ইবি প্রতিনিধি: স্বৈরাচারের দোসর ও সহযোগীদের বিচারসহ তিন দফা দাবিতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ভিসির কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা। শনিবার (০৭ ডিসেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে এই স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের জিয়া মোড় এলাকা থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিল শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে জড়ো হয় তারা।
বিক্ষোভ কর্মসূচি ও স্মারকলিপি প্রদানকালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ইবির সমন্বয়ক এস এম সুইট, সহ-সমন্বয়ক নাহিদ হাসান, ইয়াশিরুল কবির সৌরভ, তানভীর মন্ডল ও গোলাম রব্বানীসহ অন্যান্য শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। এসময় ফ্যাসিবাদ বিরোধী শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে তারা মোট তিনটি দাবি জানান। দাবিগুলো হলো-দ্রুত সময়ে গণহত্যাকারী ফ্যাসিবাদ ও সহযোগীদের যথাযথ বিচার নিশ্চিত করতে হবে, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে ফ্যাসিবাদের দোসরদের জায়গা দেওয়া যাবে না এবং গণহত্যার বিচার সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত ফ্যাসিবাদের দোসর ও সহযোগীরা কেউ শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী প্রতিনিধিত্বমূলক নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দরা বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলন সংগ্রাম এবং ত্যাগ তিতিক্ষা ও রক্তের বিনিময়ে ১৬ বছরের স্বৈরাচারী ও ছাত্র-জনতার গণহত্যাকারী আওয়ামী সরকার বাংলাদেশ থেকে বিতাড়িত হতে বাধ্য হয়। ছাত্র-জনতার উপর আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকার যখন নির্বিচার গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছিল তখন দেশের বিভিন্ন পর্যায় থেকে তাদের নেতাকর্মী ও পেশাজীবী সংগঠনের সদস্যরা সহযোগিতা করে ও ছাত্র-জনতার বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করে। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়েও শিক্ষক-কর্মকর্তাদের একটি পক্ষ স্বৈরাচারের সহযোগী হিসেবে প্রকাশ্য কার্যক্রম পরিচালনা করে। আন্দোলন বন্ধ করার জন্য বিভিন্ন কৌশল অবলম্বনসহ ৪ আগস্ট ছাত্রদের বিরুদ্ধে মিছিল করেছে। সেখান থেকে তারা নিজেদেরকে 'পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনার কর্মী' ঘোষণা দিয়ে আন্দোলন প্রতিরোধ ও আন্দোলনকারীদের উপর প্রতিশোধের ঘোষণা দেয়। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গণহত্যাকারী সরকারের বিচার শুরু করলে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বৈরাচারের দোসর ও সহযোগীদের তথ্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে প্রেরিত হয়েছে। এই মামলা এখনো বিচারাধীন রয়েছে।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, আমরা লক্ষ্য করছি ফ্যাসিবাদী সরকারের পদলেহনকারী একটি গোষ্ঠী ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে আবারো মাথা চাড়া দিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে। এজন্য তারা সংঘবদ্ধভাবে বিভিন্ন কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এসব কর্মকান্ড চলমান দেশবিরোধী চক্রান্তের অংশ কি না এ নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ফ্যাসিবাদের দোসররা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে অংশ নিয়ে শিক্ষক প্রতিনিধি হওয়ার সুযোগ খুঁজছে৷ তাদেরকে শিক্ষক প্রতিনিধি হিসেবে ছাত্র-সমাজ কোনভাবেই মেনে নেবে না। এই নির্বাচনে তাদের অংশগ্রহণের সুযোগ ফ্যাসিবাদের পুনর্বাসনের নামান্তর। যা জুলাই বিপ্লবের স্পিরিটের সাথে সম্পূর্ণভাবে সাংঘর্ষিক এবং জুলাই বিপ্লবকে অবমাননার শামিল।