বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কেন্দ্র করে জুলাই-আগস্টে গণহত্যার ঘটনায় রাজধানীর উত্তরা পূর্ব থানায় দায়েরকৃত একটি মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল গান বাংলার প্রধান নির্বাহী কৌশিক হোসেন তাপসকে। গত সোমবার উত্তরা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। ঢাকা মহানগর পুলিশের উত্তরা বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) রওনক জাহান তাপসকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এদিকে তাপসকে গ্রেফতারের ব্যাপারে দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চেয়েছেন তার মা মেহের নিগার চঞ্চল। একই সঙ্গে অপরাজনীতি নিয়েও কথা বলেছেন তিনি।
যদিও সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে উত্তরাপূর্ব থানা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছে। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। এসব মামলায় গ্রেফতারের পর তাকে আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করে পুলিশ। কিন্তু শুনানির সময় তদন্ত কর্মকর্তা আদালতে উপস্থিত হতে না পারায় শুনানির তারিখ পেছানোর আবেদন করে পুলিশ। পরে তাপসের রিমান্ড ও জামিন শুনানির জন্য বুধবার (৬ নভেম্বর) ধার্য করেন আদালত।
এদিকে তাপসের মা বলেন, ২০১২ সালে ঢাকা স্টেডিয়ামে একটি গানের অনুষ্ঠান থেকে তাপসকে তুলে নেওয়া হয়। তারপর থেকে এই ১২ বছরে পাঁচ মিনিট করে ১২ বারও তার দেখা পাইনি আমি। সেই তখন থেকে শেখ হাসিনা সরকার আমাকে একা করে দিয়েছে। ওই সময় তাকে তুলে নেওয়ার এক বছর পর যেখানে পেয়েছি, তা আর বলতে চাই না।
মেহের নিগার বলেন, অপরাজনীতির জন্য ১৯৭৪ সাল থেকে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে নেই আমি। এ ছাড়া হত্যা মামলার ব্যাপারে তাপসের মা বলেন, এই সন্ত্রাসী কার্যক্রমের সঙ্গে তাপস জড়িত না। আর যতটুকু শেখ হাসিনার সঙ্গে জড়িত, আমি বলব— সে যদি বিপদগামী হয়েই থাকে তার জন্য শেখ হাসিনা দায়ী।
উল্লেখ্য, ইশতিয়াক মাহমুদ নামে একজন ব্যবসায়ী হত্যাচেষ্টার একটি মামলা করেন। মামলার এজাহারে বলা হয়, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের বিপক্ষে থেকে গান বাজনার মাধ্যমে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী ক্যাডারদের উৎসাহ ও ছাত্র-জনতার আন্দোলনকে নস্যাৎ করার চেষ্টা করে গান বাংলার তাপস।
গত ১৮ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে আসামিদের ছোড়া গুলিতে বাদীর পেটে গুলি লাগে। গুরুতর আহত হয়ে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে থেকে অপারেশনের মাধ্যমে তার পেটের গুলি বের করা হয়। এ ঘটনায় গত ২৯ সেপ্টেম্বর ইশতিয়াক মাহমুদ বাদী হয়ে উত্তরা পূর্ব থানায় হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলা করেন। মামলায় সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনসহ ১২৬ জনকে আসামি করা হয়। এ মামলায় তাপস এজাহারভুক্ত ৯ নম্বর আসামি।