব থেকেই দেশের আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে চলেছে। প্রতিষ্ঠানটি তথাকথিত স্বেচ্ছায় অবসর এর নামে ৩,৩০০ শ্রমিককে চাকরিচ্যুত করেছে এবং ন্যায্য পাওনা পরিশোধে অবহেলা করছে।
চাকুরিচ্যুত ও অধিকার বঞ্চিত গ্রামীণফোন শ্রমিক ঐক্য পরিষদ অভিযোগ করেছে, গ্রামীণফোন তাদের প্রভাব খাটিয়ে শ্রমিকদের আন্দোলন দমনের জন্য রাজনৈতিক যোগাযোগ এবং প্রশাসনিক শক্তি ব্যবহার করেছে। এর ফলে অনেক শ্রমিক অর্থনৈতিক, পারিবারিক এবং মানসিক চাপে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
চাকুরিচ্যুত ও অধিকার বঞ্চিত গ্রামীণফোন শ্রমিক ঐক্য পরিষদ এই কর্মসূচির মাধ্যমে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করে শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার ফিরে পেতে ৩ দফা দাবি পেশ করেছে। দাবি গুলো হলোঃ
১. গ্রামীণফোন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক সকল্পকার অবৈধ চাকুরিচ্যুতির আদেশ বাতিল করে শ্রমিকদের অবিলম্বে আর্থিক ও সামাজিক ক্ষতিপূরণসহ চাকুরিতে পুনর্বহাল করতে হবে।
২. ২০০৯-২০১২ সালের ৫% লভ্যাংশের বিলম্ব বিতরনের প্যানাল্টি সহ সকল বকেয়া অবিলম্বে পরিশোধ করতে হবে।
৩. শ্রমিক-কর্মচারীদের উপর অত্যাচার-নিপীড়ন চালানোর দায়ে জড়িত, গ্রমীণফোনের CEO, CMO সহ তাদের সকল অনুসারী অত্যাচারী ম্যানেজার এবং চাটুকার আওয়ামী স্বৈরাচারের দোসর ইউনিয়ন নেতাদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে শাস্তিমূলক ব্যাবস্থা নিতে হবে।
উল্লেখিত দাবিসমূহের প্রেক্ষিতে, ২ ডিসেম্বর ২০২৪ থেকে ঢাকার বসুন্ধরায় গ্রামীণফোনের প্রধান কার্যালয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে চাকুরিচ্যুত ও অধিকার বঞ্চিত গ্রামীণফোন শ্রমিক ঐক্য পরিষদ।