এম মনিরুজ্জামান, রাজবাড়ী প্রতিনিধি: চলতি রবি মৌসুমে রাজবাড়ীতে বিতরণ করা প্রণোদনার পেঁয়াজ বীজের অংকুরোধগম (গজানো) সন্তোষজনক না হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত তিন হাজার ৭২৫ চাষিকে পুনরায় বিনামূল্যে উন্নতমানের এই বীজ দেওয়া হচ্ছে।
রোববার (৮ ডিসেম্বর) দুপুরে উপজেলা প্রশাসন ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের যৌথ আয়োজনে রাজবাড়ী সদর উপজেলার ২০০ ক্ষতিগ্রস্ত চাষির মাঝে বীজ বিতরণের মাধ্যমে শুরু হয় এ কার্যক্রম।
পর্যায়ক্রমে আগামী তিন দিনের মধ্যে রাজবাড়ী সদরে আরও ৬০০ জনসহ পাংশায় ৮৭৫ জন, কালুখালী ৭০০, বালিয়াকান্দিতে এক হাজার ও গোয়ালন্দে ৩৫০ চাষির মাঝে বিনামূল্য উন্নতমানের এই পেঁয়াজ বীজ বিতরণ করা হবে।
রাজবাড়ী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, এক সপ্তাহের মধ্যে বীজ বপন করতে পারলে কৃষকরা তাদের ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে পারবেন। আশা করছেন পেঁয়াজ আবাদের সমৃদ্ধ এই জেলায় লক্ষ্যমাত্রা এবং উৎপাদন দুটোই পূরণ হবে। এ বিষয়ে কৃষকদের পাশে থাকবে জেলা প্রশাসন।
রাজবাড়ীতে হালি পেঁয়াজ আবাদের লক্ষ্যে নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে চার হাজার কৃষককে বিনামূল্যে (বারি-১, বারি-৪ ও তাহেরপুরি) এই তিন জাতের বীজ বিনামূল্যে বিতরণ করে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। এই বীজের জন্য খরচ হয় ১ কোটি ৮ লাখ টাকা।
যার মধ্যে রাজবাড়ী জেলা সদরে ৮০০, গোয়ালন্দে ৪০০, পাংশায় ১০০০, বালিয়াকান্দিতে ১০০০ ও কালুখালী উপজেলায় ৮০০ জনসহ মোট ৪ হাজার জন এই বীজ পায়। বীজ বপনের পর দুই সপ্তাহের বেশি সময় অতিবাহিত হলেও দুটি (বারি-৪ ও তাহেরপুরি) জাত না গজানোয় প্রায় সাড়ে তিন হাজার ৭২৫ কৃষকের বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পরে তদন্ত কমিটির বীজ না গজানোর সত্যতা পাওয়ায়, বিএডিসির সিদ্ধান্তে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের মাঝে পুনরায় এক কেজি করে লাল তীর জাতের পেঁয়াজ বীজ বিতরণ করা হচ্ছে।
এবছর রাজবাড়ী জেলায় প্রায় সাড়ে ৩১ হাজার হেক্টর জমিতে হালি পেঁয়াজ আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া এবছর জেলায় প্রায় সাড়ে ৫ হাজার হেক্টর জমিতে মুড়িকাটা পেঁয়াজের আবাদ হয়েছে।
বিতরণ অনুষ্ঠানে রাজবাড়ী সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মারিয়া হকের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজবাড়ী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন রাজবাড়ী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. মো. শহিদুল ইসলাম। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সদর উপজেলার কৃষি অফিসার মো. জনি খান।
এদিকে পুনরায় বীজ পাওয়া কৃষকদের দাবি, নতুন করে বীজতলা তৈরিতে তাদের আবারও খরচ হবে এবং আবাদও পিছিয়ে যাবে। যার কারণে এবার ফলনও আশানুরূপ হবে না। তবে জমি পতিত ফেলে না রেখে পুনরায় বীজতলা তৈরি করে আবাদ করবেন বলে জানান তারা।
রাজবাড়ী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের প্রণোদনার আওতায় পুনরায় ১ কেজি করে বীজ দেওয়া হচ্ছে। আগামী এক /দুই দিনের মধ্যে তারা বীজ পেয়ে যাবেন। এই মাসের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে কৃষকরা বীজ বপন করতে পারলে সঠিক সময়ে হালির চারা লাগাতে পারবে। ১০-১২ দিন আবাদ পেছালেও লক্ষ্যমাত্রা ও উৎপাদন পূরণ হবে।